Thank you for trying Sticky AMP!!

গমের শত্রু শনাক্তকারী বিজ্ঞানীদের পাশে থাকবে সরকার

কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর সঙ্গে গমের শত্রু ব্লাস্ট রোগের জন্য দায়ী ছত্রাকের জীবন রহস্য উন্মোচনকারী বিজ্ঞানী দল।

গমের শত্রু ব্লাস্ট রোগের জন্য দায়ী ছত্রাকের জীবন রহস্য উন্মোচনকারী বিজ্ঞানী দলের পাশে থাকবে সরকার। ওই গবেষণার ফলাফল যাতে দ্রুত কৃষক পর্যায়ে পৌঁছানো যায় সে লক্ষ্যে বিজ্ঞানী দলকে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী।
আজ বৃহস্পতিবার ওই বিজ্ঞানী দলের প্রধান তোফাজ্জল ইসলাম ও তাঁর দল কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করতে যান। কৃষি মন্ত্রণালয়ে নিজ কক্ষে ওই বিজ্ঞানী দলের সঙ্গে আলাপকালে কৃষিমন্ত্রী বিজ্ঞানী দলটির উদ্ভাবনকে স্বাগত জানিয়ে এসব কথা বলেন।
কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে বিজ্ঞানী দলটি প্রায় এক ঘণ্টা মতবিনিময় করেন। এ সময় কৃষিমন্ত্রী বিজ্ঞানী দলের কাছে তাঁদের গবেষণার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানতে চান। বিজ্ঞানী দলে আরও ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মো. মাহবুবুর রহমান, সহকারী অধ্যাপক দিপালী রানী গুপ্তা, প্রভাষক মুসরাত জাহান, পল্লব ভট্টাচার্য, আশফুকুর রহমান ও সাইদ হোসেন। 

কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী এ ব্যাপারে প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমান সরকার কৃষিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিজ্ঞান গবেষণাকে গুরুত্ব দিচ্ছে। ফলে বিজ্ঞানীরা কোনো সমস্যা দেখা দিলে তা গবেষণার মাধ্যমে সমাধানের জন্য এগিয়ে আসছেন। এ ধরনের উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। এ ধরনের বিজ্ঞাননির্ভর কাজে সরকার কাছে আছে, ভবিষ্যতেও পাশে থাকবে।
এদিকে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) থেকে গত ১৯ এপ্রিল প্রথম আলোতে প্রকাশিত গমের শত্রু শনাক্ত শীর্ষক প্রতিবেদনের ওপরে মতামত পাঠানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ব্লাস্ট রোগের লক্ষণ দেখে গম গবেষণা কেন্দ্র দিনাজপুরের ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষা করে ব্লাস্ট রোগ চিহ্নিত করা হয়েছে। পাইরিকুলারিয়া অরাইজা নামের এক ধরনের ছত্রাকের আক্রমণে ওই রোগটি যে সংগঠিত হয়েছে তা আন্তর্জাতিক গম ও ভুট্টা গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিমিট, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এফএও, যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিষয়ক সংস্থা ইউএসডিএ এর এআরএস ল্যাবরেটরিতে নিশ্চিত করা হয়েছে।
বারির মহাপরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম মণ্ডল স্বাক্ষরিত ওই লিখিত মতামতে আরও বলা হয়েছে, জীবাণুর জিনগত বৈশিষ্ট্য, বংশানুক্রমিক উৎস, আক্রান্ত শিষের নমুনা সিমিটের সহায়তায় ইউএসডিএ এর ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে। রোগটির গুরুত্ব অনুধাবন করে সিমিটের একজন রোগতত্ত্ববিদ গম গবেষণা কেন্দ্রের জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানীদের সঙ্গে নিয়ে গত ৭ ও ৮ মার্চ আক্রান্ত এলাকা পরিদর্শন করে গেছেন। ওই রোগটির বিস্তার রোধে কিছু সুপারিশও দেওয়া হয়েছে।
বারি থেকে আরও বলা হয়েছে, দেশি ও বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গমের ব্লাস্ট রোগ দমনে আট সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। গমের ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী জাত উদ্ভাবনের জন্য গম গবেষণা কেন্দ্র থেকে ইতিমধ্যে ২০টি জাত এবং অগ্রবর্তী লাইনের বীজ মেক্সিকোর সিমিট কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। যা বলিভিয়ার ব্লাষ্ট উপদ্রুত এলাকায় নিয়ে পরীক্ষা করা হবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তোফাজ্জল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থা গুলো ব্লাস্ট রোগ দমনে যে উদ্যোগ নিয়েছে আমরা তাতে সহযোগিতা করার উদ্দেশ্যেই এই গবেষণাটি করছি। আমরা ইতিমধ্যে জীবাণুর জিনগত বৈশিষ্ট্য ও বংশানুক্রমিক উৎস বের করে ফেলেছি। আমাদের হুইট ব্লাস্ট শীর্ষক ওয়েবসাইটে ছত্রাকের এসব তথ্য আমরা দিয়ে দিয়েছি। সুইডেন, সুইজারল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের একদল বিজ্ঞানী ইতিমধ্যে কীভাবে বাংলাদেশে ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধ করা যায় সেই লক্ষ্যে গবেষণা শুরু করেছে। আমরা আশা করি বাংলাদেশ এবং বিশ্বের জ্ঞান সম্মিলিত ভাবে এই রোগ প্রতিরোধে একসঙ্গে কাজ করবে।’