নতুন কাপড় ওদের কাছে স্বপ্ন

ঈদ মানে আনন্দ, নতুন জামা, নতুন কাপড়। কিন্তু গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া গ্রামের সাজেদা বেগম (৪৫), মর্জিনা খাতুন (৪২), সামিতন বেওয়া (৪৮) ও সদর উপজেলার চাপাদহ গ্রামের খালেক মিয়ার (৩৫) কাছে নতুন কাপড় মানে স্বপ্ন। তাই ঈদের আগে তারা বেরিয়ে পড়েন পুরোনো কাপড়ের খোঁজে। পুরোনো হলেও তাদের কাছে সেটাই নতুন। এই কাপড় নতুন ভেবেই তারা ঈদের দিন পড়বেন।
গতকাল বুধবার ওই চারজন দরিদ্র নারী-পুরুষ পুরোনো কাপড় সংগ্রহে এসেছিলেন গাইবান্ধা শহরে। বেলা তিনটার দিকে তাঁদের সঙ্গে দেখা হয় শহরের সুখনগর এলাকায়। ঈদের প্রস্তুতি নিয়ে আলাপকালে জানা গেল তাঁদের দুর্ভোগের কথা। কঞ্চিপাড়া গ্রামের সাজেদা বেগম বলেন, ‘ঈদোত মানসে ফুরতি করে, হামার ঘরে কসটো বাড়ি যায়। কয়দিন থাকি ছোলট্যা নয়া জামার জন্নে বায়না ধরচে। কিনতো হামার সোয়ামি কামলার কাম করি যেকনা ট্যাকা পায়, তাক চাউল কিনতে ফুরি যায়। নয়া কাপড়া ক্যামন করি কিনমো। তাই পুরানা একন্যা জামার জন্নে গায়োত বাড়াচি। কাউয়ো পুরানা জামা দিলে ছোলট্যাক বুজব্যার পামো।’
মর্জিনা খাতুন বলেন, ‘হামার সোয়ামি নাই। মানসের বাসাত কাম করি। হামার ঘরে কিসের ঈদ বাবা। বিয়ানা নিন (ঘুম) থাকি উটি পেটের চিনতা করান নাগে। মানসের ছোলের নয়া কাপড়া দেকি ছোল দুইটে নয়া আঙা (শার্ট) কিনি চাবার নাগচে। আঙার ম্যালা দাম, কিনমো ক্যামন করি। যেকনা ট্যাকা কামাই করি, তাক দিয়া দুইট্যা ছোল নিয়া খায়া না খায়া দিন কাটপার নাগচি।’ তিনি আরও বলেন, ‘কয়বাড়িত ঘুরি একন্যা পুরানা আঙা পাচি। তাক এক ছোলোক দিচি। আরেক ছোলের জন্নে ঘুরব্যার নাগচি।’
সামিতনের সঙ্গে কথা বলতে বলতেই দেখা হলো রিকশাচালক আবদুল খালেকের। খালেক বলেন, ‘গতোব্যার ঈদোত এ্যাকসা (রিকশা) চলেয়া ম্যালা ট্যাকা কামাই করচিনো। বাজার খরোচ করি তিন হাজার বাচাচিনো, তাক দিয়া ছোলগুলের নয়া কাপড়চোপর কিনচি। এ ব্যারক্যা অটো আলারঘরে (অটোরিকসা) জন্নে হামারঘরে কামাই কমি গ্যাচে।’