>১৫ নভেম্বর ২০১৬, প্রথম আলোর আয়োজনে ‘নারীদের সেবামূলক কাজের স্বীকৃতি ও দায়িত্বের পুনর্বণ্টন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত আলোচকদের বক্তব্য সংক্ষিপ্ত আকারে এই ক্রোড়পত্রে ছাপা হলো।
সহযোগিতায়:
নারীদের সেবামূলক কাজ
নারীদের গৃহস্থালি সেবামূলক কাজের আনুমানিক অর্থনৈতিক মূল্য ২০১৩-১৪ সালে বাংলাদেশের মোট জিডিপি আয়ের ৭৬.৮%-এর সমতুল্য
নারীরা ২৪ ঘণ্টায় উৎপাদনমূলক কাজ করেন প্রায় ৮ ঘণ্টা, যা প্রায় পুরুষদের উৎপাদনমূলক কাজের সমান। পুরুষেরা এ কাজে ব্যয় করেন ১০ ঘণ্টা
৭৪% নারী অসুস্থ ব্যক্তির সেবা করা এবং ৬২% নারী কাপড় ধোয়ার কাজকে কষ্টসাধ্য বিবেচনা করেন
ব্যক্তিগত ও বিনোদনমূলক কাজে নারীরা মাত্র ২.৭ ঘণ্টা সময় ব্যয় করেন আর পুরুষেরা ব্যয় করেন প্রায় ৬ ঘণ্টা, যা একজন নারীর প্রায় সারা দিনের গৃহস্থালি সেবামূলক কাজের সময়ের সমান
শতকরা ১০০ জন নারীর কাছে সেবামূলক কাজগুলোর মধ্যে রান্না সবচেয়ে কষ্টসাধ্য বলে মনে হয়
সূত্র: অক্সফাম ইন বাংলাদেশ, গবেষণা প্রতিবেদন
আলোচনায় সুপারিশ
* নারীদের গৃহস্থালি সেবামূলক কাজের পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রের স্বীকৃতি ও দায়িত্বের পুনর্বণ্টনে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন
* নারীদের গৃহস্থালি সেবামূলক কাজের স্বীকৃতি ও দায়িত্ব হ্রাসের লক্ষ্যে তাঁদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ, শিশু দিবাযত্নকেন্দ্র স্থাপন, রাস্তাঘাট ও বাজারব্যবস্থার উন্নয়নে বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে
* বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে কম মূল্যে আধুনিক প্রযুক্তির পণ্য ও সেবা বাজারজাত করতে হবে, যা গৃহস্থালি সেবামূলক কাজের সময় ও শ্রম কমিয়ে আনতে ভূমিকা রাখবে এবং পুরুষদেরও গৃহস্থালি কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করবে
আলোচনা
আব্দুল কাইয়ুম: নারীর গৃহস্থালির কাজকে কীভাবে স্বীকৃতি দেওয়া যায়, কীভাবে তাঁদের কাজের মূল্যায়ন করা যায়, সেটাই আজকের আলোচনার মূল বিষয়।
সমতাভিত্তিক সমাজ গঠনের অন্যতম উপায় হলো নারী-পুরুষের সম-অধিকার প্রতিষ্ঠা। কয়েক বছর ধরে নারীর ক্ষমতায়ন ও অর্থনৈতিক নেতৃত্বের ক্ষেত্রে পরিবর্তন এসেছে।
নারীদের অর্থনৈতিক নেতৃত্বের এই ধারাকে গতিশীল রাখতে তাঁদের ঘরের কাজের স্বীকৃতি ও দায়িত্বের পুনর্বণ্টন প্রয়োজন। এসবই আজকের আলোচনার বিষয়। এখন আলোচনা করবেন শামীমা আকতার
শামীমা আকতার: কয়েক বছর ধরে নারীর ক্ষমতায়ন ও অর্থনৈতিক নেতৃত্বের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে। গ্রামাঞ্চলের নারীরা সাংসারিক কাজের পাশাপাশি গবাদিপশু পালন ও কৃষিকাজে পুরুষদের নানাভাবে সহায়তা করে থাকেন, যা মোট কৃষিকাজের প্রায় ৬৯ শতাংশ।
অক্সফাম পরিচালিত বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, গৃহস্থালি সেবামূলক কাজে নারীর অতিরিক্ত শ্রম ও সময় তাঁদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের ভূমিকা ও সুযোগকে সীমিত বা অনেক সময় অসম্ভব করে তোলে।
গৃহস্থালি সেবামূলক কাজের পুনর্বণ্টন–প্রক্রিয়া বিশ্লেষণ করার লক্ষ্যে অক্সফাম, সেন্টার ফর জেন্ডার অ্যান্ড সোশ্যাল ট্রান্সফরমেশন (সিজিএসটি) কেন্দ্রের (ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের একটি প্রতিষ্ঠান) কারিগরি সহায়তায় বাংলাদেশের নীলফামারী, গাইবান্ধা, জামালপুর ও ফরিদপুর জেলায় একটি গবেষণা সম্পন্ন হয়েছে।
গবেষণায় নারীদের গৃহস্থালি সেবামূলক কাজগুলোর মধ্যে রান্না করা, অসুস্থ ব্যক্তির সেবা, শিশুর যত্ন ও বয়স্কদের সেবা, কাপড় ধোয়া, পানি ও জ্বালানি সংগ্রহ করা ইত্যাদি কাজ নারীদের জন্য সবচেয়ে শ্রম ও সময়সাপেক্ষ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
অক্সফাম গৃহস্থালি সময় ও শ্রমসাপেক্ষ কাজের চাপ কমানোর জন্য কিছু এলাকায় উন্নত রান্নার চুলা ও বড় পানির ড্রাম দিয়েছে। ফলে সেসব এলাকায় নারীদের জন্য গৃহস্থালি কাজকর্ম আগের তুলনায় অনেকটাই সহজ হয়েছে। গৃহস্থালি কাজে আধুনিক সরঞ্জাম ও প্রযুক্তির ব্যবহারের সুবিধা অনুধাবন করে স্থানীয় জনগণের মধ্যে এসব সেবা ও পণ্যের চাহিদা বেড়েছে।
উপরিউক্ত কার্যক্রমের অভিজ্ঞতায় অক্সফাম বিশ্বাস করে, নারীদের গৃহস্থালি সেবামূলক কাজের স্বীকৃতি ও দায়িত্বের পুনর্বণ্টনে স্থানীয় জনগণের সচেতনতার পাশাপাশি নীতিনির্ধারণী কর্তৃপক্ষ, বেসরকাির প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যম ও অন্যান্য উন্নয়ন সংগঠনের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
অক্সফাম এসব সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে নারীদের সেবামূলক কাজকে ‘সামাজিক সম্পদ’ হিসেবে বিবেচনা করে এবং সেবামূলক কাজে নারীর অতিরিক্ত চাপ কমিয়ে তাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে আরও বেশি সম্পৃক্ত করার ক্ষেত্রে পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে।
এম বি আখতার: বিশ্বে যত সম্পদ আছে, এর মাত্র ১ শতাংশ আছে নারীর কাছে। শুধু আমাদের দেশে নয়, সারা বিশ্বেই নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে বৈষম্য রয়েছে। অর্থাৎ ক্ষমতার বিন্যাসে ভারসাম্যহীনতা রয়েছে।
সমাজের প্রবণতা হলো ক্ষমতা যাঁর কাছে থাকে, তাঁর পক্ষে সামাজিক বিধিবিধান, আচার-আচরণ, বিচারব্যবস্থা প্রায় সবই তাঁর পক্ষে যায়। হাওর অঞ্চলে বাজার বসে রাতে। আমরা চাই নারী সব ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত থাক। কিন্তু আমাদের সামাজিক ব্যবস্থায় একজন নারীর রাতে বাজার করতে যাওয়া এবং ফিরে আসা—দুটোই ঝুঁকিপূর্ণ।
কোথাও লেখা নেই নারী একাই রান্না করবেন, সেবাযত্ন করবেন, সংসারের সব কাজ করবেন, ঘর গোছাবেন ইত্যাদি। কিন্তু কাজগুলো নারীকেই করতে হয়। অধিকাংশ নারীও হয়তো মনে করেন এসব করাই তাঁর নিয়তি।
এ ক্ষেত্রে পুরুষ যদি কিছু কাজ করে নারীকে সহযোগিতা করেন, তাহলে নারী এ সময়টায় কোনো অর্থনৈতিক কাজে যুক্ত হতে পারেন।
নারীরা ঘরে যে কাজ করছেন, সেটা অন্য কাউকে দিয়ে করাতে হলে বেতন দিতে হতো। তাই নারীর ঘরের কাজের অবশ্যই একটা অর্থনৈতিক মূল্য আছে।
আমরা মূল্য দিই না। তবে তাঁদের কাজের স্বীকৃতি অন্তত দিতে হবে। ঘরের কাজ নারী-পুরুষ উভয়কেই ভাগাভাগি করে করতে হবে।
আমরা আজ বেসরকারি খাতকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। তারা যেন আধুনিক প্রযুক্তির গৃহসামগ্রী সহজলভ্য করে। তাহলে গ্রামের সাধারণ নারীরা এগুলো ব্যবহার করার সুযোগ পাবেন। ফলে নারীরা অল্প সময়ে গৃহের কাজ শেষ করে আয়মূলক কাজে অংশ নিতে পারবেন। সমাজের সবাইকে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে।
আলেকজান বেগম: ছোটবেলা থেকে দেখছি পরিবারে নারীদের কোনো সম্মান নেই। আমার দাদি, মা পরিবারে কোনো সম্মান পাননি। আমিও পাইনি। তখন ভাবতাম, নারীদের ভাগ্য হয়তো এমনই।
২০১২ সালে অক্সফামের সহযোগিতায় একটা সিবিও (কমিউনিটি বেইজড অর্গানাইজেশন) গঠন করেছি। এর আওতায় গ্রামের সব নারী-পুরুষ একসঙ্গে বসেছি।
আমরা একটা তালিকা করেছি একজন পুরুষ ও নারী রাতের ঘুম শেষে ভোরে ওঠার পর থেকে আবার ঘুমাতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত কী কী কাজ করেন।
একজন নারী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৮ ঘণ্টাই সংসারের কাজ করেন। একজন পুরুষ সর্বোচ্চ ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা কাজ করেন। তাঁরা কাজ শেষে ঘরে ফিরে একটু কিছু হলেই আমাদের অনেক খারাপ ভাষায় বকাবকি করেন। প্রায়ই সংসার থেকে চলে যেতে বলেন।
আমরা জানতাম না কোনটি আয়মূলক, কোনটি সেবামূলক ও কোনটি ব্যক্তিগত কাজ। সিবিও করে জানতে পেরেছি, আমরা আয়মূলক ও সেবামূলক—দুটো কাজই করি।
সেবামূলক কাজে যদি পুরুষেরা অংশগ্রহণ করেন, তাহলে আমরা আরও বেশি আয়মূলক কাজে অংশগ্রহণ করতে পারব।
মিনা বেগম: আমরা অক্সফামের সঙ্গে সিবিও মিটিং করে অনেক কিছু জানতে পেরেছি। গত বছর নারী-পুরুষের কাজের হিসাব করেছি। এখন আমার স্বামী আমাকে গুরুত্ব দেন। সংসারের অনেক কাজ করেন।
অক্সফামের মাধ্যমে বন্ধু চুলা, পানির ট্যাংক, পানি তোলার মোটর ইত্যাদি পেয়েছি। এগুলোর মাধ্যমে অল্প সময়ে অনেক বেশি কাজ করতে পারছি। আমাদের সময় অনেক বেঁচে যায়। ফলে বেশি করে আয়মূলক কাজে অংশ নিতে পারছি।
এসব করতে গিয়ে অনেক বাধা এসেছে। সমাজের অনেকেই এটা ভালো চোখে দেখেনি। খারাপ মন্তব্য করেছে। কিন্তু আমরা কোনো কিছুকে গ্রাহ্য না করে নিজেদের কাজ করে গেছি। ভাগাভাগি করে কাজ করলে সংসারে নারী-পুরুষ সবাই আয়মূলক কাজে অংশগ্রহণ করতে পারেন, পরিবারে আরও বেশি সমৃদ্ধি আসে।
আমাদের গ্রামে এর মাধ্যমে পরিবর্তন এসেছে। অন্য গ্রামের মানুষেরা এটিকে অনুসরণ করছে। তবে এখনো অনেক সেবামূলক কাজ করতে হয়।
চরাঞ্চলের জীবন ধারণ এমনিতেই কষ্টকর। তার ওপর পানি তোলার মোটর, পানির ট্যাংক, সংসারের অন্যান্য উপকরণ অনেক দামে কিনতে হয়। কোনো কোম্পানি যদি অল্প দামে এটা দিতে পারে, তাহলে অনেক উপকার হয়।
কাজী আহমদ ফারুক: দুই যুগ ধরে রহিমআফরোজ দেশের গ্রামগুলোতে সৌরবিদ্যুৎ ও বিদ্যুৎ–সাশ্রয়ী দ্রব্য সরবরাহের ক্ষেত্রে বিশাল বড় রকমের অবদান রাখছে। এ পর্যন্ত ৬ লাখ ৫০ হাজার পরিবারে আমরা সৌরবিদ্যুৎ দিয়েছি। ২ লাখ ৫০ হাজারের বেশি উন্নত চুলা, প্রায় ৩ হাজার বায়োগ্যাস সিস্টেম, তিন শতাধিক সোলার সেচ ও খাবার পানির টিউবওয়েল দিয়েছি।
আমরা সোলার টেলিভিশন, ফ্যান, রাইসকুকার ইত্যাদি সরবরাহ করছি। খুব অল্প বিদ্যুৎ খরচে এসব চলবে। রহিমআফরোজ নারীদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজ করছে।
‘উইমেন এন্টারপ্রেনার্স ডেভেলপমেন্ট কমিউনিটি’ সংক্ষেপে উইডু নামে একটা প্রকল্প উত্তরাঞ্চলের গাইবান্ধায় গত জানুয়ারি থেকে শুরু করেছি। এই প্রকল্পে ৬০ জন নারী উদ্যোক্তা আছেন। ১ হাজার ৬০০ নারী আছেন। ১ হাজার ৬০০ নারীকে ৬০ জন নারী উদ্যোক্তার মাধ্যমে ৬০টি গ্রুপ করা হয়েছে।
এসব নারী ব্যাংকে হিসাব খুলেছেন। এই হিসাবে অর্থ জমা করছেন। প্রয়োজনে ব্যাংক থেকে ঋণ নিচ্ছেন। তাঁরা সবাই আয়মূলক কাজে অংশগ্রহণের চেষ্টা করছেন। নিকট ভবিষ্যতে এসব নারী ভালো কিছু করবেন বলে আশা করছি।
আমাদের পণ্যগুলো গ্রামাঞ্চলের নারী ও শিশুদের জীবনযাত্রায় প্রভাব ফেলেছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ, বিনোদন, নিরাপত্তা ইত্যাদি ক্ষেত্রে অবদান রেখেছে। যেমন সোলার আলোর জন্য শিশুদের শিক্ষার সময় বেড়েছে। নারীরা রাতেও বিভিন্ন কাজ করছেন। বায়ুদূষণ কমেছে। সামান্য বিদ্যুৎ খরচে টেলিভিশন চলছে। ফ্যান ঘুরছে। আমাদের পণ্যগুলো গ্রামের দরিদ্র মানুষের জীবনকে বদলে দিয়েছে।
আশা মেহরীন আমিন: আমরা সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এমডিজি) ভালো করেছি। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এসডিজি) ভালো করতে চাই। কিন্তু দেশের নারীরা যদি পিছিয়ে থাকেন, তাহলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারব না। বিশেষ করে দরিদ্র নারীরা অমানবিক পরিবেশে কঠিন পরিশ্রম করেন। বেশির ভাগ নারী আয়মূলক কাজের থেকে জীবনের অধিকাংশ সময়ই সেবামূলক কাজে ব্যয় করেন।
সবচেয়ে বড় প্রয়োজন নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বদলানো। দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন না হলে নারীর উন্নয়ন ভীষণভাবে বাধাগ্রস্ত হবে। এ বিষয়ে মানুষের সচেতনতা বাড়াতে পত্রিকার ভূমিকা অবশ্যই আছে। রেডিও-টেলিভিশনসহ সব গণমাধ্যমকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
সৈয়দ আলমগীর: দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে বেসরকারি খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। নারী বা পুরুষ, যিনিই কাজ করবেন, তাঁর বিশ্রামের প্রয়োজন। মানুষের জীবনকে সহজ করার জন্য আমাদের কিছু পণ্য বাজারে রয়েছে। আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিই নারীদের সুস্থতার বিষয়টিতে।
সঠিক মাসিক ব্যবস্থাপনার অভাবে নারীরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হন। মাসিকের সময়ে আমাদের দেশের দরিদ্র ও গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ সাধারণ নারী অস্বাস্থ্যকর কাপড় ব্যবহার করেন। এটা তাঁদের শরীরের জন্য কখনো কখনো মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করে। এসব নারীর কথা ভেবে অনেক কম টাকায় স্যানিটারি ন্যাপকিনের ব্যবস্থা করেছি।
আমরা, বেসরকাির প্রতিষ্ঠানগুলো বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে নারীদের গৃহস্থািল কাজের স্বীকৃতির চিত্র তুলে ধরতে পারি। নারীদের কাজের যথাযথ সম্মান দিলে পারিবারিক সৌহার্দ্য বৃদ্ধি পায়, সে চিত্র আমরা দেখিয়ে থাকি।
কৃষিকাজে নারীরা আগে অনেক কাজ করতেন, যেমন গরু ও লাঙল দিয়ে জমি তৈরি করা, ধান মাড়াই করা ইত্যাদি। নারীদের কৃষিকাজে সুবিধার জন্য স্বল্প মূল্যের কৃষি যন্ত্রপাতি এনেছি। এর পাশাপাশি আমরা মানসম্পন্ন মোড়কজাত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য তৈরি করি, যেন নারীদের পরিশ্রম কমে যায়।
নারীদের গৃহস্থালি কাজের চাপ কমানোর জন্য আমাদের আরও অনেক কিছু করণীয় আছে এবং আমরা করব। রান্নাঘরের জন্য কয়েকটি দ্রব্য দিচ্ছি, যেন রান্নাঘরের কাজগুলো নারীদের জন্য সহজ হয়। আগে তাঁদের অনেক কষ্ট করে মসলা বাটতে হতো। আমরা বিভিন্ন ধরনের মানসম্পন্ন গুঁড়া মসলা দিয়েছি।
আমরা দেখেছি, অনেক নারী লেখাপড়া করে আয়মূলক কাজ পান না বলে গৃহস্থালি কাজ করেন। আমাদের কোম্পানির নীতি হলো, প্রতি পাঁচজনে একজন নারী নিয়োগ পাবেন। ভবিষ্যতে প্রতি চারজনে একজন নারীকে নিয়োগ দেব। সবাই সবার জায়গা থেকে নারীদের জন্য কাজ করলে নিশ্চয়ই তাঁদের সমস্যা থাকবে না।
সৈকত আজাদ: নারী-পুরুষ সবাই সেবামূলক কাজ করতে পারেন। প্রযুক্তির মাধ্যমে সেবামূলক কাজ অনেক দ্রুত ও সহজে করা যায়। সুস্থ থাকার জন্য সহজপাচ্য খাবার খাওয়া প্রয়োজন। রাইসকুকার দিয়ে এ ধরনের খাবার খুব সহজে রান্না করা যায়। অক্সফাম একজন নারীকে একটি ওয়াশিং মেশিন দিয়েছে। এ মেশিনের মাধ্যমে তিনি অন্যদের কাপড় পরিষ্কার করে যেমন কিছু অর্থ আয় করছেন, তেমনি পরিচ্ছন্নতায় মানুষকে উদ্বুদ্ধ করছেন। এখন ৬ হাজার ৫০০ টাকায় একটি ওয়াশিং মেশিন পাওয়া যায়। মাত্র ৬৫ ওয়াটের একটি সোলার প্যানেল দিয়ে টেলিভিশন, কয়েকটি বাতি ও ওয়াশিং মেশিন চালানো যাবে। এ তথ্য হয়তো নারীদের অনেকে জানেন না।
একটা রাইসকুকার দিয়ে শাকসবজি ও মাছের তরকারি রান্না করা যায়। ওয়াশিং মেশিন, রাইসকুকার এসব প্রযুক্তি ব্যবহার করলে নারীদের অনেক সময় বেঁচে যাবে। তাঁরা আয়মূলক কাজে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। নারীদের মধ্য থেকে আরও বেশি নেতৃত্ব তৈরি হবে।
পুরুষ একা সমাজকে সমৃদ্ধ করতে পারবে না। এখানে অবশ্যই নারীর অংশগ্রহণ প্রয়োজন। আমি একাই পরিবারের সদস্য নই। সবাইকে নিয়ে পরিবার। আমার স্ত্রী তাঁর মেধা দিয়ে আমাকে, আমার পরিবারকে সমৃদ্ধ করছেন। তাঁর কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার ও পাওয়ার আছে।
আমাদের সবার উচিত নারীদের সেবামূলক কাজে সহযোগিতা করা। তাহলে তাঁরা আয়মূলক কাজে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। পরিবারে ও সমাজে অবদান রাখতে পারবেন। জীবনযাপনকে সহজ করার মতো কিছু দ্রব্য আমাদের আছে। অক্সফামের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো এই বার্তা গ্রামীণ নারীদের কাছে পেঁৗছাতে সাহায্য করলে আমরা প্রযুক্তি নিয়ে আরও এগিয়ে যাব।
খালেকুজ্জামান: আমি গৃহিণীদের বলি এনার্জি ম্যানেজার। প্রকৃত সত্য হলো ‘গৃহ মহাপরিচালক’। নারী গৃহ মহাপরিচালক বলেই আমরা ঘরের সবকিছু সাজানো-গোছানো পাই। একটা নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের সময় প্রথমে একটু অসুবিধাও হয়। আবার একবার যখন এর ভালো দিকটা বুঝতে পারেন, তখন আর অসুবিধা হয় না। এ জন্য অভ্যাস পরিবর্তন জরুরি।
গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষের জন্য বন্ধু চুলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ চুলায় ধোঁয়া থাকে না। দ্রুত রান্না হয়। খুব কম জ্বালানি লাগে। এর দামও অনেক কম। যেকোনো পরিবার সহজে একটা বন্ধু চুলা কিনতে পারে।
প্রচলিত চুলায় অনেক বেশি কাঠ লাগে বলে বন উজাড় হচ্ছে। রান্নাঘর ধোঁয়ায় ভরে যায়, ফলে দেশের হাজার হাজার নারী বিভিন্ন ধরনের ধোঁয়াজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
নারীদের কাজকে কীভাবে সহজ করা যায়, কীভাবে তাঁদের আয়মূলক কাজে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া যায়—এ জন্য আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
সাজিদ রায়হান: বাংলাদেশ জনসংখ্যা–সুবিধা ভোগ করছে। এখন দেশে কর্মক্ষম মানুষের তুলনায় নির্ভরশীল মানুষের সংখ্যা কম। এই কর্মক্ষম যুবসমাজের অর্ধেকই নারী। বিশাল কর্মক্ষম নারীসমাজের অধিকাংশ নারী সেবামূলক কাজে সময় ব্যয় করছেন। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় নারীর অবৈতনিক সেবামূলক কাজের বিষয়টি ছিল। কিন্তু এই পরিকল্পনা চূড়ান্তকরণের সময় এটি বাদ যায়। ২০১১ সালের নারী উন্নয়ন নীতিমালায় এখনো অবৈতনিক সেবামূলক কাজের বিষয় আছে। চূড়ান্তভাবে যেন এই নীতিমালায় বিষয়টি থাকে, সে জন্য সবাই একসঙ্গে কাজ করতে পারি।
নারীবান্ধব সরকারি সেবা একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। স্থানীয় সরকারের সেবাগুলো যেন নারীবান্ধব হয়। এ ক্ষেত্রে নারীর প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দেওয়া জরুরি। সেবার ধরন এমন হওয়া প্রয়োজন যেন নারী খুব সহজে এটা গ্রহণ করতে পারেন। স্থানীয় সরকারের বাজেটে নারীর উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। জাতীয় আয়ে নারীর সেবামূলক কাজের অবদান কতটুকু, সরকারের সেটা জানা প্রয়োজন। তাহলে সরকার নারী উন্নয়নে বেশি করে বাজেট বরাদ্দ করবে। এর মাধ্যমে গ্রাম ও শহরে নারীর উন্নয়নে পরিকল্পনা নেওয়া যাবে।
রীনা রায়: মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন ২০১২ সালে ‘মর্যাদায় গড়ি সমতা’ নামে একটি স্লোগানের প্রচার শুরু করে। আমরা এ স্লোগান পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র—সব জায়গায় নিয়ে যেতে চেয়েছি। আমাদের বিশ্বাস, এর ফলে নারীর প্রতি সহিংসতা কমবে। বৈষম্য কমবে। মর্যাদা বাড়বে। এভাবে নারী-পুরুষের মধ্যে সমতা আসবে। আমরা ১১৭টি অংশীদারের সঙ্গে কাজ করি। তাদের কাজের মাধ্যমে এ স্লোগান মানুষের মধ্যে নিয়ে যাচ্ছি। এ স্লোগান নিয়ে সিপিডি ও মাত্রার সঙ্গেও কাজ করছি। তবে শাইখ সিরাজের মেত, ২১টি কৃষিকাজের মধ্যে ১৭টি নারী করেন অথচ কৃষক হিসেবে তাঁদের স্বীকৃতি নেই। জাতীয় আয়ে নারীর সেবামূলক কাজের মূল্য অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে না। নারীর উৎপাদিত একটি লাউ বাজারে বিক্রি হলে সে অর্থ জাতীয় আয়ে অন্তর্ভুক্ত হয়। কিন্তু সেই লাউটি যদি বাড়িতে রান্না করে খাওয়া হয়, তাহলে সেটা জাতীয় আয়ে অন্তর্ভুক্ত হয় না।
সেবামূলক কাজ পুরুষের তুলনায় নারী তিন গুণ বেশি করেন। ২০১৩-১৪ সালের জাতীয় আয়ে ৭৬ শতাংশ অবদান হলো নারীর। ‘টাইম ইউজ’ পদ্ধতি ব্যবহার করলে নারীর অবদান জাতীয় আয়ে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। কিন্তু সরকার ইচ্ছা করলেই এ পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারবে না। জাতিসংঘের মাধ্যমে এটা করতে হবে। আমরা এ লক্ষ্যে কাজ করছি। জাতীয় হিসাবের এই সংস্কার করতে হলে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
মো. রাশেদুর রহমান: নারীদের সম্মান ও স্বীকৃতির বিষয়গুলো পাঠ্যপুস্তকে গুরুত্বের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন, যেন একজন শিশু ছোটবেলা থেকেই পাঠ্যপুস্তক থেকে বিষয়টি শিখতে পারে। মানুষ ছোটবেলা থেকে যেটা শেখে, সেটা খুব সহজে ভোলে না। সংসারে ব্যবহারযোগ্য এমন সব পণ্য আমরা তৈরি করি, যা আমাদের দেশের নারীদের জীবনযাত্রাকে সহজ করবে। যেমন একটা কাচের থালা সরানো-নাড়ানো যত ঝুঁকিপূর্ণ, সে ক্ষেত্রে একটা প্লাস্টিকের থালা নিয়ে যে কেউ সহজে কাজ করতে পারে।
আমরা ছয় বছর ধরে গ্যাসের চুলা বাজারজাত করছি। আমরা অনেক সাশ্রয়ী মূল্যে চুলা দিতে পারছি। প্রতিনিয়ত এ চুলার বিক্রি বাড়ছে। দাম কম ও মানের দিক থেকে ভালো বলেই অনেক বেশি বিক্রি হচ্ছে। সরকারের নীতিগত কিছু বিষয়ে সমর্থন পেলে নারীদের যোগাযোগসহ আরও কিছু বিষয়ে আমরা কাজ করতে পারি।
মাহীন সুলতান: নারীদের সেবামূলক গৃহস্থালি কাজের পরিবর্তে বলা উচিত ‘সেবামূলক গৃহস্থালি কাজ’। কারণ, কোথাও বলা হয়নি গৃহস্থালি সেবামূলক কাজ কেবল নারীরা করবেন। নারী-পুরুষ যে কেউ এটা করতে পারেন।
এটা সত্যি যে আমাদের সমাজব্যবস্থায় নারীরা এটা করছেন। সেবামূলক কাজে নারীরা যেমন স্বীকৃতি পাচ্ছেন না, তেমনি পুরুষেরা করলেও স্বীকৃতি পান না। অনেক পুরুষ নারীদের সেবামূলক কাজ করেন। আরও বেশি করে এটা করা প্রয়োজন। তাহলে অন্যরাও এ কাজে উদ্বুদ্ধ হবেন। একজন পুরুষ তাঁর নিজের প্রয়োজনেই এটা করবেন। এ ক্ষেত্রে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোও জরুরি।
নারী আয়মূলক কাজে অংশগ্রহণ করতে পারলে পরিবারেই সমৃদ্ধি আসে। নারীদের সেবামূলক কাজ কমানোর জন্য স্থানীয় সরকার, কেন্দ্রীয় সরকার ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান—সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে। যেমন সরকার শিশুদের দিবাযত্নকেন্দ্র করাসহ বিভিন্নভাবে নারীদের সহযোগিতা করতে পারে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অনেক কম মূল্যে আধুনিক প্রযুক্তি সরবরাহ করে নারীদের সহযোগিতা করতে পারে। নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে নারীদের সেবামূলক কাজ কমানোর বিষয়টি এখন গুরুত্বের সঙ্গে ভাবা প্রয়োজন।
মেহের আফরোজ চুমকি: নারীদের সেবামূলক কাজের বিষয় খুব একটা আলোচনায় আসে না। আজকের আলোচনায় এতজন পুরুষ নারীর কাজ ভাগাভাগির বিষয়ে কথা বলছেন, এটা অত্যন্ত আনন্দের। পুরুষেরা যত বেশি সচেতন হবেন, তত বেশি নারীর কল্যাণ হবে।
নারী হোক, পুরুষ হোক, যাঁর অর্থ আছে, শিক্ষা আছে—পরিবারে, সমাজে, রাষ্ট্রে তাঁর গুরুত্ব বেশি। সব জায়গায় প্রাধান্য বেশি। তাই নারীকে এসব ক্ষেত্রে আরও বেশি সুযোগ দিতে হবে। বিশেষ করে নারীর যেন আয়মূলক কাজে অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি হয়, সবাইকে এটি গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে। নারীরা গৃহস্থালি কাজের স্বীকৃতি ও মূল্যায়ন পান না। এর মূল কারণ দারিদ্র্য, শিক্ষা ও ক্ষমতার অভাব। নারীদের কাজের ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। নিজেদের চিন্তা করে উপায় বের করতে হবে যে কীভাবে গৃহস্থালি কাজের চাপ কমিয়ে বেশি আয়মূলক কাজ করা যায়। আয়মূলক কাজে অংশগ্রহণ মেয়েদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে ও স্বাবলম্বী করে তুলবে।
গৃহস্থালি কাজের চাপ কমানোর জন্য যত বেশি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে, তত বেশি নারীদের অবস্থার পরিবর্তন হবে। আর এই অবস্থার পরিবর্তনের জন্য দরকার ছোটবেলা থেকেই নারীদের স্বাস্থ্য ও শিক্ষার ব্যাপারে সচেতন হওয়া ও বিনিয়োগ করা। নারীরা পরিবারের বয়স্কদের সেবা করেন, রান্না করেন, সন্তানদের সেবাযত্ন করেন।
নারীদের সেবামূলক কাজের আর্থিক মূল্য অনেক, কিন্তু এর কোনো স্বীকৃতি তাঁরা পান না। এ বিষয়ে আমাদের সবাইকে একসেঙ্গ কাজ করতে হবে। নারীদের উন্নয়নে আমাদের মন্ত্রণালয় সর্বক্ষণ কাজ করছে। তঁাদের দারিদ্র্য বিমোচনে বিভিন্ন ধরনের ভাতা দেওয়া হচ্ছে। সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীতে নারীদের ব্যাপক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হচ্ছে।
আমাদের আরেকটি বিশেষ পরিকল্পনা হলো, সারা দেশে বিনা মূল্যে নারীদের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিতে যাচ্ছি। আসা-যাওয়ার খরচের অভাবে যেন প্রশিক্ষণ বন্ধ না হয়, এ জন্য প্রতিদিন প্রশিক্ষণ শেষে কিছু অর্থও দেওয়া হবে।
সরকার একা সবকিছু করতে পারবে না। সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তাহলে আমি অবশ্যই আশাবাদী, ভবিষ্যতে নারীরা আরও বেশি আয়মূলক কাজে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
আব্দুল কাইয়ুম: দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য নারী-পুরুষের একসঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে। কেউ পেছনে থাকলে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে।
আলোচনায় এসেছে নারীরা আট ঘণ্টার বেশি সময় সেবামূলক কাজ করেন। পরিবারের পুরুষ সদস্য, সমাজ ও রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারণী অবস্থান থেকে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ভাবা প্রয়োজন। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে সবাইকে কৃতজ্ঞতা, ধন্যবাদ।
যাঁরা অংশ নিলেন
মেহের আফরোজ চুমকি : সাংসদ, প্রতিমন্ত্রী, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়
এম বি আখতার : পরিচালক, প্রোগ্রাম, অক্সফাম বাংলাদেশ
মাহীন সুলতান : ভিজিটিং ফেলো, ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স
ডেভেলপমেন্ট
সৈয়দ আলমগীর : নির্বাহী পরিচালক, এসিআই ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক,
এসিআই সল্ট লি.
রীনা রায় : পরিচালক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন
খালেকুজ্জামান : ইঞ্জিনিয়ার, সিনিয়র অ্যাডভাইজর,
জিআইজেড, বাংলাদেশ
আশা মেহরীন আমিন : ডেপুটি এডিটর, এডিটরিয়াল, দ্য ডেইলি স্টার
সাজিদ রায়হান : ডেপুটি ডিরেক্টর প্রোগ্রাম, পলিসি অ্যান্ড ক্যাম্পেইন,
অ্যাকশনএইড, বাংলাদেশ
মো. রাশেদুর রহমান : চিফ অপারেটিং অফিসার, আরএফএল, প্রাণ গ্রুপ
কাজী আহমদ ফারুক : হেড অব অ্যাকসেস টু এনার্জি,
রহিমআফরোজ এনার্জি লি.
সৈকত আজাদ : প্রোডাক্ট ম্যানেজার, ট্রান্সকম ইলেকট্রনিকস লি.
শামীমা আকতার : সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার, অক্সফাম
মিনা বেগম : সদস্য, ডেইরি প্রডিউসার গ্রুপ, সিরাজগঞ্জ
আলেকজান বেগম : সদস্য, ডেইরি প্রডিউসার গ্রুপ, রৌমারী, কুড়িগ্রাম
সঞ্চালক
আব্দুল কাইয়ুম : সহযোগী সম্পাদক, প্রথম আলো