ফুলে ফুলে ভরে গেছে নার্সারিগুলো

ফুলে ফুলে ভরা রাজধানীর একটি নার্সারি l প্রথম আলো
ফুলে ফুলে ভরা রাজধানীর একটি নার্সারি l প্রথম আলো

চারদিকে শুধু ফুল আর ফুল। নানান রঙের ফুল ফুটে আছে রাজধানীর নার্সারিগুলোতে। এ সময়ই সবচেয়ে বেশি মৌসুমি ফুল ফোটে। তাই এই সময়ে নার্সারিগুলোতে ভিড় করেন ক্রেতারাও। কেউ বাসাবাড়ির জন্য ফুল গাছ কেনেন, কেউবা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য এসব গাছ কিনছেন।
ফুল বিক্রেতারা বললেন, শীতকালে সবচেয়ে বেশি ফুলের আবাদ হয়। এই সময় বৃষ্টি একেবারে কম হয় বলে ফুলের স্থায়িত্ব থাকে বেশি। এ ছাড়া শীতে মৌসুমি ফুল ফোটেও ভালো।
কয়েকটি নার্সারি ঘুরে দেখা গেল, এই সময় বিভিন্ন ধরনের গাঁদা, চন্দ্রমল্লিকা, সিলভিয়া, কসমস, জিনিয়া, ডালিয়া, স্নো
বল, নানান রঙের গোলাপ, গ্ল্যাডিওলাস, জারবেরা, কারনেশান, পিটুনিয়া, ক্যালেন্ডুলা, টাইম ফুলসহ আরও বেশ কিছু মৌসুমি ফুল বেশি বিক্রি হচ্ছে। এসব ফুলের চারার দাম ৩০ থেকে ৪০ টাকা। আর এর সঙ্গে টব নিতে চাইলে বাড়তি টাকা গুনতে হবে।
নার্সারির বিক্রেতারা জানান, নভেম্বর থেকে মৌসুমি ফুল বিক্রি শুরু হয়। চলে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। বড় বড় সরকারি প্রতিষ্ঠান ও গুলশান, বনানী, উত্তরা, ধানমন্ডি এলাকার বিভিন্ন বাড়ির মালিক ও ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলো ফুলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা। এর বাইরে অনেকে ফ্ল্যাট বাড়িতে বারান্দায় বা বেলকনিতে ফুল লাগান। তাঁরাও মৌসুমি ফুল কিনতে আসেন।
সরেজমিনে রাজধানীর নার্সারিগুলো ঘুরে দেখা গেছে, এই সময়ে মৌসুমি নানান ফুলের চাহিদাই বেশি। ক্রেতারা এসব ফুলই কিনছে বেশি। রাজধানীর আগারগাঁও এলাকায় ৬ একর জমির ওপর গড়ে উঠেছে সবুজ বাংলা নার্সারি। নার্সারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মালেকের দাবি, তাঁর এই নার্সারি রাজধানীর সবচেয়ে বড় নার্সারি। এই সময় মৌসুমি নানা ফুলের চাহিদাই বেশি বলে জানালেন তিনি। তাঁদের নার্সারিতে নানা রঙের প্রায় ২৫ ধরনের মৌসুমি ফুল আছে। তিনি জানালেন, গাঁদা আছে তিন রঙের—লাল, হলুদ, সোনালি। চন্দ্রমল্লিকা আছে চার থেকে পাঁচ রঙের। এই বাইরে গোলাপ আছে দেড় শ রঙের। অন্য আরও কয়েকটি একই প্রজাতির বিভিন্ন রঙের ফুল আছে। এগুলোর বাইরে শাপলা ও পদ্ম ফুলও এখানে পাওয়া যায়।
ইয়ামিন নার্সারিতে কথা হয় ইস্কাটনের বাসিন্দা কাজী ইদ্রিসের সঙ্গে। তিনি ফুল গাছ কিনতে এসেছেন। কী ফুল কিনছেন জানতে চাইতেই তিনি মুঠোফোনের ছবি ও ভিডিও দেখালেন কিছু মৌসুমি ফুলের। তিনি জানালেন, গত বছর এসব ফুল লাগিয়েছিলেন। এবারও ওই ফুল কিনতে এসেছেন। তিনি জানালেন, মৌসুমি ফুল একবার ফুল দিয়েই গাছ নষ্ট হয়ে যায়। পরের বছর গাছ থাকলেও সেভাবে ফুল আসে না। তাই গাছ বদলাতে হয়। তিনি ছাদে ফলের বাগানও করেছেন।
ফার্মগেট এলাকার বাসিন্দা মিল্কি তালুকদারও কিনতে এসেছেন ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা ও সিলভিয়া ফুল। তিনি বলেন, ‘যে বাসায় থাকি তার বারান্দায় কিছু টব আছে, সেখানে এসব মৌসুমি ফুল লাগাচ্ছি।’ গত বছর তিনিও এসব ফুল নার্সারি থেকে কিনে লাগিয়েছিলেন।
তবে মৌসুমি ফুলের পাশাপাশি মৌসুমি সবজির গাছের চাহিদাও নার্সারিগুলোতে বাড়ছে বলে অনেক নার্সারি এসব সবজির গাছ রাখছে। এগুলো সবজি টবেই চাষ করা যায়। কৃষিবিদ উপকরণ নার্সারির ব্যবস্থাপক খন্দকার শরিফুল আলম বলেন, এখন মানুষ টমেটো, মরিচ, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রকলি, ক্যাপসিকাম, লাউ, কুমড়াসহ বিভিন্ন শাকসবজি টবে লাগাচ্ছে। তাই এসব সবজির চারা রাখা হচ্ছে। অনেকে ছাদে সবজির বাগান করছেন। তিনি আরও বলেন, দিন দিন মানুষ ছাদে বাগান করার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন।