
বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক বেনজীর আহমেদের হাত-পায়ের রগ কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। সরকারি শাহ সুলতান কলেজ কেন্দ্র থেকে পরীক্ষা দিয়ে রিকশায় করে ফেরার পথে তিনি হামলার শিকার হন।
ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা পরিকল্পিতভাবে বেনজীরের হাত-পায়ের রগ কেটে দিয়েছেন বলে জেলা ছাত্রলীগের নেতারা অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনায় জড়িত শিবিরের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে জেলা যুবলীগ ও ছাত্রলীগ সন্ধ্যায় শহরে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। পুলিশও হামলার জন্য শিবিরের নেতা-কর্মীদের সন্দেহ করছে। তবে শিবিরের নেতারা হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সরকারি আজিজুল হক কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র বেনজীর অনার্স চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। গতকাল বৃহস্পতিবার তাঁর শেষ পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা শেষে শহরের সাতমাথায় ছাত্রলীগের সমাবেশে যোগ দিতে রিকশায় করে যাওয়ার পথে শেরপুর-সাতমাথা সড়কের কানুছগাড়ী এলাকায় সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হন তিনি। এ সময় দৌড়ে রাস্তার পাশের একটি ওষুধের দোকানে আশ্রয় নিলে সেখানেই রামদা-চাকুসহ ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাঁকে কুপিয়ে হাত-পায়ের রগ কেটে দেয় সন্ত্রাসীরা। পরে তারা ককটেল বিস্ফোরণ ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়।
ওষুধ দোকানের মালিক আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, হঠাৎ দৌড়ে একটি ছেলে তাঁর দোকানে ঢোকে। পিছু পিছু অস্ত্রধারী হামলাকারীরা দোকানে ঢোকে। দোকানের ভেতরেই রামদা ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তারা ছেলেটিকে জখম করে। রক্তে পুরো দোকানের মেঝে ভেসে গেছে। তাঁরা দ্রুত আহত যুবককে পাশের মোহামঞ্চদ আলী হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
হাসপাতালে বেনজীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘হামলাকারীরা শিবিরের ক্যাডার। তাদের অনেক অনুনয়-বিনয় করেছি। ভাই ডেকেছি। হাতে-পায়ে ধরেছি। মন গলেনি তাঁদের। দোকানে ঢুকে তারা হাত-পায়ের রগ কেটে দিয়ে গোটা শরীর কুপিয়েছে।’
জানা গেছে, অবস্থার অবনতি হওয়ায় বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বেনজীরকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাশরাফী বলেন, বেনজীর আজিজুল হক কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক শক্তিকে দুর্বল করতেই পরীক্ষার হল থেকে সমাবেশস্থলে ফেরার পথে শিবিরের ক্যাডাররা পরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালিয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার মো. মোজামেঞ্চল হক বলেন, ‘ছাত্রলীগের নেতার ওপর হামলার ধরন ও হামলার পর ককটেল বিস্ফোরণে আলামত দেখে মনে হচ্ছে, হামলার সঙ্গে শিবির জড়িত। তার পরও হামলাকারীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করতে গোয়েন্দা পুলিশকে মাঠে নামানো হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি।’ তবে শিবিরের বগুড়া শহর কমিটির প্রচার সম্পাদক মিজানুর রহমান এই হামলার সঙ্গে শিবিরের সংশ্লিষ্টতার কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘শিবির এ ধরনের জঘন্য হামলায় বিশ্বাসী নয়। আমরাও হামলাকারীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে পুলিশের প্রতি দাবি জানাচ্ছি।’