বিশ্ব ক্রিকেটের সেনসেশন, তরুণ তুর্কি মুস্তাফিজুর রহমান। ক্রিকেটের বিভিন্ন আসরে কাটার-অফ কাটার দিয়ে একের পর এক কীর্তি গড়ছেন বাংলাদেশের বিস্ময়বালক মুস্তাফিজ। তাঁর বোলিং জাদুতে ক্রিকেট-বিশ্বের মহাতারকাদের মুখে চলছে মুস্তাফিজ স্তুতি।
রাজধানীর এশিয়াটিক সোসাইটি আজ মঙ্গলবার আয়োজিত ‘বৈশ্বিক প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক’ শীর্ষক আলোচনায়ও উঠে এল মুস্তাফিজের নাম। এশিয়াটিক সোসাইটির চতুর্থ মাসিক সাধারণ সভায় বক্তা ছিলেন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার রাজনৈতিক, পানি, ভূমি ও সমুদ্রসীমা, ব্যবসা-বিনিয়োগ ও ট্রানজিটসহ নানা বিষয়ে আলোকপাত করছিলেন তিনি। আলোচনার এক পর্যায়ে তিনি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) আলো ছড়ানো মুস্তাফিজ প্রসঙ্গ আনেন।
বাংলাদেশ-ভারতের গণমাধ্যমে দুই দেশের সংবাদের জন্য জায়গা বেড়েছে জানিয়ে বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বলেন, ‘২০ বছর আগে ভারতের গণমাধ্যম দেখেন, দেখবেন সেখানে বাংলাদেশের সংবাদ তেমন আসত না। আজ প্রতিটা খবরের কাগজে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তানের বড় খবর থাকবেই। আজ বাংলাদেশের ডেইলি স্টার–এও দেখলাম, মোদির যে সার্টিফিকেট জটিলতা নিয়ে প্রথম পাতায় খবর বেরিয়েছে। আনন্দবাজার–এর একটা পাতা শুধু বাংলাদেশকে নিয়ে।’
বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বলেন, ‘ভারতে মুস্তাফিজের যত ফ্যান আছে, বিরাট কোহলির তত নেই—এটা সত্য। আইপিএলে মুস্তাফিজ যেভাবে খেলছেন, প্রতিদিন তাঁকে নিয়ে ভারতের পত্রিকায় খবর আসে। আমার বাড়িতে এটা নিয়ে তো লড়াই। আমি বিরাটের ফ্যান, আর ছেলেমেয়ে মুস্তাফিজের ফ্যান। আমার বউও তা-ই। মানে ডিভোর্স হওয়ার জোগাড়। মানে দুই দেশের যে মানসিক প্রতিবন্ধকতা আছে, সেটা কমে যাচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ভারতের গণমাধ্যম, রাষ্ট্রীয় বিষয়াদি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাসে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।
পরে বিদ্যুৎ চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভারতের প্রতিটি সংবাদপত্রে মুস্তাফিজকে একবার উল্লেখ করা হচ্ছেই। প্রত্যেক বড় বড় খেলোয়াড় ডেল স্টেইন, মুত্তিয়া মুরলিধরন, রাহুল দ্রাবিড়, অনিল কুম্বলেসহ মুস্তাফিজের প্রশংসা করছেন। মুস্তাফিজ আমাদের এই অঞ্চলে এক বিরাট আবিষ্কার, সেটা আমি জোরগলায় বলতে পারি। আমি বলি, মুস্তাফিজ ইন্ডিয়ায় জন্মালেন না কেন, তাহলে ভারতের হয়ে খেলতে পারতেন। আমি নিজে ওঁর খেলা দেখেছি। যেভাবে খেলছেন, একদিন অনেক বড় খেলোয়াড় হবেন।’
সভায় সভাপতিত্ব করেন এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম চৌধুরী। বক্তাকে পরিচয় করিয়ে দেন সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী।