বাড়তি ফিতে মিলবে গাড়ির পছন্দের নম্বর
নিজের গাড়ির পছন্দের নম্বরপ্লেট পেতে অনেকেরই আগ্রহ থাকে। তাঁরা চান, নম্বরটি যাতে সহজে মনে রাখার মতো হয়, দেখতেও ‘ভালো লাগে’। এ জন্য বিআরটিএ কার্যালয়ে গিয়ে চেষ্টা-তদবিরও করেন মালিকেরা। কেউ পান, কেউ বিফল হন। এবার বাড়তি ফির বিনিময়ে কার ও জিপের জন্য পছন্দের বিশেষ নিবন্ধন নম্বর বরাদ্দ দেওয়ার নিয়ম চালু করতে যাচ্ছে সরকার।
যানবাহনের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এ–সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। শিগগিরই তা বাস্তবায়নে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে বলে সড়ক মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে।
এ বিষয়ে বিআরটিএর চেয়ারম্যান কামরুল আহসান প্রথম আলোকে বলেন, গাড়ির মালিকদের আগ্রহ বিবেচনায় নিয়ে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে সরকারের কিছু বাড়তি আয়ও হবে।
মন্ত্রণালয় ও বিআরটিএ সূত্র জানিয়েছে, বিআরটিএ প্রতি ১০ হাজার নিবন্ধন নম্বরের মধ্য থেকে ১৯৯টি বিশেষ নম্বর চিহ্নিত করেছে। পছন্দের নম্বর পেতে সর্বোচ্চ ছয় গুণ পর্যন্ত ফি দিতে হবে। আগে এলে আগে পাবেন ভিত্তিতে বিশেষ নম্বর বরাদ্দ দেওয়া হবে। তবে একই নম্বর পেতে একাধিক ব্যক্তি আবেদন করলে লটারির মাধ্যমে একজনকে বেছে নেওয়া হবে। কেউ গাড়ি বিক্রি করে দিলে নম্বরটির মালিকানাও বদল হয়ে যাবে।
মোটরযানের নিবন্ধন সনদ বা নম্বরপ্লেটের তিনটি অংশ। প্রথমে যানের ইঞ্জিন ক্ষমতা (সিসি), আসন এবং ওজনের ওপর ভিত্তি করে সিরিজ নির্ধারিত হয়। সব মিলিয়ে সিরিজ আছে ৪০টি। ক, খ, ব ও ভ—এই চারটি বর্ণ দিয়ে নিবন্ধন দেওয়া হয় কারের। জিপের জন্য নির্ধারিত সিরিজ হচ্ছে ‘ঘ’। প্রতিটি সিরিজে ৯ হাজার ৯৯৯টি যানবাহনের নিবন্ধন দেওয়া যায়। এরপর সিরিয়াল বা ক্রম নম্বর, যা নির্ধারিত আছে ১১ থেকে ৯৯ পর্যন্ত। সর্বশেষ চারটি অঙ্ক নিবন্ধন নম্বর।
বিআরটিএ সূত্র জানায়, বর্তমানে মোটরযানের নিবন্ধনপ্রক্রিয়া পুরোটাই সফটওয়্যারের মাধ্যমে হয়। ফলে যানবাহনের মালিকের করা আবেদনের ক্রম অনুসারে যে নম্বর আসে, তা দেওয়া হয়। অর্থাৎ চাইলেই পছন্দের নম্বর পাওয়ার সুযোগ কম। গত বছর কার ও জিপ নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে ২২ হাজার ৪১৩টি। এর আগের বছর এই দুই শ্রেণির ২৩ হাজার ৭৮২টি গাড়ির নিবন্ধন দেওয়া হয়। এসব গাড়ির নিবন্ধন ফি সর্বনিম্ন ১০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ বা এরও বেশি।
বাড়তি ফি দিয়ে যেসব নম্বর পাওয়া যাবে
শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব কটি অঙ্কই একই রকম—এমন নিবন্ধন নম্বরও হয়। এ ধরনের নম্বর পেতে সবচেয়ে বেশি ছয় গুণ ফি দিতে হবে। যেমন ঢাকা মেট্রো-ক-৩৩-৩৩৩৩। এভাবে ১ থেকে ৯ পর্যন্ত একই অঙ্কের নম্বর পাওয়া যাবে ৯টি।
চার গুণ ফি দিয়ে পাওয়া যাবে আরও ৯টি নম্বর। এগুলোর অবশ্য নিবন্ধন নম্বর অর্থাৎ শেষ চারটি অঙ্ক একই হবে। তবে সিরিয়াল নম্বর পরিবর্তন হয়ে যাবে। যেমন ঢাকা মেট্রো-ক-২২-১১১১। একইভাবে হতে পারে ২২২২, ৩৩৩৩, ৪৪৪৪ ইত্যাদি।
৮০টি নম্বর পাওয়া যাবে তিন গুণ ফি দিয়ে। যার শেষ চারটি অঙ্কে জোড়ার মিল পাওয়া যায়। যেমন ঢাকা মেট্রো-ক-৩৩-১২১২।
এর বাইরে আরও অন্তত ১০১টি নিবন্ধন নম্বর চিহ্নিত করেছে বিআরটিএ, যেগুলোর মধ্যে কোনো না কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায়। যেমন ঢাকা মেট্রো-ক-১১-০০০১। এমন নম্বর নিতে দ্বিগুণ ফি দিতে হবে।
এ বিষয়ে পরিবহন বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুর কৌশল বিভাগের অধ্যাপক সামছুল হক প্রথম আলোকে বলেন, এভাবে কোনো নির্দিষ্ট নম্বরের প্রতি মানুষের আকর্ষণ বাড়ে, জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। যাঁদের টাকা আছে, তাঁদের অনেকেই হয়তো এই বিশেষ নম্বরগুলো নিতে চাইবেন। এটা ভালো চিন্তা। বিদেশে নিজের নাম দিয়ে কিংবা পছন্দের নম্বর অনুসারে নিবন্ধন নেওয়ার রীতি আছে। এমনকি গাড়ির নিবন্ধন পেতেও প্রতিযোগিতায় পড়তে হয়। এ ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ নিলাম করে। প্রচুর আয়ও হয়। তবে এই বাড়তি আয় গণপরিবহন উন্নয়নে কিংবা সড়ক রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় করা হয়।
আরও পড়ুন
-
চুয়াডাঙ্গায় ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
-
স্কুল, মাদ্রাসায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ক্লাস বন্ধ রাখার নির্দেশ হাইকোর্টের
-
প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ, সব প্রাথমিক বিদ্যালয় ২ মে পর্যন্ত বন্ধ
-
সুশৃঙ্খল ব্যাংক খাতের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে শক্তিশালী করার পরামর্শ এডিবি কান্ট্রি ডিরেক্টরের
-
আগামীকালও ঢাকাসহ ২৭ জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করল শিক্ষা মন্ত্রণালয়