Thank you for trying Sticky AMP!!

বিশ্ব ইজতেমা মাঠের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে

১০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। এ উপলক্ষে স্বেচ্ছাশ্রমে চলছে মাঠ প্রস্তুতির কাজ। গতকাল সকালে টঙ্গীর তুরাগ নদের পাড়ে ইজতেমা মাঠে। ছবি: প্রথম আলো

এবার প্রথম ধাপের ইজতেমা শুরু হবে ১০ জানুয়ারি। এখন চলছে ইজতেমার মাঠ প্রস্তুতির কাজ। রাজধানী ঢাকা, গাজীপুর ও আশপাশের এলাকা থেকে তাবলিগ জামাতের সাথিরা প্রতিদিনই মাঠে এসে স্বেচ্ছাশ্রমে করছেন মাঠ প্রস্তুতির কাজ। এর মধ্যে শুক্রবার বা ছুটির দিনগুলোতে স্বেচ্ছাসেবক মুসল্লিদের সমাগম থাকে সবচেয়ে বেশি। ইজতেমাকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও রয়েছে তৎপর।

তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের বিবাদের কারণে এবারও বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে আলাদাভাবে। গত ২৮ অক্টোবর সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তাবলিগের আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বিরোধী হিসেবে পরিচিত মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা ইজতেমা পালন করবেন ১০, ১১ ও ১২ জানুয়ারি। আর সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা ইজতেমা করবেন ১৭, ১৮ ও ১৯ জানুয়ারি। এবার কোনো পক্ষেরই ‘জোড়’ (পাঁচ দিনের প্রস্তুতিমূলক সমাবেশ) ইজতেমার মাঠে অনুষ্ঠিত হয়নি।

গত শুক্রবার ও গতকাল সোমবার সকালে টঙ্গীর তুরাগ পাড়ে ইজতেমা ময়দানে গিয়ে দেখা যায়, স্বেচ্ছাসেবীদের মাঠ প্রস্তুতির কাজ পুরোদমে চলছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা মুসল্লিরা কেউ মাটি কাটছেন, কেউ সেই মাটি বস্তায় ভরে মাঠের বিভিন্ন জায়গায় থাকা গর্ত ভরাট বা উঁচু–নিচু জায়গাগুলো কেটে সমান করছেন। কেউ তাঁবু টানানোর কাজ করছেন, কেউ শৌচাগার নির্মাণ করছেন, কেউবা পরিষ্কার করছেন মাঠে থাকা ময়লা–আবর্জনা। এর মধ্যে কামারপাড়া এলাকায় তুরাগ নদে ভাসমান সেতু তৈরি করতে দেখা গেছে সেনাবাহিনীর সদস্যদের।

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক–সংলগ্ন বাটা গেটের ভেতর দিয়ে ইজতেমা মাঠে ঢুকতেই দেখা গেল জনা বিশেক লোক। তাঁরা বাঁশ কাটছেন। কাটা বাঁশগুলো সারি বেঁধে তাঁবুর কাছে নিয়ে যাচ্ছেন অন্য মুসল্লিরা। এরপর চট দিয়ে পরস্পরের সহযোগিতায় নির্মাণ করছেন শামিয়ানা। গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর এলাকা থেকে আসা ১৩ জনের একটি দল গতকাল তুরাগ নদের পাড়ে টিন দিয়ে ঘর তৈরি করছিল। জানতে চাইলে দলের একজন মো. কামাল হোসেন বলেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে ইজতেমায় আসা মুসল্লিদের যাতে কোনো কষ্ট না হয়, সে জন্য সবাই ছুটে এসেছেন। সবাই এখানে স্বেচ্ছাশ্রমিক, কাজের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনই মূল লক্ষ্য। 

ইজতেমা শুরুর ১০ দিন আগেই মাঠের বেশির ভাগ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানান আয়োজকেরা। এদিকে, গতকাল সকালে ইজতেমার বিরোধী দুই পক্ষের প্রতিনিধিদের সঙ্গেই সমন্বয় সভা আয়োজন করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সভা শেষে কথা হলে গাজীপুর নগর পুলিশের কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ইজতেমার মাঠ প্রস্তুতির কাজ খুব দ্রুতগতিতেই এগিয়ে চলছে। ইতিমধ্যে মাঠের প্রায় ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আমরা দুপক্ষের সঙ্গেই কথা বলেছি। আশা করছি, এবারের ইজতেমা শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হবে।’

বাংলাদেশে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে ১৯৬৩ সাল থেকে। জানুয়ারি ১০ তারিখে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ইজতেমা হবে ৫৭তম। ২০০৯ সাল পর্যন্ত ইজতেমা তিন দিন ধরে অনুষ্ঠিত হতো। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে মুসল্লিরা এই ইজতেমায় অংশ নেন বলে এটি বিশ্ব ইজতেমা হিসেবে পরিচিতি পায়। পরে মুসল্লিদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ২০১০ সাল থেকে দুই দফায় তিন দিন করে ইজতেমার আয়োজন করা হতো। কিন্তু বিরোধের কারণে গত বছর থেকে আলাদাভাবে দুই পক্ষ তিন দিন ধরে ইজতেমার আয়োজন করতে শুরু করে।