চট্টগ্রামে দুদক কমিশনার নাসিরউদ্দীন আহমেদ

ভূমি খাত সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত

ভূমি নিবন্ধন, নামজারিসহ ভূমিসংক্রান্ত খাত সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার নাসিরউদ্দীন আহমেদ। তিনি বলেন, ভূমি রেজিস্ট্রেশন (নিবন্ধন), ভূমির নামজারি, সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়, পল্লী বিদ্যুৎ ও স্বাস্থ্য খাতে মানুষের ভোগান্তি বেশি। ভূমি নিবন্ধন, নামজারিসহ ভূমি খাতে দুর্নীতি বেশি। গতকাল রোববার চট্টগ্রামে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
এর আগে গতকাল সকালে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে ‘গণশুনানি ও জনগণের ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক দুর্নীতি প্রতিরোধমূলক কর্মশালায় অংশ নেন নাসিরউদ্দীন আহমেদ। কর্মশালায় মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে নাসিরউদ্দীন আহমেদ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, দেশে স্বাস্থ্য খাতে সেবার মান নিম্ন পর্যায়ে। সরকারি হাসপাতালগুলোর অবস্থা করুণ। সেখানে রোগীদের প্রাইভেট হাসপাতালে যেতে বলা হয়। স্বাস্থ্যসেবায় নৈরাজ্য চলছে। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘চকরিয়ায় গেলাম। কী যে ভয়ানক অবস্থা। মানুষ কাতরাচ্ছে।’
যেকোনো ঘটনার অনুসন্ধান করে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার পর দুদক সাধারণ মামলা করে। কিন্তু তদন্ত শেষে অধিকাংশ দুর্নীতির মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয় কেন, সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে বিষয়টিকে দুঃখজনক উল্লেখ করে নাসিরউদ্দীন আহমেদ বলেন, মামলা করার ক্ষেত্রে এখন সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে, যাতে কোনো মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া না হয়। অনেকে ওপরে তদবির করে চলে যাওয়ার চেষ্টা করে।
মন্ত্রণালয়ের কিছু কর্মকর্তাকে ৫ শতাংশ করে দিতে রাজি না হওয়ায় করপোরেশনের জন্য বরাদ্দ পাননি বলে চট্টগ্রামের মেয়র সম্প্রতি অভিযোগ করেছেন। বিষয়টিতে নাসিরউদ্দীন আহমেদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সাংবাদিকেরা। এ সময় তিনি বলেন, ‘উনার (মেয়র) কাছে কী তথ্য আছে জানি না। মন্ত্রণালয়ে সমস্যা রয়েছে। তথ্য-প্রমাণ ছাড়া এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।’
গণশুনানির উদ্দেশ্য সম্পর্কে নাসিরউদ্দীন আহমেদ বলেন, কর্মকর্তাদের বলা হচ্ছে দেশব্যাপী গণশুনানি করে জনগণকে উদ্ধুদ্ধ করতে। সরকারি অফিসে জনগণকে যাতে বারবার আসতে না হয়। সরকারি কর্মকর্তাদের কাছে যাতে জনগণ কথা বলার সুযোগ পান।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিনের সভাপতিত্বে গতকালের কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য দেন দুদক চট্টগ্রামের পরিচালক আবদুল আজিজ ভুঁইয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার শংকর রঞ্জন সাহা, দুদক পরিচালক (প্রতিরোধ ও গণসচেতনতা) মো. মনিরুজ্জামান প্রমুখ।
কর্মশালায় চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, কক্সবাজারসহ চট্টগ্রাম জেলার নিবন্ধন কর্মকর্তা, পুলিশ, সিভিল সার্জনসহ টিআইবি (ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ), সনাক (সচেতন নাগরিক কমিটি) ও দুর্নীতি প্রতিরাধ কমিটির প্রতিনিধিরা অংশ নেন।