Thank you for trying Sticky AMP!!

শ্রেণিকক্ষ ও বেঞ্চের অভাবে মাটিতে চট বিছিয়ে পাঠদান

শ্রেণিকক্ষ ও আসনসংকটের কারণে খোলা আকাশের নিচে চলছে পাঠদান। গত সোমবার দুপুরে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের জাগছড়া চা–বাগান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। প্রথম আলো

সিমেন্টের বস্তা জোড়া লাগিয়ে তৈরি করা হয়েছে চট। সেটি বিছানো হয়েছে বিদ্যালয়ের উঠোনে। তাতে বসে আছে কিছু শিক্ষার্থী। সামনে দাঁড়িয়ে পড়াচ্ছেন শিক্ষক।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের জাগছড়া চা–বাগান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে এমন অবস্থা। শ্রেণিকক্ষ ও বেঞ্চের অভাবে শিক্ষার্থীদের মাটিতে চট বিছিয়ে পাঠদান করা হচ্ছে। পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ না থাকায় স্কুলের পাশে চা–বাগানের হাসপাতালের দুটি কক্ষেও চলছে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। সেখানে নিরাপদ খাওয়ার পানি, উন্নত স্যানিটেশন ও অবকাঠামোব্যবস্থার যেন কিছুই নেই।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে শ্রীমঙ্গল উপজেলায় তৃতীয় দফায় জাতীয়করণের সময় ১২টি বিদ্যালয়ের মধ্যে বিদ্যালয়টি পড়ে। ২০১৪ সালে বিদ্যালয়টি সরকারি করা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো পাকা ভবন নির্মাণ করা হয়নি। দোচালা টিনের ঘরের তিনটি কক্ষে দুই শিফটে ৩০০ জন শিক্ষার্থীকে পাঠদান করা হচ্ছে। সকালের শিফটে দুটি কক্ষে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পাঠদান এবং বিকেলের শিফটে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির পাঠদান করা হয়।

গত সোমবার সরেজমিন দেখা যায়, বিদ্যালয়ের উঠোনে চটে বসে আছে কিছু শিক্ষার্থী। বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তাদের পড়াচ্ছেন। বিদ্যালয়ের একচালার দুটি কক্ষ। এক কক্ষে কিছু বেঞ্চ রয়েছে। অন্যটিতে চট বিছানো। বিদ্যালয় লাগোয়া চা–বাগানের হাসপাতাল। সেখানে দুটি ছোট কক্ষ বিদ্যালয়ের জন্য নেওয়া হয়েছে। একটি শ্রেণিকক্ষ ও অন্যটি বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষ। শ্রেণিকক্ষ কিছুটা মানানসই হলেও অফিস কক্ষের অবস্থা খুবই খারাপ। এসবের মধ্যেই চা–বাগানের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা শিখিয়ে বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন শিক্ষকেরা।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রবি দাস বলে, শ্রেণিকক্ষে জায়গা না হলে বিদ্যালয়ের উঠোনে চট পেতে ক্লাস করতে হয়। গরমের মধ্যে ক্লাস করতে অনেক কষ্ট হয়। মাটিতে দীর্ঘ সময় বসে ক্লাস করতে ভালো লাগে না।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অঞ্জলী গোয়ালা বলেন, শ্রেণিকক্ষ ও বাচ্চাদের বসার বেঞ্চ পর্যাপ্ত না থাকায় তারা গাদাগাদি করে মাটিতে চট বিছিয়ে বসে। এভাবে বাচ্চাদের পাঠদানে মনোযোগ থাকে না। শ্রেণিকক্ষে জায়গা না হলে স্কুলের উঠোনে চট বিছিয়ে ক্লাস নিতে হয়। বৃষ্টির দিনে কিংবা প্রচণ্ড রোদের সময় বাইরেও ক্লাস নেওয়া যায় না। বিদ্যালয়ে নিরাপদ খাওয়ার পানি, উন্নত স্যানিটেশন ব্যবস্থার অভাব রয়েছে। এসব বিষয় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে কিছুদিন আগে বিদ্যালয়ের ছাদ তৈরি করে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। ইতিমধ্যেই উপজেলার চা–বাগানের ২০টি বিদ্যালয়ে ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। জাগছড়া চা–বাগান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম প্রস্তাব করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি এই বিদ্যালয়ও নতুন ভবন পাবে। ভবন হলেই সব সমস্যা দূর হয়ে যাবে।’