
বীথি আক্তার এখন বাঁ চোখে কিছুই দেখতে পান না। চোখের চারপাশসহ মুখের বিভিন্ন জায়গায় ফোলা ও কালচে দাগ। শরীরে তীব্র যন্ত্রণা। তবে নিজেকে নিয়ে নন, বীথি বেশি চিন্তিত তাঁর পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে। কারণ, বীথির এ অবস্থার জন্য যাঁকে দায়ী করা হচ্ছে, সেই ফরহাদ এ-বিষয়ক মামলায় জামিনে মুক্তি পেয়ে বীথিকে প্রতিনিয়ত হত্যার হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ।
গত ২৭ অক্টোবর রাত আটটায় মিরপুরের শাহ আলীবাগের বাসার নিচে বীথির রিকশা আটকে টেনেহিঁচড়ে নিচে নামান ফরহাদ আহম্মেদ ও তাঁর সঙ্গীরা। স্টিলের কিছু একটা দিয়ে তাঁর সারা শরীরে আঘাত করতে থাকেন।
তারপর বীথির চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। এ ঘটনায় ২৯ অক্টোবর মিরপুর মডেল থানায় হত্যার উদ্দেশ্যে মারধরের মামলা হয়। আসামি ধরা পড়লেও পরে জামিনে মুক্ত হন।
ঢাকা সিটি কলেজে বিবিএ পড়া বীথি প্রথম আলোকে জানান, ছোটবেলা থেকেই তিনি ও ফরহাদ একসঙ্গে পড়াশোনা করেছেন। থেকেছেন পাশাপাশি বাড়িতে। বছর দুই আগে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্কও গড়ে ওঠে।
বীথির ভাষ্য, প্রেমের সম্পর্ক হওয়ার পর তিনি জানতে পারেন, ফরহাদ ইয়াবা সেবন করেন। সম্পর্ক হওয়ার আগে থেকেই ফরহাদ বিভিন্ন অজুহাতে তাঁর কাছ থেকে টাকা নিতেন।
প্রেম হওয়ার পর তা আরও বেড়ে যায়। একপর্যায়ে টাকা দিতে না চাইলে ফরহাদ তাঁর ব্যাগ ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয়। তবে ফরহাদের বাবা মনির হোসেন মুঠোফোনের জন্য ৩৬ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেন।
বীথি বলেন, এরপর তিনি ফরহাদকে জানিয়ে দেন, তাঁর পক্ষে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। তবে তার পরও অত্যাচার থেমে থাকেনি। এরপর মামলা করেন তিনি। অবশেষে মেরে তাঁর বাঁ চোখ পুরোপুরি নষ্ট করে দেন ফরহাদ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক তৌহিদুল আরেফিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আসামি ফরহাদ আদালত থেকে জামিনে আছেন। এ মাসের মধ্যেই অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।’
বীথি বলেন, ‘জামিনে বের হয়ে ফরহাদ হুমকি দিয়ে বলেছে, দেখলি তো তুই আমার কিছুই করতে পারিসনি। তুই বেঁচে থাকলে তো আমার কিছু করবি।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে গত শনিবার সন্ধ্যায় ফরহাদ আহম্মেদের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।