দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘আপনারা আওয়ামী লীগ করুন, আমি লীগ নয়। আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকলে দল শক্তিশালী হবে। কোন্দল থাকলে আওয়ামী লীগ দুর্বল হবে।’ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সাবেক সদস্য আখতারুজ্জামান চৌধুরীর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রামে আয়োজিত এক স্মরণসভায় তিনি এ কথা বলেন।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রামের মুসলিম ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে উত্তর, দক্ষিণ ও নগর আওয়ামী লীগ এই স্মরণসভার আয়োজন করে। স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ইসহাক মিয়া, নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম, দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, সাংসদ ওয়াশেকা আয়েশা খান, সাবিহা মুছা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য বিপ্লব বড়ুয়া।
মন্ত্রী বলেন, ‘আখতারুজ্জামান চৌধুরী আমার শুধু সহপাঠী ছিলেন না, যত দিন বেঁচে ছিলেন আমরা ঘনিষ্ঠভাবে একসঙ্গে রাজনীতি করেছি। তাঁর মতো নেতা আমাদের ত্যাগের শিক্ষা দিয়ে গেছেন।’
ইসহাক মিয়া বলেন, এক কথার মানুষ ছিলেন আখতারুজ্জামান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন-২০২১ বাস্তবায়নে তাঁর জীবনাদর্শকে ধারণ করতে হবে।
মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, আখতারুজ্জামান শত্রুতা পুষে রাখতেন না। রাজনীতিতে শ্রদ্ধা, সৌজন্য ও সম্মান প্রদর্শন দরকার। তাঁর মধ্যে সেই গুণ ছিল। মন্ত্রী না হয়েও তিনি দলের জন্য কাজ করেছেন।
মোছলেম উদ্দিন আহমদ বলেন, আখতারুজ্জামান চৌধুরী ধনাঢ্য ব্যক্তি হলেও তাঁর বাড়িতে সর্বসাধারণের অবাধ যাতায়াত ছিল। ভিন্নমতাবলম্বীদের সঙ্গেও তিনি সৌজন্য দেখাতেন। তিনি কর্মীদের সব সময় মূল্যায়ন করতেন।
মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, অনেক কঠিন সময়েও তাঁকে আমি দেখেছি দক্ষতার সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দিতে। তিনি ছিলেন দলের ঐক্যের প্রতীক।
এম এ সালাম বলেন, আখতারুজ্জামান চৌধুরীর বাড়ি থেকে কাউকে মুখ কালো করে বের হয়ে আসতে হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর আস্থার সম্পর্ক ছিল।
আনোয়ারায় স্মরণসভা: আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, স্মরণসভায় বক্তারা বলেছেন, জনগণের নেতা হতে পেরেছিলেন আখতারুজ্জামান চৌধুরী। দলের দুঃসময়ে তিনি বড় ভূমিকা পালন করেন। আজীবন দল ও জনগণের স্বার্থে কাজ করেছিলেন এই নেতা।
গতকাল দুপুরে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার হাইলধর গ্রামের একটি মাঠে এ স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগ যৌথভাবে স্মরণসভার আয়োজন করে।
কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দ জামাল আহমদের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন আখতারুজ্জামান চৌধুরীর ছেলে ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, সাতকানিয়া-লোহাগড়া আসনের সাংসদ আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী, চন্দনাইশ আসনের সাংসদ নজরুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক সাংসদ হাসিনা মান্নান ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবুল কালাম চৌধুরী।
স্মরণসভায় প্রধান আলোচক ছিলেন আনোয়ারা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ মান্নান চৌধুরী ও কর্ণফুলী উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হায়দার আলী।
এর আগে আতারুজ্জামান চৌধুরীর কবরে শ্রদ্ধা জানান গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম। বিকেলে শ্রদ্ধা জানান আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী।