চতুর্থ আন্তর্জাতিক নগর ও আঞ্চলিক পরিকল্পনা সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ১০ মে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে
চতুর্থ আন্তর্জাতিক নগর ও আঞ্চলিক পরিকল্পনা সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ১০ মে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে

যাঁকেই বলি পাহাড় কাটবেন না, বলে, আপা শুধু একটু কাটব: রিজওয়ানা হাসান

অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘পাহাড় যেটুকু আছে, সেগুলোকে জাতীয় স্থান ঘোষণা দিয়ে সংরক্ষণের আওতায় আনতে হবে। যাঁকেই বলি পাহাড় কাটবেন না, বলে, আপা শুধু একটু কাটব। পাহাড় কাটা আর তা বন্ধ করার অভিযান টম অ্যান্ড জেরির খেলার মতো হয়ে গেছে।’

আজ শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে চতুর্থ আন্তর্জাতিক নগর ও আঞ্চলিক পরিকল্পনা সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে এ কথা বলেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানারসের আয়োজনে আগামী তিন দিন এ সম্মেলন চলবে। বিশ্বজুড়ে নগর, অঞ্চল এবং গ্রামীণ পরিকল্পনার বিভিন্ন ক্ষেত্রের সঙ্গে সম্পর্কিত পরিকল্পনাবিদ, পেশাজীবী, শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী ও গবেষকেরা এই সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন।

উদ্বোধনী বক্তব্যে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান নদী, জলাশয়, বন ও পরিবেশকে প্রাধান্য দিয়ে নগর-পরিকল্পনা সাজানোর ওপর জোর দেন। এর কারণ ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘ আমাদের আসলে সেই অর্থে বনাঞ্চল নেই। পার্বত্য অঞ্চলে কিছু ও লাঠিটিলায় অল্প বনাঞ্চল আছে। সুন্দরবন বলেন আর অন্যান্য বন বলেন, সব কটি কিন্তু ট্যুরিজমসহ নানা চাপে কাহিল অবস্থা।’

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, ‘চট্টগ্রামে গিয়ে এবার বললাম, শ্রমিককে গ্রেপ্তার করে আনবেন না। মালিকের নামে মামলা দেবেন। মালিককে গ্রেপ্তার করে আনবেন। পাহাড় কাটা কিছুটা কমেছে। কিন্তু কোনো মালিককে গ্রেপ্তারের খবর পেলাম না। তবে আমরা কিছু দৃষ্টান্ত রেখে দিয়ে যেতে চাই’। নগর-পরিকল্পনায় পরিকল্পনাবিদদের ক্ষমতায়নের ওপর জোর দেন তিনি।

চতুর্থ আন্তর্জাতিক নগর ও আঞ্চলিক পরিকল্পনা সম্মেলনে উদ্বোধনী অধিবেশনে অতিথিরা। ১০ মে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে

সম্মেলনে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান ভারসাম্যহীন জনসংখ্যা বিন্যাসকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে অভিহিত করেন। বড় শহরের জনঘনত্ব বিপুল আর ছোট শহরে জনঘনত্ব কম বলে মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, ‘সারা দেশে আঞ্চলিক সমতা নিশ্চিত করা দরকার’। প্রতিটি শহরের আকার ও প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী নগর পরিষেবা নির্ধারণ করার ওপর গুরুত্ব দেন উপদেষ্টা।

সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানারসের (বিআইপি) সভাপতি আদিল মোহাম্মদ খান বলেন, ন্যায্যতা ও সমতাভিত্তিক আঞ্চলিক উন্নয়ন অন্তর্বর্তী সরকারের এজেন্ডা হওয়া উচিত। গ্রামীণ এলাকাগুলো পরিকল্পনার আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

বিআইপির সাধারণ সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ মেহেদি হাসান সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. রেজাউল করিম এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব নজরুল ইসলাম।