সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে ব্র্যাক ব্যাংক ও আইডিসিওএলের প্রায় পৌনে ৭ কোটি ডলার অর্থায়ন

একটি সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে ব্র্যাক ব্যাংক ও আইডিসিওএলের অর্থায়ন চূড়ান্ত উপলক্ষে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ঢাকা, ৬ নভেম্বর
ছবি: ব্র্যাক ব্যাংকের সৌজন্যে

ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি এবং ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড (আইডিসিওএল) যৌথভাবে বাংলাদেশ চায়না রিনিউয়েবল এনার্জি কোম্পানি লিমিটেড (বিসিআরইসিএল) পরিচালিত একটি সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে। ৬৪ দশমিক ৫৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ওই প্রকল্পে মোট ৬ কোটি ৭০ লাখ ডলার মেয়াদি ঋণ অর্থায়ন সুবিধা সফলভাবে চূড়ান্ত হয়েছে।

এ উপলক্ষে গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এক উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। বিশেষ অতিথি ছিলেন দ্য ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটান অঞ্চলের অপারেশনস ম্যানেজার গেইল মার্টিন এবং বাংলাদেশে কর্মরত জার্মান রাষ্ট্রদূত রুডিগার লোটজ।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ও আইডিসিওএলের চেয়ারম্যান মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী। এ ছাড়া এতে আইডিসিওএলের নির্বাহী পরিচালক ও সিইও আলমগীর মোরশেদ, ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও তারেক রেফাত উল্লাহ খান, বিসিআরইসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কি ইউয়ে এবং অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে ব্র্যাক ব্যাংকের সিইও তারেক রেফাত উল্লাহ খান বলেন, ‘আইডিসিওএলের সঙ্গে যৌথভাবে আমরা এই প্রকল্পটিতে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছি, যা জাতীয় গ্রিডে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহ, কার্বন নিঃসরণ কমানো এবং দেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি রূপান্তরকে ত্বরান্বিত করবে।’ তিনি বলেন, এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের অর্থায়ন বড় মাপের টেকসই অবকাঠামো উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের সক্ষমতার একটি বাস্তব উদাহরণ। একটি মূল্যবোধভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্র্যাক ব্যাংক বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি রূপান্তরকে গতিশীল করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

আইডিসিওএলের সিইও আলমগীর মোরশেদ বলেন, ‘আইডিসিওএলে আমরা উদ্ভাবনী অর্থায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি রূপান্তরকে এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ব্র্যাক ব্যাংকের সঙ্গে যৌথ অর্থায়নে ৬৪ দশমিক ৫৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন এই সোলার পার্ক দেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি এবং কার্বন নিঃসরণ কমানোর ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক। একটি সবুজ ভবিষ্যতের পথে অগ্রযাত্রায় নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য আমরা বিসিআরইসিএলকে ধন্যবাদ জানাই।’

এই অর্থায়নের মধ্যে ২ কোটি ২০ লাখ ডলার দিয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি এবং বাকি ৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার দিয়েছে আইডিসিওএল, যা বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে প্রতিষ্ঠান দুটির দৃঢ় অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে।

পাবনায় অবস্থিত দেশের অন্যতম বড় এই সোলার প্ল্যান্ট ইতিমধ্যে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করেছে। এই অর্জন টেকসই প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি নির্ভরতা বাড়ানোর অগ্রযাত্রাকে আরও গতি দিয়েছে।

বাংলাদেশ সরকারের আওতাধীন নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড (এনডব্লিউপিজিসিএল) এবং চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি) একটি যৌথ উদ্যোগ বাংলাদেশ চায়না রিনিউয়েবল এনার্জি কোম্পানি লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি দেশের একাধিক সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট পরিচালনা করছে।

এই সহযোগিতা উদ্ভাবনী অর্থায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনে অগ্রগতি, পরিবেশগত স্থায়িত্ব বৃদ্ধি এবং জ্বালানি নিরাপত্তা জোরদারে ব্র্যাক ব্যাংক ও আইডিসিওএলের যৌথ প্রতিশ্রুতিকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরে।