
ভারতে মুসলিম, খ্রিষ্টানসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর ‘গণসহিংসতা’য় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশ। বড়দিন উদ্যাপনের সময় ভারতজুড়ে সংখ্যালঘুদের ওপর সংঘটিত নৃশংসতার তদন্ত করে তাঁদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
আজ রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এস এম মাহবুবুল আলম সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ভারতে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের এ অবস্থান তুলে ধরেন। তিনি এ সময় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পরিস্থিতি সম্পর্কে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের সাম্প্রতিক মন্তব্যকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে বর্ণনা করে তা প্রত্যাখ্যান করেন। একই সঙ্গে ভারতের বিভিন্ন মহলকে সংখ্যালঘু বিষয়ে বিভ্রান্তিকর বর্ণনা ছড়ানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়নের বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘গভীর উদ্বেগ’ জানানোর দুই দিন পর বাংলাদেশ এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাল। প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার নয়াদিল্লিতে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জয়সোয়াল বলেন, বাংলাদেশে হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধসহ সংখ্যালঘুদের ওপর উগ্রবাদীদের অব্যাহত সহিংসতা ভারতের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়। তিনি ময়মনসিংহে একজন হিন্দু যুবককে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা হবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
ভারতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার বিষয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘ভারতে মুসলিম, খ্রিষ্টানসহ বিভিন্ন সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত নৃশংস হত্যাকাণ্ড, গণপিটুনি, নির্বিচারে আটক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বাধার ঘটনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এ মাসে আপনি যেমন বলেছেন, ভারতের ওডিশায় একজন মুসলিম যুবক জুয়েল রানাকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনা ঘটে, বিহারে মোহাম্মদ আজহার হোসেনের নৃশংস হত্যাকাণ্ড, কেরালায় বাংলাদেশি সন্দেহে এক নিরীহ ব্যক্তির হত্যাকাণ্ড এবং বিভিন্ন স্থানে মুসলিম ও খ্রিষ্টানদের ওপর গণপিটুনি ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।’
ভারতে বড়দিন উদ্যাপনের বিভিন্ন আয়োজনে উগ্রপন্থী হিন্দুদের সহিংসতার প্রসঙ্গ টেনে এস এম মাহবুবুল আলম বলেন, ‘গত সপ্তাহে খ্রিষ্টানদের বড়দিন উদ্যাপন উপলক্ষে ভারতজুড়ে তাদের ওপর সংঘটিত গণসহিংসতার বিষয়েও বাংলাদেশ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন । এসব ঘটনাকে আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করি এবং আমরা ঘৃণাজনিত অপরাধ এবং লক্ষ্যভিত্তিক সহিংসতা হিসেবে দেখি। আমরা প্রত্যাশা করি, ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসব ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করবে এবং দোষীদের বিচারের আওতায় আনবে। আমরা আশা করি, প্রতিটি দেশেরই দায়িত্ব তার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে সুরক্ষা ও মর্যাদা দেওয়া এবং প্রতিটি দেশেরই তা পালন করা উচিত।’