টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান

নাগরিক সমাজের সরকারও তথ্য অধিকার আইন সংশোধন করছে না: ইফতেখারুজ্জামান

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, নাগরিক সমাজ থেকে আসা ব্যক্তিদের সিংহভাগ যে সরকারের দায়িত্বে, সুনির্দিষ্ট দাবি সত্ত্বেও সে সরকারের পক্ষ থেকে তথ্য অধিকার আইনে প্রয়োজনীয় সংস্কার করা হচ্ছে না।

ইফতেখারুজ্জামানের অভিযোগ, এক বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও বর্তমান সরকার তথ্য কমিশন গঠন করেনি। তিনি বলেন, ‘এ নিয়ে আমরা বিভিন্ন জায়গায় কথা বলছি; কিন্তু এটার ব্যাখ্যা পাইনি।’

‘আন্তর্জাতিক তথ্য জানার অধিকার দিবস’ উদ্‌যাপন উপলক্ষে ‘তথ্য অধিকার আইন: পরিপ্রেক্ষিত পর্যালোচনা’ শীর্ষক সেমিনারে ‘তথ্য অধিকার: স্বচ্ছতা, জবাবদিহি এবং দুর্নীতি দমন’ বিষয়ে আলোচনায় ইফতেখারুজ্জামান এ কথাগুলো বলেন।

আজ রোববার সকালে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এ সেমিনার আয়োজন করে তথ্য অধিকার ফোরাম। মিডিয়া রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভের (এমআরডিআই) নির্বাহী পরিচালক হাসিবুর রহমানের সঞ্চালনায় সেমিনারে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।

তথ্য অধিকার আইনের দুর্বলতা আছে উল্লেখ করে সেমিনারে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘আইনটি আমাদের নিজেদেরই করা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যেটি হয়েছে, সেটি কিন্তু শতভাগ আমাদের নয়।’

সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটা আইন চেয়েছেন বলে জানান ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘তার মানে এই না যে, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে আইনটাকে কার্যকর করে ফেলতে পারব। আমরা হচ্ছি চাহিদার সাইডটা। যারা সাপ্লাই সাইডে আছেন, তাদের ওপর বাস্তব দায়িত্ব সেটাকে বাস্তবায়ন করার।’

এক বছরেও তথ্য কমিশন গঠন না করায় ক্ষোভ জানান টিআইবির নির্বাহী পরিচালক। এটা একটা বিশ্বরেকর্ড বলে সমালোচনা করেন তিনি। এমন দৃষ্টান্ত কোথাও নেই বলেন তিনি।

তথ্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় সরকারের সদিচ্ছার অভাব থাকতে পারে উল্লেখ করে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আমার মনে হয়, সরকারের মধ্যে একধরনের আত্মতুষ্টি আছে যে আমরা তো ভুল করতে পারি না। আমাদের তো জবাবদিহি করার দরকার নেই। তা না হলে এ ধরনের ক্রিটিক্যাল এরিয়াগুলো কেন বাদ যাবে।’

অন্তর্বর্তী সরকার অনেক ভালো কাজ করেছে ও করছে বলেন ইফতেখারুজ্জামান। এর পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘আমাদের নৈতিক অবস্থান দুর্বল করে দিয়েছে। সেটার দায় তাদেরকেই নিতে হবে।’

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব (সংযুক্ত) মাহমুদুল হোসাইন খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক দাউদ মিয়া এবং জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেসকোর বাংলাদেশ প্রতিনিধি সুজান ভাইজ।

তথ্য অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনামের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ বাংলাদেশের উপপরিচালক রুহী নাজ।

সেমিনারে প্যানেল আলোচক ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ও সুশাসনের জন্য নাগরিকের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ, নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন এবং আইসোশ্যালের চেয়ারপারসন অনন্য রায়হান।