ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি মাহফুজা খানম মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
মাহফুজা খানম আজ মঙ্গলবার মারা যান। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।
মাহফুজা খানমের স্বামী সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ। ছেলে মাহবুব শফিক প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর মা আজ বেলা ১১টার দিকে শরীরচর্চার জন্য বের হয়েছিলেন। পথে অসুস্থ বোধ করেন। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আজ বাদ আসর ইন্দিরা রোডের বাসায় বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মাহফুজা খানমের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য আগামীকাল বুধবার তাঁর মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে। সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত শ্রদ্ধা জানানো যাবে। শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য দুপুর ১২টায় নেওয়া হবে ডাকসু ভবনে। বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা হবে। জানাজা শেষে তাঁকে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হবে।
মাহফুজা খানম জাতীয় শিশু–কিশোর সংগঠন কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের চেয়ারপারসন ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর উপদেষ্টা ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।
উদীচীর শোকবার্তার তথ্য অনুযায়ী, মাহফুজা খানম ১৯৪৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক, ১৯৬৭ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৬৬-৬৭ ডাকসু নির্বাচনে ছাত্র ইউনিয়ন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ভিপি নির্বাচিত হন মাহফুজা খানম। তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ছিলেন। ২০০৯ সালে ছিলেন বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক।
শোকবার্তা
সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ারা হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ এক শোক বিবৃতিতে ষাটের দশকের সামরিক স্বৈরশাসনবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা, শিক্ষাবিদ মাহফুজা খানমের মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেন। বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, অকুতোভয় সংগ্রামের একজন সহযাত্রী হিসেবে প্রয়াত মাহফুজা খানম দেশে সমাজ–সভ্যতা, সংস্কৃতির উন্নয়ন ও প্রগতির ধারায় নতুন প্রজন্ম গড়ে তোলার প্রত্যয়ে আমৃত্যু লড়েছেন। তাঁর প্রয়াণে দেশবাসী একজন বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী দেশপ্রেমিক সমাজকর্মী হারাল।
মাহফুজা খানমের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন ঐক্য ন্যাপের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এস এম এ সবুর ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ তারেক। শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি তাঁরা গভীর সমবেদনা জানান।
সংশোধনী: এই প্রতিবেদন প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১২ আগস্ট, ২০২৫ বিকেল ৩টা ৩৩ মিনিটে। সেখানে মাহফুজা খানমকে ডাকসুর একমাত্র নারী ভিপি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল। তথ্যটি সঠিক নয়। মাহফুজা খানমের আগে ডাকসুর নারী ভিপি ছিলেন জাহানারা আখতার। অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্য আমরা দুঃখপ্রকাশ করছি। তথ্যটি ২৭ আগস্ট, ২০২৫ প্রথম প্রহর ১২টা ৫৩ মিনিটে সংশোধন করা হল।