মাথায় হেলমেট ও বুকে বুলেট প্রুফ জ্যাকেট পরিয়ে মোহাম্মদ খুরশীদ আলমকে আদালতে আনা হয়। ২ নভেম্বর
মাথায় হেলমেট ও বুকে বুলেট প্রুফ জ্যাকেট পরিয়ে মোহাম্মদ খুরশীদ আলমকে আদালতে আনা হয়। ২ নভেম্বর

শেখ রেহানার বিরুদ্ধে করা প্লট দুর্নীতির মামলায় রাজউকের সদস্য খুরশীদ গ্রেপ্তার

পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের (ববি) বিরুদ্ধে করা পৃথক তিন মামলায় রাজউকের সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলমকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

আজ রোববার এসব মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন ঢাকার ৪ নম্বর বিশেষ জজ মো. রবিউল আলম। শুনানি শেষে এই তিন মামলায় আরও ছয়জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ৯ নভেম্বর ধার্য করেছেন আদালত।

এর আগে গত ২৯ অক্টোবর ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে করা তিন মামলায় খুরশীদ আলমকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

৩০ অক্টোবর দুদকের পক্ষ থেকে এই তিন মামলায় খুরশীদ আলমকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়। আজ তাঁর উপস্থিতিতে শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। সকাল ১০টার দিকে তাঁকে আদালতে এনে হাজতখানায় রাখা হয়। পরে বেলা পৌনে ১১টার দিকে মহানগর আদালতের ষষ্ঠ তলায় ওঠানো হয়। কিছুক্ষণ পর বিচারক আসেন এবং তিন মামলায় থাকা অভিযোগগুলো পড়ে শোনান। পরে আদালত তাঁর বক্তব্য জানতে চান। এ সময় খুরশীদ আলম নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেন।

খুরশীদ আলমের বক্তব্য শেষে বিচারক তাঁকে গ্রেপ্তার দেখান। এরপর তিন মামলার সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু করেন।

দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম জানান, আজ সাক্ষ্য দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (বেপজা সংযুক্ত) মোহাম্মদ ওসমান গনি, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মোটর ক্লিনার উজ্জল হোসেন, গাজীপুরের কালীগঞ্জের সাবেক সাবরেজিস্ট্রার জাহিদুর রহমান, গুলশানের সাবেক সাবরেজিস্ট্রার রাকিবুল ইসলাম, কর বিভাগের সহকারী আইনজীবী হানিফ দিহিদার ও রাজউকের অফিস সহকারী মো. আব্দুর রহীম।

পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে শেখ রেহানা ও তাঁর তিন ছেলে–মেয়ের বিরুদ্ধে করা পৃথক তিন মামলায় এখন পর্যন্ত ২৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াছি উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) কবির আল আসাদ, সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাস, সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মো. নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সদস্য মেজর (ইঞ্জিনিয়ার) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি–২) শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন।

শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে বরাদ্দ নেওয়া প্লটের বিষয়ে ২০২৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৬০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ছয়টি মামলায় গত ১০ মার্চ অভিযোগপত্রের অনুমোদন দেয় দুদক।