Thank you for trying Sticky AMP!!

দেশের বিদ্যুৎ, টেলিকম ও আর্থিক খাত লক্ষ্য করে সাইবার হামলা হচ্ছে

বাংলাদেশে সাইবার হামলা পরিস্থিতি নিয়ে বিজিডি ই-গভ সার্টের সংবাদ সম্মেলন

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ সাইবার আক্রমণের লক্ষ্য হয়ে উঠছে। বিশেষ করে দেশের বিদ্যুৎ, টেলিকম ও আর্থিক খাতকে লক্ষ্য করে এসব আক্রমণ করা হচ্ছে। কিছু রাষ্ট্রও এসব হামলার পৃষ্ঠপোষক বলে জানিয়েছে আইসিটি বিভাগ।

সাইবার হামলা নিয়ে আজ সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি ভবনে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের (আইসিটি) কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম (বিজিডি ই-গভ সার্ট) সংবাদ সম্মেলন করে। ‘বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে জাতীয় পর্যায়ে উদীয়মান সাইবার হুমকি’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে দেশের সাইবার হামলার ঝুঁকি সম্পর্কে জানানো হয়।

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ বলেন, ন্যাশনাল পাওয়ার গ্রিড, টেলিকম খাত ও আর্থিক খাত—এই তিন জায়গাতে বেশি আক্রমণ আসছে। করোনা মহামারির পর বৈশ্বিক আর্থিক মন্দার কারণে সাইবার অপরাধীরা খুবই সক্রিয়। কিছু রাষ্ট্রের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে সাইবার অপরাধ চলছে।

কোনো দেশের নাম উল্লেখ না করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক রাষ্ট্র আছে, যারা আমাদের ক্ষতি করতে চায়। এ ছাড়া সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সেটাকে কেন্দ্র করেও কোনো চক্র অপতৎপরতা চালাতে পারে। এ জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। টেলিকম ও বিদ্যুৎ খাতে যদি ক্ষতি করতে পারে, তাহলে রাষ্ট্রব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। এ কারণেই রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় যখন হামলা হয়, তখন এ দুটি খাতকে লক্ষ্য বানায়।’

জাতীয় ডেটা সেন্টারও আক্রমণের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমাদের ডেটা সেন্টারে প্রচুর আক্রমণ আসে। সেখানেও নিরাপত্তা দিতে হয়।’

সরকারি বিভিন্ন ওয়েবসাইটের নিরাপত্তাঝুঁকি সম্পর্কে জুনাইদ আহ্‌মেদ বলেন, সরকারের ৫২ হাজার সাইট আছে। প্রতিটিতে গাইডলাইন দেওয়া আছে এবং এসব দেখভালের জন্য সংস্থাগুলোর নিয়োগ করা ব্যক্তি আছেন। কিন্তু সংস্থাগুলো অনেক সময় খরচ করতে চায় না, কম গুরুত্বপূর্ণ ভেবে। প্রতিমন্ত্রী জানান, তাঁরা আবার সংস্থাগুলোকে নিজেদের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করতে জানাবেন। এ ছাড়া যেসব জায়গা আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হচ্ছে, তাদের নিয়মিত জানানো হচ্ছে, প্রয়োজনে বৈঠকও হচ্ছে।

বিজিডি ই-গভ সার্টের প্রকল্প পরিচালক তারেক এম বরকতউল্লাহ সাইবার আক্রমণের পরিস্থিতি নিয়ে একটি উপস্থাপনা তুলে ধরেন। তিনি জানান, তাঁদের পক্ষ থেকে ৭৫০টি সতর্কবার্তা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়েছে, যাতে তারা নিজেরা সুরক্ষিত থাকতে পারে। তিনি জানান, দেশের টেলিকম সেবাদাতারা ম্যালওয়্যারে আক্রান্ত।

বিশ্বে র‍্যানসমওয়্যার ট্রোজান আক্রমণ সবচেয়ে বেশি হচ্ছে যে ১০টি দেশে, তার মধ্যে সবার ওপরে রয়েছে বাংলাদেশ। এরপর আছে হাইতি, সুদান, তুর্কমিনিস্তান, ফিলিস্তিন, ইয়েমেন, তাজিকিস্তান, চীন, ইথিওপিয়া ও পাকিস্তান।

বাংলাদেশে যেসব সাইবার হুমকি পরিলক্ষিত হচ্ছে তার মধ্যে আছে ডি-ডস, ম্যালওয়্যার বটনেট, র‌্যানসামওয়্যার, ব্যাংকিং ট্রোজান, ইনফরমেশন স্টিলার ম্যালওয়্যার ও সাইবার এস্পিওনাজ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সরকারের যেসব গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা আছে, তাদের অডিট করে দেখা হচ্ছে তারা কোনো ধরনের সংক্রমণের শিকার হয়েছে কি না। সংস্থাগুলো যেন নিরাপদ থাকে, সেই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

বিজিডি ই-গভ সার্টের ডিজিটাল নিরাপত্তাবিষয়ক জ্যেষ্ঠ বিশেষজ্ঞ তৌহিদুর রহমান বলেন, অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন যথেষ্ট সুরক্ষিত নয়। এসব ফোন থেকে ম্যালওয়্যার ব্যাংকিং ও ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে নেয়।

আইসিটি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এন এম জিয়াউল আলমের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র, ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সির মহাপরিচালক মো. খায়রুল আমিন, সার্টের ইনসিডেন্ট হ্যান্ডলার মোহাম্মদ মাকসুদুল আলম।