ট্রেন
ট্রেন

কর্মবিরতি প্রত্যাহারে রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি সরকারের আহ্বান

কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে রেলের স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য রেলওয়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সরকার। গতকাল সোমবার এক গণবিজ্ঞপ্তিতে রেলপথ মন্ত্রণালয় এ আহ্বান জানিয়েছে।

এদিকে রেলওয়ের রানিং স্টাফরা বিভিন্ন দাবি আদায়ে সারা দেশে কর্মবিরতিতে গেলে গতকাল দিবাগত মধ্যরাতের পর রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

গত বুধবার চট্টগ্রামে পুরোনো রেলস্টেশনে সংবাদ সম্মেলন করে ২৭ জানুয়ারির মধ্যে দাবি মানার শর্ত দেয় রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন। অন্যথায় ২৮ জানুয়ারি থেকে রেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দেয় তারা।

মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন এবং আনুতোষিক সুবিধা দেওয়ার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন রানিং স্টাফরা। এই রানিং স্টাফরা হলেন গার্ড, ট্রেনের চালক (লোকোমাস্টার), সহকারী চালক ও টিকিট পরিদর্শক (টিটিই)। এ ধরনের কর্মী রয়েছেন প্রায় দুই হাজার। তাঁরা সাধারণত দীর্ঘ সময় ট্রেনে দায়িত্ব পালন করে থাকেন।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা রেজাউল করিম সিদ্দিকীর সই করা গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রানিং স্টাফদের কর্মবিরতি পালনের ঘোষণায় সারা দেশে রেল চলাচলে অচলাবস্থা ও চরম যাত্রী ভোগান্তির আশঙ্কা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ রেলওয়ে ও রেলপথ মন্ত্রণালয় তাদের দাবি-দাওয়া ও চাহিদা পূরণে যথেষ্ট আন্তরিক ও সর্বোচ্চ সচেষ্ট। ইতিমধ্যে রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে রানিং স্টাফদের দাবি-দাওয়াগুলো অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে পত্র যোগাযোগের পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় আলোচনাও অব্যাহত।

গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে ইতিমধ্যে রানিং অ্যালাউন্স ৭৫ থেকে ১০০ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে। এ ছাড়া মাইলেজ অ্যালাউন্স পাওয়ার জন্য সর্বনিম্ন ৮ ঘণ্টা ও ১০০ মাইল দূরত্বের শর্তও শিথিল করা হয়েছে।

গণবিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, রানিং স্টাফদের অন্যান্য দাবি আদায়ে রেলপথ মন্ত্রণালয় যথেষ্ট আন্তরিক ও সচেষ্ট রয়েছে। এ অবস্থায় পূর্বঘোষিত আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার করে রেলের স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য রেলওয়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানানো হচ্ছে।

দৈনিক আট ঘণ্টার বেশি কাজ করলে বেসিকের (মূল বেতন) হিসেবে বাড়তি অর্থ পেতেন রানিং স্টাফরা। এ ছাড়া অবসরের পর বেসিকের সঙ্গে এর ৭৫ শতাংশ অর্থ যোগ করে অবসরকালীন অর্থের হিসাব হতো। তবে ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর এই সুবিধা সীমিত করে অর্থ মন্ত্রণালয়। ওই সময়ের পর নতুন করে নিয়োগ পাওয়া কর্মীরা পুরোনোদের চেয়ে আরও কম সুবিধা পাবেন বলেও সরকার সিদ্ধান্ত নেয়। এর পর থেকেই নতুন ও পুরোনো রানিং স্টাফরা ব্রিটিশ আমল থেকে চালু এ সুবিধা পুরোপুরি ফিরিয়ে আনার দাবিতে আন্দোলন করছেন।

গতকাল রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ফাহিমুল ইসলামের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করার কথা ছিল, কিন্তু আন্দোলনরত কর্মীরা তাতে অংশ নেননি। সন্ধ্যায় কমলাপুর স্টেশনে রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আন্দোলনরত কর্মীদের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করেন, কিন্তু তাঁরা কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে অনড় থাকেন।