প্রতিটি পরিবারের গৃহস্থালি পণ্যের মধ্যে ফ্রিজ অন্যতম। ঘরের কোণের এই আধুনিক যন্ত্র নাগরিক জীবনকে করে দিয়েছে অনেক সহজ। প্রতিদিন বাজার করা বা রান্না করার ঝামেলা থেকে রেহাই মিলেছে ঘরে ফ্রিজ থাকার কারণে। উচ্চবিত্ত থেকে নিম্নবিত্তসহ ব্যাচেলরদের প্রাত্যহিক জীবনের আশীর্বাদ এই ফ্রিজ বা রেফ্রিজারেটর।
নতুন সংসার গোছানোর সময় প্রয়োজনীয় জিনিসের তালিকায় প্রথম দিকেই থাকে ফ্রিজ। তা ছাড়া ঘরের পুরোনো ফ্রিজটি বদলে কেউ কেউ একটু বড় কিংবা আধুনিক ফ্রিজ কিনতে চান। কারও বাসায় প্রয়োজন হয় একাধিক ফ্রিজ। কারণ যা–ই হোক, ফ্রিজ কেনার আগে কিছু বিষয় জানা থাকা ভালো।
ইলেক্ট্রো মার্ট লিমিটেডের ন্যাশনাল সেলস ম্যানেজার জুলহাক হোসাইন বলেন, ‘আসলে প্রতিটি পণ্যেরই আলাদা বৈশিষ্ট্য থাকে। যেমন আমাদের কনকা ব্র্যান্ডের ফ্রিজগুলোতে নানাবিধ বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে, যেগুলো বর্তমানে বাজারে থাকা ফ্রিজগুলোর চেয়ে একটু আলাদা। আমরা সব সময়ই চেষ্টা করছি সাধ্যের মধ্যে দেশের মানুষের কাছে ভালো মানের পণ্য পৌঁছে দিতে। সেই বিষয়গুলো মাথায় রেখেই আমাদের পণ্যে নতুন নতুন প্রযুক্তি যুক্ত করেছি।’
রেফ্রিজারেটর বা ফ্রিজ কেনার আগে বেশ কিছু জিনিসের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। প্রথমেই সচেতন হয়ে কিনলে পরে আর আফসোস থাকবে না। প্রথম যে জিনিসটি দেখতে হবে, তা হলো ফ্রিজের কমপ্রেসরের বিষয়ে জেনে–বুঝে নেওয়া। এটা ফ্রিজের প্রধান ইঞ্জিন। কমপ্রেসর যত উন্নত হবে, বুঝতে হবে ফ্রিজটি তত ভালো। ভালো মানের কমপ্রেসর আপনার বিদ্যুৎ খরচও বাঁচিয়ে দেবে। বাসায় পুরোনো যে ফ্রিজটি ব্যবহার করছেন বা নতুন যেটি কিনবেন সেটি বিদ্যুৎ–সাশ্রয়ী কি না, সেটা দেখার একটি উপায় হলো, ফ্রিজের গায়ে যদি একটি নির্দিষ্ট জায়গায় স্টার চিহ্ন দেওয়া থাকে, তাহলে বুঝতে হবে ফ্রিজটি বিদ্যুৎ-সাশ্রয়ী।
এখন ফ্রিজে যুক্ত থাকে ন্যানো হেলথকেয়ার টেকনোলজি। এই ছোট্ট জিনিসটি ফ্রিজে আপনি যে খাবারটি সংরক্ষণ করবেন, তা স্বাস্থ্যকর রাখতে সাহায্য করে। এই তথ্য চেক করতে ফ্রিজের গায়ে যুক্ত থাকা স্টিকার দেখে নিতে হবে। ন্যানো হেলথ টেকনোলজিযুক্ত হলে সেটা ফ্রিজের গায়েই লেখা থাকবে।
ফ্রিজ কেনার সময় নিতে হবে সেটির কপার কনডেন্সার। কপার কনডেন্সারযুক্ত ফ্রিজের কমপ্রেসরের সঙ্গে তামার তৈরি কুলিং সিস্টেম পাইপ থাকে। এটা ফ্রিজের বডির ভেতরে এবং পেছন দিকে থাকে। কপার কনডেন্সারযুক্ত ফ্রিজ বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে এবং অনেক টেকসই হয়। এটা থাকার ফলে ফ্রিজে মরিচা পড়ে না, গ্যাস লিকেজ হয় না আর ফ্রিজের ভেতরটা তাড়াতাড়ি ঠান্ডা হয়। ফ্রিজ কেনার আগে জেনে নিতে হবে সেটি ফ্রস্ট, নাকি নন–ফ্রস্ট। ফ্রিজের ভেতরে ও সংরক্ষিত খাবারে যদি বরফ জমে যায়, তখন সেটা ফ্রস্ট ফ্রিজ। অন্যদিকে যে ফ্রিজের ভেতরে ও সংরক্ষিত খাবারে বরফ জমে না, তাকে বলে নন–ফ্রস্ট।
যন্ত্রপাতির ক্ষেত্রে বর্তমান সময়কে বলা হচ্ছে ‘স্মার্ট যুগ’। ফ্রিজের ক্ষেত্রেও তাই। বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের স্মার্ট ফ্রিজ পাওয়া যায়। স্মার্ট ফ্রিজে অনেক ইনভার্টার প্রযুক্তি থাকে। এতে পাঁচটি মোড কাজ করে। একটিতে ওপরে ডিপ আর নিচে সাধারণ ফ্রিজ থাকে। বাসার বাইরে গেলে দীর্ঘ সময়ের জন্য অ্যানার্জি সেভিং মোড চালু করে রাখতে পারেন এই ফ্রিজে। আবার কিছু কিছু ফ্রিজে এখন অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল প্রযুক্তি থাকে। ফ্রিজ কেনার আগে একটু দেখে–শুনে কিনলে বাজারের ভালো ফ্রিজটির সেবাই ঘরে বসে পাবেন আপনি।
এবার জানা যাক দরদাম সম্পর্কে। বাজারে ওয়ালটনের নন–ফ্রস্ট ফ্রিজের দাম ২৬ হাজার ৪০০ থেকে শুরু করে ৯১ হাজার ৯৯০ টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া বিভিন্ন দামের সরাসরি ঠান্ডা হওয়া ফ্রিজও বাজারে পাওয়া যায়। ট্রান্সটেকের ১৯৬ লিটারের দাম ৩০ হাজার ৫০০ টাকা। ২৩০ লিটারের দাম ২৯ হাজার টাকা।
২৩০ লিটারের আরেকটি মডেলের দাম ৩৪ হাজার টাকা। ২৩৯ লিটারের দাম ৩৭ হাজার টাকা। ইলেক্ট্রো মার্ট লিমিটেডের ব্র্যান্ড কনকার বর্তমানে রয়েছে ৫০টির বেশি মডেলের ফ্রিজ। টপ মাউন্ট, বটম মাউন্ট, ডিপ ফ্রিজার, আইসক্রিম ফ্রিজার, আপরাইট ফ্রিজার, মিনি রেফ্রিজারেটর, সাইড বাই সাইড রেফ্রিজারেটর রয়েছে কনকার। দাম ২৬ হাজার থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত।