
তির ছুড়ে লক্ষ্য ভেদ করা সহজ নয়। সেটা ভার্চ্যুয়ালি হলেও। ভিআর দিয়ে তির ছুড়ছিল গাজীপুর বাগবাড়ির আবদুল্লাহ আল মামুন।
মোট পাঁচটি তির ছোড়ার সুযোগ প্রত্যেকের। মামুন লক্ষ্য ভেদ করতে পারল দুটি। আর একটি সাফল্য পেলেই ছিল পুরস্কার। তবে পুরস্কার না পেলেও তার আক্ষেপ নেই। ইতিমধ্যে অনেক বড় সাফল্য পেয়েছে লাবিব মেমোরিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের এই শিক্ষার্থী।
এসএসসিতে মামুন পেয়েছে জিপিএ-৫। তার মতো সফলদের নিয়ে আজ বুধবার দ্বিতীয় দিনের মতো সাভারের আশুলিয়ার ফ্যান্টাসি কিংডমে চলছে জিপিএ-৫ সংবর্ধনা।
‘স্বপ্ন দেখো জীবন গড়ো’ স্লোগান নিয়ে শিক্ষার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘শিখো’র পৃষ্ঠপোষকতায় সারা দেশের ৬৪টি জেলায় প্রথম আলোর আয়োজনে চলছে এসএসসি-সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা উৎসব।
ঢাকায় দুই দিনের উৎসবের শেষ দিন আজ বুধবার। ঢাকাসহ মানিকগঞ্জ ও গাজীপুর জেলার প্রায় ৯ হাজারের বেশি কৃতী শিক্ষার্থী আজকের উৎসবে অংশ নিতে অনলাইনে নাম নিবন্ধন করে।
গতকাল মঙ্গলবার প্রথম দিনের উৎসবেও প্রায় ৯ হাজার শিক্ষার্থী নাম নিবন্ধন করেছিল। এবার গত ১৭ আগস্ট জিপিএ-৫ সংবর্ধনা শুরু হয়েছিল চট্টগ্রাম থেকে। শেষ হবে ১৩ সেপ্টেম্বর। সারা দেশের প্রায় এক লাখ শিক্ষার্থী উৎসবে অংশ নেওয়ার জন্য অনলাইনে আগাম নাম নিবন্ধন করেছে।
গতকালের মতো আজও সকল নয়টা থেকে শিক্ষার্থী ও অনেকের অভিভাবক আসতে থাকেন ফ্যান্টাসি কিংডমে। প্রবেশপথের বাইরে বুথের সারি। সেখানে নিবন্ধন নম্বর দেখিয়ে শিক্ষার্থীরা সকালের নাশতা, ক্রেস্ট, উপহার, ভেতরে প্রবেশ, রাইড ও দুপুরের খাবারের কুপন সংগ্রহ করে। এরপর তারা ভেতরে প্রবেশ করে। মেতে ওঠে রাইডে চড়াসহ বিভিন্ন ধরনের মজার খেলায়।
সকালে বুথের সামনে থেকে কুপন সংগ্রহ করছিল টঙ্গীর সফিউদ্দিন সরকার একাডেমি অ্যান্ড কলেজের তিন সহপাঠী বদিউজজামান আসাদ, সাদিকুজ্জামান ও ইশরাক আল তাহা। স্কুলে তারা একসঙ্গে পড়লেও কলেজ আলাদা হয়ে গেছে।
ইশরাক বলল, প্রত্যেকের প্রাপ্ত নম্বরের ওপর ভিত্তি করে কলেজ নির্ধারিত হয়েছে। তারা ২৩ জনের একটি বড় দল এসেছে এই উৎসবে। প্রত্যেকে নিজেরদের মতো করে এখানে আসছে। তারপর সবাই একত্রে ভেতরে প্রবেশ করবে। তাদের ধারণা ছিল, প্রথম একটা ‘লেকচার সেশন’ থাকবে। তারপর ভেতরে প্রবেশ। কিন্তু এসে দেখছে, তেমন কিছু নেই। ইশরাকের ভাষায়, ‘পরিস্থিতি পুরাই আলাদা।’
গতকালের মতো আজও রোদেলা দিন। তবে খররোদ আনন্দ উপভোগে বিঘ্ন ঘটাতে পারছে না। সবার চোখমুখ হাসিতে সমুজ্জ্বল। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও বাড়ছে। রাইডগুলোর সামনে সারি লম্বা হচ্ছে। ভিড় বাড়ছে খেলার আয়োজনগুলোয়।
প্রথম আলোর বুথে চলছে ‘ভিআর গেমিং’। প্রথম আলো বন্ধুসভার স্টলে চলছে কুইজ ও ‘বেতাল ফ্লিপ’ খেলা। প্রথম আলো ট্রাস্টের স্টলে ঝুড়িতে ‘বল ফেলা’ খেলা। সফল হলেই নানান রকম পুরস্কার। খেলায় যে শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে, তাকে উৎসাহ দিতে শুভাকাঙ্ক্ষীর অভাব নেই। সফল হলেই হৈহুল্লোড়ে–উল্লাসে মাতছে তারা।
অনেকে আসছে প্রথমা প্রকাশনের স্টলে। উৎসব উপলক্ষে বইয়ে দেওয়া হচ্ছে শতকরা ২৫ থেকে ৩০ হারে কমিশন। এসব নিয়েই এখন কৃতী শিক্ষার্থীদের সময়টা কেটে যাচ্ছে দারুণ।
দুপুরের আহারের পর উৎসব মঞ্চে শুরু হবে জমকালো অনুষ্ঠান। আজকের অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য দেবেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য এম আর কবির, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের সহ–উপাচার্য নওজিয়া ইয়াসমিন, ঢাকা তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের পরিচালক বি এম মইনুল হোসেন ও পর্যটক মহুয়া রউফ।
নৃত্য পরিবেশন করবে সোহাগ ড্যান্স ট্রুপ। গান শোনাবেন শুভেন্দু দাস ও ইশান মজুমদার জুটি এবং পান্থ কানাই ও অনিমেষ রায় জুটি। তারকাকথনে অংশ নেবেন আফান নিশো ও মেহজাবীন চৌধুরী। শেষে থাকবে ব্যান্ড দল বেঙল সিম্ফোনি (ইমন চৌধুরী) পরিবেশনা।
আয়োজনটি পাওয়ার্ড বাই কনকা-গ্রি। সহযোগিতায় কনকর্ড গ্রুপ, ফ্রেশ, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, কোয়ালিটি গ্রুপ, প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি, অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ শাখা ক্যাম্পাস, আকিজ টেলিকম, আম্বার আইটি, এটিএন বাংলা ও প্রথম আলো বন্ধুসভা।