দেশের নির্মাণ খাত এখন শুধু গতানুগতিক আবাসন নয়, বরং আন্তর্জাতিক মানের বাণিজ্যিক স্থাপনা তৈরির দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। এ ধারায় এগিয়ে যাচ্ছে শান্তা হোল্ডিংস, তারা শুরু থেকেই আবাসিক ও বাণিজ্যিক—উভয় ধরনের স্থাপনা নির্মাণে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। একসময় মতিঝিল ও বনানীকেন্দ্রিক থাকা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অফিস এখন ঢাকার নতুন বাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র তেজগাঁওয়ের দিকে ঝুঁকছে। আর এই স্থানান্তরের নেপথ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে শান্তার আধুনিক ও মানসম্পন্ন বাণিজ্যিক ভবনগুলো।
নির্মাতা হিসেবে লক্ষ্য নির্ধারণ করে শান্তা শুরু থেকেই দুই ধরনের ভবন নির্মাণ করছে। বিক্রির উদ্দেশ্যে নির্মিত শান্তার প্রথম বাণিজ্যিক স্থাপনা হলো শান্তা ওয়েস্টার্ন টাওয়ার।
সময়ের পরিক্রমায় চিরচেনা শিল্প এলাকা তেজগাঁও পরিবর্তিত হয়ে গেছে বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে। এ পরিবর্তনের অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে শান্তা—তেজগাঁও এলাকার প্রথম আন্তর্জাতিক মানের বাণিজ্যিক ভবন শান্তা ওয়েস্টার্ন টাওয়ার নির্মাণের মাধ্যমে। দৃষ্টিনন্দন ও সুউচ্চ বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণের জন্য প্রয়োজন বড় আকারের জমি, যা তেজগাঁওয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে। দেশের আধুনিক বাণিজ্যিক কেন্দ্রের মতো তেজগাঁওয়ের কেন্দ্রস্থলে দাঁড়িয়ে পরিষ্কার—ঢাকার বাণিজ্যিক ভবিষ্যৎ যেদিকে এগোচ্ছে, তার পথরেখায় শান্তা হোল্ডিংসের অবদান স্পষ্ট ও শক্তিশালী।
এগোচ্ছে, তার পথরেখায় শান্তা হোল্ডিংসের অবদান স্পষ্ট ও শক্তিশালী।শিহাব আহমেদ প্রধান বিক্রয় কর্মকর্তা শান্তা হোল্ডিংস
ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর কেন্দ্র স্থানান্তরের কারণ হিসেবে তেজগাঁওয়ের ভৌগোলিক ও অবকাঠামোগত সুবিধাগুলো তুলে ধরেন এই আবাসন নির্মাতা কোম্পানির প্রধান বিক্রয় কর্মকর্তা শিহাব আহমেদ।
বহুমাত্রিক সড়ক: এখানকার রাস্তাগুলো ৬০ ফুট প্রশস্ত বহুমাত্রিক হওয়ায় সব সড়কে সহজে যাতায়াত সম্ভব। শহরের যেকোনো প্রান্ত থেকে এখানে যোগাযোগের অনেক মাধ্যম রয়েছে—সড়কপথের পাশাপাশি হাতিরঝিলে ওয়াটার ট্যাক্সি ও মেট্রোরেল ও গণপরিবহন পরিষেবা বিদ্যমান। এ ছাড়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে সহজ করে দিয়েছে এ এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ।
উপযোগী অবকাঠামো: এই এলাকায় ফায়ার স্টেশন ও জ্বালানি স্টেশন, হাসপাতাল এবং হাঁটার দূরত্বে কাঁচাবাজারের মতো নাগরিক সুবিধা রয়েছে।
একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সফলতার মূলে থাকে তার কর্মপরিবেশ। এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি বিবেচনা করেই শান্তা হোল্ডিংস তাদের বাণিজ্যিক স্থাপনাগুলো তৈরি করছে। কারণ, মানসম্মত কাজের জায়গা কর্মীদের উৎসাহ তৈরি করে এবং ভালো পণ্য বা সেবা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। শান্তার বাণিজ্যিক ভবনে যেসব বিষয় নিশ্চিত করা হয়:
ভূমিকম্প-সহনীয়: ভবনের সৌন্দর্য এবং আধুনিক নির্মাণশৈলী আন্তর্জাতিক মানকে প্রতিফলিত করে। তবে ভবনের স্ট্রাকচারে মনোযোগ দেওয়া হয় সর্বোচ্চ। বিএনবিসি অনুসরণ করায় ভবনগুলো মানসম্মত ও ভূমিকম্প–সহনীয় হয়। দেশ-বিদেশের একাধিক পরামর্শকের নির্দেশনায় নির্মিত এই ভবনগুলো তাই কাঠামোগত দিক থেকে সর্বোচ্চ মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। ভবনে বড় আকারের ফ্লোর এবং কলামবিহীন ডিজাইন হওয়ায় অফিসগুলো স্বাচ্ছন্দ্যে তাদের ইন্টেরিয়র ডিজাইন করতে পারে, যা কর্মীদের কাজ করার এক উন্নত পরিবেশ করে দেয়।
টেকসই নির্মাণ: ভবনগুলোয় আন্তর্জাতিক মানের ডাবল গ্লেজড ইউনিটাইজড গ্লাস ব্যবহার করে হয়েছে, যা তাপ ও শব্দনিরোধক।
শান্তার বাণিজ্যিক স্থাপনাগুলো কেবল কাঠামোগতভাবেই মজবুত নয়, বরং আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে কাজের অভিজ্ঞতাকে আরও উন্নত করেছে। এ ছাড়া জাপানের মতো সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার উচ্চ ভবনের নকশা পদ্ধতির অনুসরণে বাতাসের পরীক্ষা করেই শান্তা উঁচু ভবনের নকশা তৈরি করে, যা বৈরী পরিবেশে ভবনের স্থিতিস্থাপকতা নিশ্চিত করে। শান্তা হোল্ডিংসের প্রধান বিক্রয় কর্মকর্তা শিহাব আহমেদ প্রথম আলোকে জানান, ‘আমরা কমপ্লায়েন্স অনুসরণ করে গুণগতভাবে ভালো মানের ভবন তৈরি করে আসছি। এ কারণে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো আমাদের স্থাপনায় আস্থা রাখছে।’
শান্তার স্থাপনায় অফিস করা কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান: এইচএসবিসি, জিই, ইউনিলিভার, রবি, লিভাইস, ম্যারিকো, সুমিতোমো, জারার ও সিনজেনটার মতো বিশ্ববিখ্যাত বহুজাতিক কোম্পানিগুলো। সব বৈধ অনুমোদন ও কোড অনুযায়ী ভবনের মান কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণের পর তাদের অফিস স্থাপন করেছে।
শিহাব আহমেদ আরও জানান, ইতিমধ্যে ছয়টি প্রকল্প হস্তান্তর করা হয়েছে এবং বর্তমানে ৪টি চলমান। আরও ৬টি প্রকল্প শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে। দেশি কোম্পানির জন্যও এমন ভবন ব্যবহারে সুযোগ তৈরি হচ্ছে। বিনিয়োগকারীদের জন্য ভাড়া নিশ্চিত করার ব্যবস্থাও শান্তা হোল্ডিংস করে দিচ্ছে, যেখানে অফিস চালুর আগেই ভাড়ার দিয়ে দেওয়া হয়। শান্তার বাণিজ্যিক স্থাপনাগুলো নিজেদের প্রতিষ্ঠা করেছে।