রাজধানীর বেইলি রোডে বাংলাদেশ গার্ল গাইডস অ্যাসোসিয়েশন–সংলগ্ন সামাজিক শিক্ষাকেন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বিষয়ে হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। সরকারপক্ষের করা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) মঞ্জুর করে আজ বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর ফলে আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অ্যাসোসিয়েশনের অভ্যন্তরে অবস্থিত বিদ্যালয়টি আগের জায়গায় থেকেই কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ওই বিদ্যালয়টি অন্যত্র স্থানান্তরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেওয়া দুটি স্মারক হাইকোর্ট অবৈধ ঘোষণা করেছিলেন।
আইনজীবী সূত্র জানায়, ২০০৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় চিঠিতে (স্মারক) সামাজিক শিক্ষাকেন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি অন্য ওয়ার্ডের সঙ্গে একীভূত করার আদেশ বাতিল করা হয়। বলা হয়, বিদ্যালয়টি ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের একমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হওয়ায় ওই ওয়ার্ডের জনসাধারণের আবেদন ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সুপারিশ অনুযায়ী বিদ্যালয়টি বর্তমান স্থানে চালু থাকবে। এর আগে ২০০২ সালের ২৪ জুলাই অ্যাসোসিয়েশন প্রাঙ্গণ থেকে ওই বিদ্যালয়টি স্থানান্তর বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগের দেওয়া চিঠিতে রমনার পার্শ্ববর্তী নিধুস্মৃতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সঙ্গে স্কুলটিকে একীভূত করার কথা বলা হয়। ২০০৮ সালের ১৮ মে মন্ত্রণালয়ের অপর স্মারকে বলা হয়, বিদ্যালয়টি বর্তমানে একটি সরকারি স্থাপনা এবং এর ভূমি, ভবন ইত্যাদিও সরকারি সম্পত্তি। রমনা থানার বিদ্যালয়টি স্থানান্তর বা এ বিদ্যালয়ের জায়গা ও ভবন খালি করে অন্য কোনো সংগঠনের আওতায় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
ওই চিঠির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৮ সালে বাংলাদেশ গার্ল গাইডস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে রিট করা হলে হাইকোর্ট প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রুল ও স্থগিতাদেশ দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ২০ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুল মঞ্জুর (অ্যাবসোলিউট) করে রায় দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে সরকারপক্ষ লিভ টু আপিল করে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা। সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান। গার্ল গাইডসের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুনসুরুল হক চৌধুরী ও মো. সারওয়ার হোসেন।
মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১৯৬২ সালে গার্ল গাইড বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করলেও ১৯৭৩ সালে অন্যান্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সঙ্গে এই বিদ্যালয়টিও সরকারি করা হয়। তখন বিদ্যালয়টি অধিগ্রহণ করা হয়। তখন থেকেই সেটি প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের অধীনে পরিচালিত হয়ে আসছে।
আরও পড়ুন