'সানজুর ছবি দেইখা মনরে বুঝ দিই'

সাজ্জাদের ছবি হাতে মা রাশেদা বেগম l ছবি: প্রথম আলো
সাজ্জাদের ছবি হাতে মা রাশেদা বেগম l ছবি: প্রথম আলো

‘আমার আদরের পোলা সানজুরে হারাইছি দুই বছর হইয়া গেল। ওর তো কোনো দোষ ছিল না। বোমা আমার সব স্বপ্ন মাটি কইরা দিল। দুই বছর ধইরা সানজুর ছবি দেইখা মনরে বুঝ দিই।’

কথাগুলো পুরান ঢাকার হোসেনি দালানে বোমা হামলায় নিহত কেরানীগঞ্জের স্কুলছাত্র সাজ্জাদ হোসেন ওরফে সানজুর মা রাশেদা বেগমের।

২০১৫ সালের ২৩ অক্টোবর হোসেনি দালানে বোমা হামলায় সাজ্জাদ হোসেনসহদুজন নিহত হয়। আহত হয় শতাধিক মানুষ। সাজ্জাদ কেরানীগঞ্জের চড়াইল নুরুল হক উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

গতকাল শনিবার পুরান ঢাকার বাবুবাজার এলাকার বাড়িতে কথা হয় সাজ্জাদের মা রাশেদা বেগমের সঙ্গে। এ সময় তাঁর পাশে ছিলেন সাজ্জাদের ভাবি সুমি আক্তার।

রাশেদা বেগম বলেন, ‘কাল (আজ) আশুরা। আমার পোলার মৃত্যুর দুই বছর পূর্ণ অইব। এ পর্যন্তÍসরকারের পক্ষ থেকে আমাদের কেউ খোঁজখবর নিতে আসেনি।’ রাশেদা বেগম আরও বলেন, ‘যারা আমার পোলারে মারল, তাগো বিচার চাই। দুই বছর হইয়া গেল, আমার পোলারে মারার বিচার পাইলাম না।’

সাজ্জাদের পরিবারের সদস্যরা সাজ্জাদ হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার কার্যক্রম শেষ করে প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি দেওয়ার দাবি জানান।

সাজ্জাদের বড় ভাই মো. রাশেদ বলেন, ‘বোমা হামলায় আহত হয় আমার স্ত্রী সুমি বেগম, মেয়ে স্নেহা (১১), ছেলে শিহাব (৫) ও খালা আয়েশা বগম (৪৮)। আমার স্ত্রী সুমি ও খালা আয়েশা বেগম প্রায়ই অসুস্থ¯হয়ে পড়েন। সুমির পায়ে এখনো স্প্লিন্টার রয়ে গেছে। মাঝে-মধ্যে হাঁটতে পারে না। আমি যত টাকা বেতন পাই, তাতে আমার সংসারই চলে না। তাদের চিকিৎসা করব কী দিয়ে।’

সুমি আক্তার বলেন, তাঁর ডান পায়ের চারটি স্থানে বোমার ক্ষত আছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি অস্ত্রোপচার করা হয়। তাঁর পা থেকে স্প্লিন্টার বের করতে আরও অস্ত্রোপচার দরকার। কিন্তু টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না।