
একদিন যাঁরা ছিলেন শিক্ষার্থী, তাঁদের অনেকেই এখন শিক্ষক। তবে প্রিয় শিক্ষকদের কাছে পেয়ে তাঁরা যেন ফিরে গেলেন সেই শ্রেণিকক্ষে বসে পাঠ গ্রহণের দিনগুলোতে। আর প্রবীণ শিক্ষকেরাও আনন্দে আপ্লুত হলেন পুরোনো দিনের শিক্ষার্থীদের সান্নিধ্য আর সশ্রদ্ধ ভালোবাসায়।
গতকাল শুক্রবার ছুটির দিনের সন্ধ্যায় শিক্ষক ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের এই প্রীতিময় আয়োজনটি সম্পন্ন হলো ধানমন্ডির ফরেস্ট লাউঞ্জ নামের একটি রেস্তোরাঁয়। উপলক্ষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ও একই বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ারুল হকের শিক্ষকতার ৫০ বছর পূর্তি। দীর্ঘ অর্ধশতাব্দীব্যাপী জ্ঞানের আলো বিতরণ করে তাঁরা যে অজস্র শিক্ষার্থীর জীবন আলোকিত করেছেন, তেমন কিছু প্রাক্তন শিক্ষার্থী তাঁদের প্রিয় এই দুই শিক্ষকের সংবর্ধনার আয়োজন করেছিলেন।
অনেকটাই অনাড়ম্বর ঘরোয়া পরিবেশ ছিল অনুষ্ঠানের। তবে হৃদয়াবেগে ছিল প্রাণবন্ত, আন্তরিকতায় উষ্ণ। প্রথমেই সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ও আনোয়ারুল হককে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। তাঁদের অভিবাদন জানিয়ে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ও সংবর্ধনা কমিটির আহ্বায়ক গৌরাঙ্গ মোহান্ত।
সংবর্ধনা কমিটির সদস্যসচিব বিইউবিটির ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক এস এম আশরাফুল আলম জানান, গত বছরের আগস্ট মাসে শিক্ষকতার ৫০ বছর পূর্ণ করেছেন অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ও অধ্যাপক আনোয়ারুল হক। সে সময়ই এ উপলক্ষে তাঁরা সংবর্ধনা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে তা সম্ভব হয়নি। একটু বিলম্বে হলেও তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এই অনুষ্ঠানটি করা হয়েছে। এ উপলক্ষে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের লেখা এবং এই দুই অধ্যাপকের কিছু নির্বাচিত লেখা নিয়ে ‘ফিফটি ইয়ার্স অব গ্লোরিয়াস টিচিং: এস এম আই অ্যান্ড এস এ এইচ’ নামে একটি গ্রন্থ প্রকাশ করা হয়েছে। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিইউবিটির একই বিভাগের প্রভাষক সাঈদা হক।
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষকতা–জীবনের পঞ্চাশ বছর অতিক্রম করা গৌরবের। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সংবর্ধনা পাওয়া খুবই আনন্দজনক।’ শিক্ষকতা–জীবনের স্মৃতিচারণা করে সৈয়দ আনোয়ারুল হক বলেন, শিক্ষকদের প্রকাশ্য রাজনৈতিক পরিচয় থাকা উচিত নয়। একজন শিক্ষকের নিজের পেশার প্রতি সততা, নিষ্ঠা ও দায়বদ্ধতা থাকা প্রয়োজন।
সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের জন্মদিন আজ ১৮ জানুয়ারি রোববার। এ উপলক্ষে এক দিন আগেই শিক্ষার্থীরা কেক কেটে তাঁর জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।