
ঢাকার মিরপুর ১১ নম্বর এলাকার বাসিন্দা নাজমা বেগম বলেন, হঠাৎ পুরো বাসা যখন দুলছিল, তখন নাতনিকে বুকে জড়িয়ে এককোনায় দাঁড়িয়েছিলেন। অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে পড়ে গিয়েছিলেন।
যাত্রাবাড়ীর নবীনগর এলাকার বাসিন্দা শারমিন আক্তার বলেন, ‘এভাবে ভবন দুলতে আগে কখনো দেখিনি। সন্তানদের নিয়ে দৌড়ে নিচে নেমেছি।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখা যায়, ভূমিকম্পে অনেকে বাসার দেয়াল ফেটে যাওয়ার ভিডিও শেয়ার করেছেন। আসবাবপত্র ছড়িয়ে–ছিটিয়ে রয়েছে—এমন ছবিও অনেকে শেয়ার করেছেন। মিরপুর, ধানমন্ডি, গুলশান, বনানী, উত্তরা, যাত্রাবাড়ী, পুরান ঢাকাসহ প্রায় সব এলাকাতেই কম্পন অনুভূত হয়েছে।
আজ শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে এই ভূমিকম্প হয়। বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৭। এর উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর মাধবদী।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) বলছে, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির তীব্রতা ছিল ৫ দশমিক ৫। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল নরসিংদী।
শ্যামলীর বাসিন্দা ওয়াহিদ খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এতটা তীব্র ভূমিকম্প জীবনে অনুভব করিনি। মনে হলো মাথার ওপর যেন কিছু একটা ধসে পড়তে যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘বাচ্চাকে কোলে নিয়েই দৌড়েছি। নিচে নামার সময় শুধু একটাই ভয়—সিঁড়িই না ভেঙে পড়ে!’
ভূমিকম্পের সময় আবাসিক ভবন, অফিস, বাণিজ্যকেন্দ্র—সব জায়গায় মানুষকে দ্রুত ভবন ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসতে দেখা যায়। অনেকে জানান, সিঁড়ি বেয়ে নামার সময় তাঁদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়।
কম্পনের পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঢাকাবাসী তাঁদের অভিজ্ঞতা জানাতে থাকেন। কেউ লিখেছেন, ‘এভাবে ঢাকা কখনো কাঁপেনি।’ আবার কেউ বলেন, ‘মনে হলো পুরো বিল্ডিং দুলে যাচ্ছে।’
অনেকেই তাদের মুঠোফোনে ধারণ করা ভিডিও পোস্ট করেছেন, যেখানে ভবনের জানালা-দরজা কেঁপে ওঠার শব্দ স্পষ্ট শোনা যায়।