
রাজধানীর গুলশান-২ নম্বরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ স্মৃতি পার্ক উদ্বোধন করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। সোমবার দুপুরে পার্কটির উদ্বোধন করেন ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। ৩ দশমিক ৩৩ একর আয়তনের এ পার্ক নির্মাণে প্রায় সাড়ে ৮ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, পার্কটিতে দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন গাছগাছালি। কোনোটিতে ফল ধরেছে, কোনোটিতে ফুল ফুটেছে। তাতে বসছে মৌমাছি, প্রজাপতিসহ নানান কীটপতঙ্গ। সারি সারি গাছের পাশে দুটো হাঁটাপথ। একটি পথ তৈরি করা হয়েছে ছোট ছোট মসৃণ পাথর বিছিয়ে। অন্যটি কংক্রিটের তৈরি ব্লকে। পরপর বসানো ব্লকগুলোর মাঝে ফাঁকা জায়গা। এর ফাঁক গলে জন্মাচ্ছে সবুজ ঘাস। পুরো পার্ক যেন সবুজে আচ্ছাদিত।
ঢাকা উত্তর সিটির কর্মকর্তারা জানান, আগের গাছগুলো কাটা হয়নি; বরং নতুন করে লাগানো হয়েছে কয়েক শ গাছ। সবই দেশি প্রজাতির বিভিন্ন ঔষধি, বনজ ও ফলদ গাছ। এগুলোর মধ্যে রয়েছে নিম, হরিতকী, বহেরা, পারিজাত, কাঞ্চন, ডুমুর, হিজল, করচ, পলাশ, শিমুল, ছাতিম, মহুয়া ও অর্জুনগাছ।
পার্কের উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে শিশু-কিশোরদের খেলার জায়গা রাখা হয়েছে। প্রথমটি দুই-তিন বছর বয়সী শিশুদের। দ্বিতীয়টিতে খেলতে পারবে আরেকটু বড় শিশুরা। এ দুটি জায়গায় রয়েছে স্লাইড, দোলনাসহ খেলার নানান উপকরণ। পূর্ব পাশের সীমানায় থাকা জায়গাটি কিছুটা ঢালু। সেখানে কয়েক ধাপে সিঁড়ির মতো করে বসার জায়গা বানানো হয়েছে।
পার্কের মাঝের জায়গায় রয়েছে কিছু বড় গাছ। সেগুলো ঘিরে খনন করা হয়েছে বড় নালা। অংশটি দেখতে অনেকটা দ্বীপের মতো। অন্য সব নালার মতো ওই নালা কংক্রিট দিয়ে ঢালাই করে তৈরি করা হয়নি। পানিনিষ্কাশনের সুবিধার্থে নালাটি এভাবে তৈরি করা হয়েছে। নালার পাড়ে রোপণ করা হয়েছে আকন্দ, কেয়া, বন তেজপাতার মতো গাছ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা মুখে বলি আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি। আর সঙ্গে সঙ্গে আবার জায়গাও দখল করি।’
আতিকুল ইসলাম হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘যারা মাঠ, ফুটপাত ও খালের পাড়ে অবৈধভাবে দখল করেছেন, নিজেরা দখল সরিয়ে নিন। নইলে বুলডোজার যখন যাবে, তখন আর সীমানা মাপা হবে না; কতখানি দখল করেছেন আর কতখানি বৈধ জায়গা।’
মেয়র আরও বলেন, মহান স্বাধীনতার অন্যতম সংগঠক শহীদ তাজউদ্দীন আহমদের নামে পার্কটি নামকরণ করতে পেরে ডিএনসিসি কৃতার্থ। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস, জাতীয় চার নেতার ইতিহাস সবাইকে জানতে হবে। শহীদ তাজউদ্দীন আহমদের স্মৃতি রক্ষার্থে এই পার্ক ভূমিকা রাখবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন, সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহ, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা, ঢাকা উত্তর সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা প্রমুখ।