রাজধানীর গুলশানে নগর ভবনে ডিএনসিসির সপ্তম করপোরেশন সভা। ২৫ জুন, ২০২৫
রাজধানীর গুলশানে নগর ভবনে ডিএনসিসির সপ্তম করপোরেশন সভা। ২৫ জুন, ২০২৫

ঢাকা উত্তর সিটিতে ৬ হাজার ৬৯ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৬ হাজার ৬৯ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন করা হয়েছে। আজ বুধবার রাজধানীর গুলশানে নগর ভবনে ডিএনসিসির সপ্তম করপোরেশন সভায় (বোর্ড সভা) এ বাজেট অনুমোদন করা হয়।

অনুমোদিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৬৩৬ কোটি টাকা। যা মোট আয়ের ৬০ শতাংশের সমপরিমাণ। এর মধ্যে বিভিন্ন কর ও রেইটস, ট্রেড লাইসেন্স ও অন্যান্য লাইসেন্সের কর বাবদ ৩ হাজার ২১২ কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ভাড়া, সুদ, মুনাফাসহ অন্যান্য রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪২৪ কোটি টাকা।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের তুলনায় এবার ঢাকা উত্তর সিটির হাতে থাকা অর্থের পরিমাণ (প্রারম্ভিক স্থিতি) ৩৮৮ কোটি টাকা কম রয়েছে। সর্বশেষ ২০২৪-২৫ অর্থবছরে হাতে থাকা অর্থের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা। কিন্তু ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য সিটি করপোরেশনের হাতে রয়েছে ৮৫০ কোটি টাকা।

চলতি অর্থবছরে ঢাকা উত্তর সিটিতে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৩১ কোটি টাকা। কিন্তু আয় করা গেছে ১ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা। আদায় কম হয়েছে ৪৫৭ কোটি টাকা।

প্রস্তাবিত বাজেটের প্রায় ৭৬ শতাংশ, অর্থাৎ ৪ হাজার ৬২৪ কোটি টাকা উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সড়ক ও অবকাঠামো উন্নয়নে। এ খাতে ২ হাজার ৩২ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। যা মোট বাজেটের ৩৩ শতাংশ।

বাজেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা খাতে। এ বছর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ৪৩৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। যা মোট বাজেটের ৮ শতাংশ। আর মশা নিয়ন্ত্রণ কাজের জন্য পৌনে ১৮৭ কোটি টাকা টাকা, মোট বাজেটের ৩ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ ছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও পারিশ্রমিক বাবদ ২৫৭ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

২০২৫-২০২৬ অর্থ বছরের হোল্ডিং ট্যাক্স, পরিচ্ছন্নতা, লাইটিং ও স্বাস্থ্য খাত থেকে মোট রাজস্ব আয়ের ৪৫ শতাংশ আদায়ের পরিকল্পনা রয়েছে। এ ছাড়া সম্পত্তি হস্তান্তর খাত থেকে ১ হাজার ৮০ কোটি টাকা, অর্থাৎ প্রায় ৩০ শতাংশ আয়ের প্রাক্কলন করা হয়েছে। অবশিষ্ট অর্থ সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতা ও অনুদানের মাধ্যমে সংগ্রহের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

সভায় ঢাকা উত্তর সিটির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, রাজস্ব আদায়ের উচ্চ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করাটা নিঃসন্দেহে একটি চ্যালেঞ্জ হবে। তবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন প্রস্তুত। ব্যয়ের ক্ষেত্রে নতুন সৃষ্ট ১৮টি ওয়ার্ডের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি।

বোর্ড সভায় ঢাকা উত্তর সিটির ৫৪টি ওয়ার্ডের ‘ওয়ার্ড সচিব’ পদের নাম পরিবর্তন করে ‘ওয়ার্ড সুপারভাইজার’, ‘ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর’ অথবা ‘ওয়ার্ড অর্গানাইজার’ নামকরণের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য পাঠানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।