
শিল্প-সংস্কৃতি, সংগীতচর্চার ক্ষেত্র ও গণমাধ্যমের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদের সভাপতি মফিদুল হক ও নির্বাহী সভাপতি বুলবুল ইসলাম। আজ সোমবার দেওয়া বিবৃতিতে তাঁরা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেশের নানা স্থানে শিল্প-সংস্কৃতি ও সংগীতচর্চার ক্ষেত্রগুলোতে বিভিন্ন অজুহাতে যেসব হামলা ও ধ্বংসযজ্ঞ পরিচালিত হয়েছে, তা তাঁদের বেদনাহত, উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ করেছে। এর ন্যক্কারজনক প্রকাশ ঘটেছে ১৮ ডিসেম্বর মধ্যরাতে তথাকথিত মব সন্ত্রাস বাহিনীর পরিকল্পিতভাবে প্রথম আলো, ডেইলি স্টার পত্রিকা কার্যালয় এবং ছায়ানট সংস্কৃতি ভবন আক্রমণ, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায়।
একনাগাড়ে সংগীত, শিল্পচর্চা ও উদার অসাম্প্রদায়িক চেতনাবহ প্রতিষ্ঠানের ওপর এমন আক্রমণের মুখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা এবং আক্রমণ প্রতিরোধে ব্যর্থতা উদ্বেগের সৃষ্টি করে বলে বিবৃতিতে বলা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলার ঐতিহ্যবাহী বাউল সম্প্রদায়ের ওপর আঘাত, ঠাকুরগাঁওয়ে মাজারের কবর ভাঙচুর, ভালুকায় দীপু চন্দ্র দাসের পৈশাচিক হত্যাসহ সংখ্যালঘু নির্যাতন—এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; দেশ ও সমাজকে বিভাজিত করে সাংস্কৃতিক বন্ধ্যত্ব ও অন্ধত্বের দিকে ঠেলে দেওয়ার সমন্বিত ও পরিকল্পিত প্রয়াসেরই অংশ।
বিবৃতিতে বলা হয়, সংস্কৃতির ওপর আঘাতের প্রতিবাদে সংগীতের মাধ্যমে সংহতি জানাতে চট্টগ্রামের শিল্পী সমাজের আয়োজন পুলিশের অসহযোগিতা ও বাধার কারণে হতে পারেনি। একদিকে গণমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের ওপর আক্রমণ প্রতিরোধে প্রশাসনের ব্যর্থতা, অন্যদিকে শৈল্পিক প্রতিবাদ এবং সংহতি প্রকাশে অসহযোগিতা ও বাধাদান অশুভ প্রবণতার ইঙ্গিত বহন করে।
বিবৃতিতে তাঁরা সাম্প্রতিক হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও বিচারের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তাঁরা শিল্পচর্চা ও বিকাশের মাধ্যমে অন্ধত্বের বিরুদ্ধে দেশের মানুষের উদ্যোগের প্রতি প্রশাসনকে ইতিবাচক ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।