শিশু-কিশোর ও তরুণদের নাগালের বাইরে নিতে সিগারেটের প্রতি শলাকার দাম সর্বনিম্ন ৯ টাকা করার দাবি জানিয়েছেন তরুণ চিকিৎসকেরা। দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নরত তরুণ চিকিৎসকেরা জানান, তাঁদের দাবি বাস্তবায়ন করা হলে ধূমপান হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি গত অর্থবছরের তুলনায় ৪৩ শতাংশ বেশি রাজস্ব আয় অর্জিত হবে।
‘বাংলাদেশে তামাকপণ্যের ব্যবহার হ্রাসকরণে তরুণ চিকিৎসকদের করণীয়’ শীর্ষক এক কর্মশালায় এসব কথা বলেন তাঁরা। আজ শনিবার ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এ কর্মশালার আয়োজন করে।
কর্মশালায় হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, নিত্যপণ্যের তুলনায় বাংলাদেশে তামাকপণ্য অত্যন্ত সস্তা। ফলে শিশু-কিশোর ও তরুণরা সহজেই এই ক্ষতিকর নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ছে। তাই তাদের নাগালের বাইরে নিতে তামাকপণ্যের ওপর কার্যকর কর ও মূল্যবৃদ্ধি করতে হবে।
কর্মশালায় আরও বলা হয়, বর্তমানে সিগারেটের চারটি মূল্যস্তর (নিম্ন, মধ্যম, উচ্চ ও প্রিমিয়াম) থাকায় তামাক কর ও মূল্য পদক্ষেপ সঠিকভাবে কাজ করছে না। তাই আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে সিগারেটের নিম্ন ও মধ্যম স্তরকে একত্র করে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ৯০ টাকা নির্ধারণ করা হলে শিশু-কিশোর ও তরুণরা ধূমপানে নিরুৎসাহিত হবে। একই সঙ্গে প্রতি শলাকা বিড়ির সর্বনিম্ন দাম ১ টাকা করার দাবি জানানো হয়। এটি বাস্তবায়ন করা হলে, ধূমপান হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি ২০ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় অর্জিত হবে। একই সঙ্গে দীর্ঘ মেয়াদে প্রায় ৯ লাখ তরুণসহ মোট ১৭ লাখের বেশি মানুষের অকালমৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে।
কর্মশালায় সন্ধানীর কেন্দ্রীয় কমিটির নবনির্বাচিত সভাপতি আবদুল মোতালিব বলেন, ‘চিকিৎসক হিসেবে আমাদের তামাকের ক্ষতি সম্পর্কে সাধারণ মানুষদের সচেতন করতে হবে। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তামাকপণ্যের ক্ষতি সম্পর্কে জোরালো প্রচারণা চালাতে হবে। শিশু-কিশোর ও তরুণদের হাতের নাগালের বাইরে নিতে তামাকপণ্যের দাম কার্যকরভাবে বৃদ্ধি করার আহ্বান জানান তিনি।
আজকের কর্মশালায় দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের অধ্যয়নরত তরুণ চিকিৎসকেরা অংশগ্রহণ করেন। তাঁরা বলেন, বাংলাদেশে তামাকের ব্যবহার কমাতে চিকিৎসকদের এগিয়ে আসতে হবে। একই সঙ্গে তামাকের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে রোগীদের সচেতন করতে হবে। পাশাপাশি তামাকের ব্যবহার কমাতে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন এবং তামাকপণ্যের ওপর উচ্চ হারে কর ও মূল্যবৃদ্ধি করার আহ্বান করেন।
এ সময় ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী, তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির উপদেষ্টা ও ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির পরামর্শক নাইমুল আজম খান, সমন্বয়ক ডা. অরুনা সরকার ও কমিউনিকেশন অফিসার আবু জাফর উপস্থিত ছিলেন।