
রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কার্গো ভিলেজ কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেছেন বেসরকারি বিমান, পরিবহন ও পর্যটন এবং বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ, ক্ষয়ক্ষতি ও যাত্রীদের ভোগান্তি নিয়ে কথা বলেন তিনি।
পরিদর্শন শেষে আজ রোববার সকালে উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমদানি কার্গোতে পণ্যগুলো একত্র হয়। সেগুলো পুড়ে ধ্বংস হয়েছে। আগুনে কতটা ক্ষতি হয়েছে, তা অর্থমূল্য ও ওজনের ভিত্তিতে নির্ধারণের চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি খাতভিত্তিক ক্ষয়ক্ষতিরও হিসাব করা হচ্ছে।’
ফায়ার সার্ভিসকে অনুমতি না দেওয়ায় আগুন নিয়ন্ত্রণে বিলম্ব হয়েছে—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকার অভিযোগটি সঠিক নয়। বিমানবন্দরের ভেতরে অগ্নিনির্বাপণে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা ঘটনার ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই কাজ শুরু করেছেন। আপনারা জানেন, এটি একটি কেপিআইভুক্ত এলাকা, এখানে নিজস্ব অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রয়েছে।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘবে সরকার নির্দেশনা জারি করেছে। আগামী তিন দিন যেসব নন-শিডিউল অতিরিক্ত ফ্লাইট আসবে ও যাবে, সেগুলোর সব ধরনের খরচ মওকুফ করা হয়েছে। আগুনের কারণে যেসব ফ্লাইট বাতিল হয়েছে এবং যাঁরা বিমানবন্দরের ভেতরে অবস্থান করছিলেন, তাঁদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এরপরও কোথাও কিছু ব্যত্যয় হয়ে থাকলে, তা দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
আগুনের ঘটনায় সম্ভাব্য সব অভিযোগ আমলে নেওয়া হবে জানিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা আগুনের পূর্ব ও পরবর্তী অবস্থা, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা করবে।’
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘গতকাল রাতেও বাণিজ্যিক কার্গো এসেছে। আমাদের বাণিজ্যিক সহায়তার স্বার্থে এসব কার্যক্রম বন্ধ রাখা সম্ভব নয়। তৃতীয় টার্মিনাল এলাকায় বিকল্প জায়গা দেওয়া হয়েছে, যাতে পণ্য পরিবহন চালু থাকে।’
যেসব ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাঁদের ইনস্যুরেন্স কাভারেজ ও বিমানবন্দরের নিজস্ব বিমাব্যবস্থার আওতায় কীভাবে সহায়তা দেওয়া যায়, তা পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলেও জানান উপদেষ্টা। এ বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
গতকাল শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে কার্গো ভিলেজ কমপ্লেক্স ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ১৩টি ফায়ার স্টেশনের ৩৭টি ইউনিট, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী ও বিজিবি কাজ করে। সাত ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। রাত ৯টার দিকে বিমানবন্দর চালু হয়।
কার্গো ভিলেজের (পণ্য রাখার স্থান) যে অংশে আগুন লেগেছিল, সেখানে আমদানি করা পণ্য রাখা হয়।
এ ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে পাঁচ সদস্যের কমিটি করেছে সরকার। গতকাল রাতে ঘটনার কারণ অনুসন্ধান ও দায়দায়িত্ব নির্ধারণে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ বিমান।
আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে আনসার বাহিনীর ২৫ সদস্যসহ মোট ৩৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।