চূড়ান্ত বিজয় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে : ১২–দলীয় জোট

রাজধানীর বিজয় নগরে মিছিল করে ১২–দলীয় জোট
ছবি: সংগৃহীত

বিজয়ের মাসে যুগপৎ আন্দোলন শুরু হয়েছে। চূড়ান্ত বিজয় না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে বলে ঘোষণা দিয়েছে ১২–দলীয় জোট।

আজ শুক্রবার বেলা তিনটায় রাজধানীর বিজয় নগর পানির ট্যাংকের সামনের সড়কে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জোটের নেতারা এই ঘোষণা দেন।

এর আগে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে বিজয় নগর এলাকায় জড়ো হতে থাকেন ১২–দলীয় জোটের নেতারা।

বিএনপি ঘোষিত ১০ দফা দাবি সমর্থন করে এসব দাবি আদায়ে ১২–দলীয় জোটের নেতা–কর্মীরাও গণমিছিল করার ঘোষণা দেন।

পূর্বঘোষণা অনুযায়ী বিজয় নগর পানির ট্যাংকের সামনে থেকে এই জোটের মিছিল শুরু হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে একই স্থানে এসে শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে জোটের নেতারা বিজয় নগর পানির ট্যাংকের সামনে থেকে মিছিলটি শুরু করে পুরানা পল্টন মোড়ে ঘুরে নাইটিঙ্গেল মোড়ে গিয়ে মিছিল শেষ করেন।

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ২২ ডিসেম্বর বিএনপির সমমনা ১২–দলীয় জোট আত্মপ্রকাশ করেছে।

১২–দলীয় এই জোটে রয়েছেন মোস্তফা জামাল হায়দারের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি (জাফর), মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীকের নেতৃত্বে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ লেবার পার্টি, সৈয়দ এহসানুল হুদার নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতীয় দল, কে এম আবু তাহেরের নেতৃত্বে এনডিপি, শাহাদাত হোসেন সেলিমের নেতৃত্বে বাংলাদেশ এলডিপি, জুলফিকার বুলবুল চৌধুরীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, মুফতি মহিউদ্দিন ইকরামের নেতৃত্বে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, মাওলানা আবদুর রকীবের নেতৃত্বে ইসলামী ঐক্যজোট, তাসমিয়া প্রধানের নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল, আবুল কাসেমের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টি।

এদিকে গণমিছিলের আগে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, দেশের রাজনীতির ইতিহাসে আজ নতুন পর্বের সূচনা হয়েছে। যুগপৎ আন্দোলন এ দেশে নতুন পরিস্থিতির জন্ম দেবে বলে মনে করেন এই নেতা।

সভাপতির বক্তব্যে মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, চূড়ান্ত বিজয় না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলন চলবে। আগামী ১১ জানুয়ারির নতুন আরেকটি কর্মসূচি ঘোষণা দেন তিনি। ওই দিন বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানান মোস্তফা জামাল হায়দার। বিএনপি ঘোষিত ১০ দফা দাবি আদায় এই কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

গণসমাবেশ–পূর্ব সমাবেশে সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, ডিসেম্বর মাসে বিজয়ের যাত্রা শুরু হয়েছে। বিজয় না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরে যাবেন না। শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পুনঃপ্রবর্তন করে তাঁরা ঘরে ফিরবেন।

এনডিপির চেয়ারম্যান কাজী মাহমুদ আবু তাহের বলেন, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার দাবিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ১৭০ দিন হরতাল করেছিল। ক্ষমতায় এসে তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করেছে। অবিলম্বে সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল উত্থাপন করতে হবে। রাজবন্দীদের মুক্তি দিতে হবে। ‌

বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, যুগপৎ আন্দোলনের মাধ্যমে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে। সরকার পালিয়ে যাওয়ার রাস্তা খুঁজছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে না দিলে সরকার পালিয়ে যাওয়ার পথ পাবে না।

মুসলিম লীগের মহাসচিব জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী বলেন, মেহনতি জনতার সংগ্রাম কখনোই ব্যর্থ হয় না।‌

জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের গোলাম মো. ইকরাম বলেন, তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া দেশে নির্বাচন হবে না। আলেমদের মুক্তি দিতে হবে।

ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব আবদুল করিম বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে চার বছর কারান্তরীণ রেখে তিলে তিলে মারার চেষ্টা চলছে। আলেম-ওলামাদের অন্যায়ভাবে দুই বছর কারাবন্দী করে রাখা হয়েছে। আমরা আলেম-ওলামাসহ সব রাজবন্দীর মুক্তি চাই।’

গণমিছিল–পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জাগপার সিনিয়র সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, এনডিপির চেয়ারম্যান কাজী মোহাম্মদ আবু তাহের, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।

গণমিছিলে অংশ নিয়ে নেতা–কর্মীরা ‘এই মুহূর্তে দরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার’, ‘নিশিরাতের সরকার আর না আর না’, ‘পুলিশ দিয়ে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।