মাইলস্টোন স্কুল যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত হয় তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাতেমা আক্তার। নিহতদের ছবিসহ টানানো ব্যানারে ভাগনির ছবি দেখছেন তার মামা লিওন মীর
মাইলস্টোন স্কুল যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত হয় তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাতেমা আক্তার। নিহতদের ছবিসহ টানানো ব্যানারে ভাগনির ছবি দেখছেন তার মামা লিওন মীর

মাইলস্টোনে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত: নিহত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে

রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। তাঁরা বলছেন, সন্তানকে আর ফিরে পাবেন না। এ ঘটনায় দায়ীদের বিচার চান তাঁরা। পাশাপাশি সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে জরিমানাও চেয়েছেন অভিভাবকেরা।

মঙ্গলবার নিহত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা সকাল সাতটা থেকে স্কুলের সামনে মানববন্ধন করবেন। সরকারের কাছে বিভিন্ন দাবি জানাবেন তাঁরা।

গত ২১ জুলাই উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসের হায়দার আলী ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এফ-৭ বিজিআই মডেলের বিমানটি বেলা একটার পর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় বিমানের পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলামসহ নিহত হয়েছেন ৩৪ জন। নিহতদের মধ্যে ২৭ জনই প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী ছিল। দগ্ধ অনেকে এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

‘অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে ব্যস্ত স্কুল কর্তৃপক্ষ’

অভিভাবকেরা বলছেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের স্কুলের অস্তিত্ব টিকে থাকবে কি না, তা নিয়ে চিন্তিত। বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় স্কুলের স্থাপনায় কত ক্ষতি হলো, তার হিসাব করে সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ চাইছে। কিন্তু স্কুলের এতগুলো শিক্ষার্থী মারা গেল, তা নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই।

কয়েকজন অভিভাবক জানালেন, নিহত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করার জন্য ‘আকুল আবেদন’ জানাচ্ছেন—স্কুল কর্তৃপক্ষ এমন একটি চিঠিতে অভিভাবকদের সই নেওয়ার চেষ্টা করে। কয়েকজন অভিভাবক সই করেন। কিন্তু পরে অভিভাবকদের অনেকে সেই সই কেটে দিয়ে আর কোনো আলোচনা না করে স্কুল থেকে ফেরত চলে যান।

৭ আগস্ট স্কুল কর্তৃপক্ষের এ চিঠিতে বলা হয়, দুর্ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির অস্তিত্ব চরম সংকটে পড়েছে, প্রতিষ্ঠানটি টিকিয়ে রাখতে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

অভিভাবকেরা বলছেন, শুধু চিঠি নয়, এর আগেও স্কুলের জন্য ক্ষতিপূরণ আদায়ে তৎপর হলেও নিহতদের বিষয়ে কোনো কথা বলেনি স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে কথা বলতে গেলে অভিভাবকেরা যাতে নিজেরা বসে আলোচনা করেন, সে পরামর্শও দিয়েছে তারা।

নিহতদের নাম ও ছবি দিয়ে টানানো ব্যানার দেখছেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা

‘কোচিং করা বাচ্চাদের শিক্ষকেরা বেশি আদর করেন’

ছোট শিক্ষার্থীদের অনেকটা জোর করেই স্কুল ছুটির পর কোচিং করানো, স্কুলে এক দিন উপস্থিত না থাকাসহ বিভিন্ন কারণে জরিমানা আদায়, পড়া না পারলে বা বাড়ির কাজ করে না আনলে স্কুল ছুটির পর শিক্ষার্থীদের ডিটেনশন বা আটকে রাখাসহ বিভিন্ন অভিযোগের কথা জানালেন অভিভাবকেরা।

নিহত শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগ অভিভাবকের আক্ষেপ সন্তানকে স্কুলের কোচিংয়ে না দিলে দুর্ঘটনার দিন ছুটির পর সন্তান বাড়ি ফিরে যেত। কিন্তু কোচিং করার জন্য বিমান বিধ্বস্তের সময় তারা স্কুলে ছিল। অথবা কেউ কেউ ডিটেনশনে থাকায় এ ঘটনায় মারা গেছে।

দুর্ঘটনার দিন স্কুল ছুটির পর বড় বোন তাহিয়া আশরাফ নাজিয়া বের হতে কেন দেরি করছে, তা দেখতে গিয়েছিল আরিয়ান আশরাফ (নাফি)। তখনই যুদ্ধবিমানটি বিধ্বস্ত হয়।

জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, নাজিয়ার শরীরের ৯০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। আর নাফির ছোট্ট শরীরের প্রায় পুরোটাই পুড়ে গিয়েছিল। নাজিয়া মারা গেছে ২২ জুলাই, আর নাফি মারা যায় ২৩ জুলাই।

নাজিয়া স্কুলটির ষষ্ঠ আর নাফি ছিল তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। নাজিয়া সেদিন বাড়ির কাজ করে যেতে পারেনি বলে ‘ডিটেনশনে’ ছিল, আর বোন কেন দেরি করছে, তা দেখতে গিয়েই আগুনে দগ্ধ হয় ছোট ভাই।

নাজিয়া-নাফির বাবা আশরাফুল ইসলাম অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর আমার সম্পদ বলতে ছিল এই দুই সন্তান। দুই সন্তানই মারা গেছে। একজনকে আইসিইউতে রেখে আরেক সন্তানকে দাফন করতে হয়েছে। বলতে পারেন, আমরা বেঁচে থাকব কীভাবে?’

মাহিদ হাসান পড়ত চতুর্থ শ্রেণিতে। ওমায়ের নূর এবং বোরহান উদ্দিন পড়ত তৃতীয় শ্রেণিতে। বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মারা যাওয়া এই তিন শিশুকে কবর দেওয়া হয়েছে পাশাপাশি। তারা নিকট আত্মীয়।

তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী রাইসা মণি। তার মা মিম প্রথম আলোকে জানালেন, শিক্ষকদের চাপাচাপিতে ১৪ জুলাই থেকে মেয়েকে কোচিংয়ে দিয়েছিলেন। কোচিংয়ে না দিলে মেয়ে স্কুল ছুটির পরই বাড়ি চলে যেত, এভাবে মারা যেত না। এ আক্ষেপ থাকবে সারা জীবন।

তৃতীয় শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী মারিয়াম উম্মে আফিয়া। তার মা উম্মে তামিমা আক্তার ক্ষোভ প্রকাশ করে বললেন, বাচ্চা স্কুল থেকে ফিরে বলত, কোচিং করলে শিক্ষকেরা বেশি আদর করেন, যারা কোচিং করে না, তাদের আদর করেন না। তাই মেয়ে কোচিংয়ে ভর্তি করাতে বলে। অন্যদিকে শিক্ষকেরাও ফোন দিতেন কোচিংয়ে দেওয়ার জন্য।

রাইসা মণি ও মারিয়াম উম্মে আফিয়ার লাশ প্রথমে পাওয়া যায়নি। এ জন্য ডিএনএ পরীক্ষা করতে হয়েছে।

নিহত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা করণীয় ঠিক করতে একসঙ্গে বসেছিলেন

‘এখানে স্কুল কেন থাকবে, স্কুলের ওপর দিয়ে কেন যুদ্ধবিমান উড়বে’

যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ২৭ জুলাই ৯ সদস্যের তদন্ত কমিশন গঠনের কথা জানায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কমিশনের কার্যপরিধিতে রয়েছে বিমানবন্দরের অতি নিকটবর্তী এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও অপরাপর স্থাপনা নির্মাণ এবং ফ্লাইং জোনের অবস্থানগত সঠিকতা ও নিরাপদ পরিচালন বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আইনগত ও প্রশাসনিক বিষয়গুলো পরীক্ষা করা; দুর্ঘটনা প্রতিরোধ, প্রশিক্ষণ বিমান উড্ডয়ন, ফ্লাইং জোনে ভবন নির্মাণ ও ভয়াবহ দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণসংক্রান্ত সুপারিশ প্রদান করা; এ ধরনের মর্মান্তিক ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের সুপারিশ প্রদান করা এবং এই উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট যেকোনো কার্য সম্পাদন। এই কমিশনকে চার সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।

এ কমিশনের সদস্য ও নগর–পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ বিভিন্ন কাজ চলছে। ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার কাছে তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

নগর–পরিকল্পনাবিদদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) সম্প্রতি ‘মাইলস্টোন স্কুলে বিমান দুর্ঘটনা: জননিরাপত্তা ও উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণে রাষ্ট্রের দায় ও করণীয়’ শীর্ষক এক তাৎক্ষণিক অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলে, রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কারিগরিভাবে বৈধ হলেও এটি কার্যত অনিরাপদ এলাকায় অবস্থিত। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অ্যাপ্রোচ এরিয়ার (বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণ অঞ্চল) মধ্যে পড়েছে। বিমানবন্দরের অ্যাপ্রোচ এরিয়ায় থাকা স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ জনসমাগম হয়, এমন সব প্রতিষ্ঠান সরিয়ে নেওয়া উচিত।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিমানবন্দরের রানওয়ের পর ৫০০ ফুট এলাকায় কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করা যায় না। এর পরের ১৩ হাজার ফুট বা প্রায় ৪ কিলোমিটার অঞ্চলকে অ্যাপ্রোচ এরিয়া বলা হয়, যেখান দিয়ে বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণ করে।

বিমান বিধ্বস্তে এত প্রাণহানির ঘটনায় নিকটাত্মীয় তিন শিশুর একজন বোরহানের বাবা আবু শাহীন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘স্কুলের ওপর দিয়ে কেন যুদ্ধবিমান উড়বে? সরকার কী করল?’

যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ১৫ দিন পর ৬ আগস্ট কলেজ শাখায় পাঠদান শুরু হয়

কলেজ শাখায় পাঠদান শুরু

যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ১৫ দিন পর ৬ আগস্ট মাইলস্টোন কলেজের কলেজ শাখায় পাঠদান শুরু হয়। এর আগে ৩ আগস্ট শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এসে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত, আহত ব্যক্তিদের দ্রুত আরোগ্য কামনায় আয়োজিত দোয়া ও শোক অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। সেদিন পাঠদান হয়নি।

বিমান বিধ্বস্তে একসঙ্গে দুই সন্তান হারানো আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘স্কুল কর্তৃপক্ষ এত বড় ঘটনার পরও স্বাভাবিকভাবে স্কুল খুলেছে, বাচ্চাদের পরীক্ষা নিচ্ছে। এমন ভাব, যেন কিছুই হয়নি।’

চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসনিম আফরোজ আয়মানের বাবা ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘আমার সন্তান চলে গেছে, আরেকজনের সন্তান ক্লাস করছে। অথচ আমরা এখনো সুষ্ঠু বিচার পেলাম না।’

স্কুলের পক্ষ থেকে উপাধ্যক্ষ মো. মাসুদ আলম (প্রশাসন) প্রথম আলোকে বলেছেন, অভিভাবকদের মতামতের ভিত্তিতেই কলেজ শাখা খুলে দেওয়া হয়েছে। মানসিক আঘাত কাটানোর জন্য শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জন্য কাউন্সেলিং সেন্টার খুলে সেবা দেওয়া হচ্ছে।

দগ্ধ সন্তানদের নিয়ে ভোগান্তি

ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ শামীমের জন্মদিন ছিল ২৯ জুলাই। মারা গেল ২১ জুলাই। এ ঘটনার মাত্র সাত মাস আগে আবদুল্লাহর বাবা আবুল কালাম সৌদি আরবে মারা যান।

আবদুল্লাহর মা জুলেখা বেগম বললেন, স্কুল থেকে প্রথমে ছেলেকে অটোরিকশায় করে এক হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়ার সময় অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া দিতে হয়েছে চার হাজার টাকা। অথচ সে অ্যাম্বুলেন্সে কোনো এসি ছিল না। ৯৫ শতাংশ পুড়ে যাওয়া আবদুল্লাহ বারবার বলছিল, ‘বাতাস দাও, পানি দাও। হাসপাতাল এত দূরে কেন?’

দগ্ধ হয়ে যখন আবদুল্লাহ বের হয়, তখন তার শরীরে কোনো কাপড় ছিল না। সেই অবস্থায়ও সেখানে উপস্থিত মানুষ যখন ভিডিও করছিল, তখন সে বিব্রতবোধ করছিল বলে জানালেন তার পরিবারের সদস্যরা।

আরেক শিক্ষার্থী মাহিদ হাসানের মা মনিকা আক্তার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আগুনে পুড়ে দগ্ধ হওয়া বাচ্চাগুলোকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনো গাড়ির ব্যবস্থা করেনি। অটোরিকশা, ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে বাচ্চাগুলোকে হাসপাতালে নিতে হয়েছে। এতে অনেক সময় লেগেছে।

নিহত আবদুল্লাহ শামীমের মা ছেলের ছবি দেখছেন

‘ক্ষতিপূরণ নয়, জরিমানা আদায় করা হবে’

বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় কারিগরি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে সাত দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে কমিটি গঠনের ৪৫ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে বলা হয়। একটি রিটের শুনানি নিয়ে আদালত ওই নির্দেশ দিয়েছিলেন।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন যুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আনিসুর রহমান রিটটি করেছিলেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, কমিটির তদন্তের পর রাজধানী ঢাকাসহ ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ত্রুটিপূর্ণ বিমান ও প্রশিক্ষণ বিমান উড্ডয়ন কেন নিষিদ্ধ করা হবে না, সে বিষয়ে রুল হয়েছে। নিহত প্রত্যেককে পাঁচ কোটি টাকা করে এবং আহত প্রত্যেককে এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

দুর্ঘটনায় নিহত হওয়া তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল ফাতেমা আক্তার। তার বাবা বনি শেখ কুয়েতে থাকেন। সেখানে বসেই মেয়ের মৃত্যুর খবর পান। খবর পেয়ে দেশে আসেন, তাঁকে আবার ফিরেও যেতে হয়েছে।

৬ আগস্ট বনি শেখ প্রথম আলোকে বলেন, বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের অবহেলার কারণে ছোট বাচ্চাগুলো মারা গেল। যথাযথ জরিমানা আদায়ের পাশাপাশি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চান তিনি।

ফাতেমা আক্তারের মামা সাংবাদিক লিওন মীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ক্ষতিপূরণ চাই না। আমরা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে জরিমানা করতে চাই। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনেই সংস্থাগুলোকে সে জরিমানা দিতে হবে। আমাদের বাচ্চারা ঘরের মধ্যে আগুনে পুড়ে মারা যায়নি। তারা স্কুলে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে মারা গেছে। অবশ্যই এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হতে হবে।’