বেসরকারি গ্রন্থাগার নির্দেশিকা সফটওয়্যার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে (বাঁ থেকে) মো. ফরিদ উদ্দিন সরকার, ল্যারে গিল পেড্রোমিংগে, মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, আফসানা বেগম, মো. খালিদ হোসেন ও সঞ্জীব সূত্রধর
বেসরকারি গ্রন্থাগার নির্দেশিকা সফটওয়্যার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে (বাঁ থেকে) মো. ফরিদ উদ্দিন সরকার, ল্যারে গিল পেড্রোমিংগে, মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, আফসানা বেগম, মো. খালিদ হোসেন ও সঞ্জীব সূত্রধর

কোনো সরকারই সংস্কৃতিকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেনি: সংস্কৃতি উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, সাংস্কৃতিক বিরোধ থাকলে রাজনৈতিক বিপর্যয় অনিবার্য। অর্থনীতি ও সংস্কৃতি—দুটি ক্ষেত্রেই সমতা না এলে দেশে একটা নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। কিন্ত কোনো সরকারই সংস্কৃতিকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেনি। বাজেটে এ খাতে বার্ষিক বরাদ্দই তার প্রমাণ।

জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র ও গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরে তালিকাভুক্ত এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে অনুদানপ্রাপ্ত বেসরকারি গ্রন্থাগারের তালিকা ও তথ্য নিয়ে একটি সফটওয়্যারের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা। আজ সোমবার সকালে রাজধানীর গুলিস্তানে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘পাঠাগার হচ্ছে জ্ঞান বিনিময় ও সামাজিকীকরণের ক্ষেত্র। পাঠাগার মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক তৈরি করে। প্রযুক্তিগত নেটওয়ার্ক আমরা সহজভাবে ব্যবহার করতে চাই। তবে হাতে ধরে বই পড়ার আবেদন কখনো কমবে না।’ দেশের আনাচকানাচে পাঠাগারসংস্কৃতি ধরে রাখার জন্য জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে অলাভজনক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি উইদাউট বর্ডারসের আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সম্পাদক ল্যারে গিল পেড্রোমিংগে বলেন, জ্ঞানচর্চা শুধু মানুষের নিজস্ব পরিচিতি তৈরি করে, তা–ই নয়। স্বাধীনতা, উন্নতি ও শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রধান চাবি জ্ঞানচর্চার সংস্কৃতি তৈরি হওয়া। জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র দেশের প্রত্যন্ত জনপদের পাঠাগারগুলোতে সেই জ্ঞানচর্চার সুযোগ তৈরির চেষ্টা করছে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক আফসানা বেগম। তিনি বলেন, এই সফটওয়্যার সংযোগ ও সুস্থ প্রতিযোগিতার জন্য তৈরি করা হয়েছে, যাতে দেশের যেকোনো জায়গার তালিকাভুক্ত পাঠাগারের প্রতিদিনের কার্যক্রম সম্পর্কে জানা যায়। এর মধ্য দিয়ে একে অপরের সঙ্গে যুক্তও হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পাঠাগারের প্রতিনিধিদের কাছে পারস্পরিক সহেযাগিতার আহ্বান জানান জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক। এ সময় তিনি বলেন, পাঠাগার নিবন্ধন, বই ও অনুদান প্রদানের জন্য আগের নীতিমালার সংশোধন প্রয়োজন।

গণগ্রন্থাগারের পরিচালক সঞ্জীব সূত্রধর সম্প্রতি ভোলা ও ফরিদপুরের পাঁচটি বেসরকারি পাঠাগার পরিদর্শনের অভিজ্ঞতার কথা জানান। অর্থের অভাবে একটি ভালো পাঠাগার কীভাবে মুখ থুবড়ে পড়ে এবং অর্থ আত্মসাতের জন্য কীভাবে ভুয়া পাঠাগার তৈরি হয়, তার কয়েকটি উদাহরণও দেন তিনি।

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. খালিদ হোসেন বলেন, পাঠাগারগুলো যাতে ভালো হয়, সে লক্ষ্যেই এই সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে। ভালো একটি সফটওয়্যার হয়েছে। তবে এটি আরও সময় নিয়ে ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এর আগে স্বাগত বক্তব্যে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের উপপরিচালক মো. ফরিদ উদ্দিন সরকার জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের কার্যক্রম তুলে ধরেন।