রাজধানীতে ৩৩৮৮ জনের জন্য একজন ডাকাত!

ঈদের ছুটিতে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ছুটিতে যাওয়ার আগে টাকাপয়সা বা স্বর্ণালংকার আত্মীয়ের বাসায় রেখে যেতে
প্রতীকী ছবি

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তথ্যভান্ডারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ঢাকার ৫০টি থানায় ১ হাজার ৭৩৭ জন ছিনতাইকারী এবং ৪ হাজার ৪৬১ জন ডাকাত রয়েছে। অর্থাৎ মোট ডাকাত ও ছিনতাইকারী ৬ হাজার ১৯৮ জন। অপরাধ বিজ্ঞানে বা পুলিশি পরিভাষায় ডাকাত ও ছিনতাইকারীর সংজ্ঞায় পার্থক্য আছে। তবে আলোচনার সুবিধার্থে এদের সবাইকে ডাকাত বলে ধরে নেওয়া হলো।

রাজধানীতে ঠিক কত মানুষ বাস করে, তার সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া দুষ্কর। তবে গত মাসে জাতীয় সংসদে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেছেন, রাজধানীতে ২ কোটি ১০ লাখ মানুষ ওয়াসার সেবা পায়। ধরে নেওয়া যায় ওটাই রাজধানীর জনসংখ্যা।

সরল পাটিগণিত বলছে, ২ কোটি ১০ লাখ মানুষের জন্য রাজধানীতে ডাকাত আছে ৬ হাজার ১৯৮ জন। অর্থাৎ রাজধানীতে মাথাপিছু ডাকাত শূন্য দশমিক ০০০২৯৫১৪২৯ জন। মাথাপিছু আয় বেশি হলে ভালো, মাথাপিছু চিকিৎসক-নার্স বেশি হওয়া ভালো। মাথাপিছু ডাকাত বেশি হওয়া খারাপ। হিসাবটি অন্যভাবে উপস্থাপন করলে বলা যায়, ৩ হাজার ৩৮৮ জন রাজধানীবাসীর জন্য একজন করে ডাকাত। এই অনুপাত কি আতঙ্কজনক?

পুলিশ সূত্র বলছে, ৫০টি থানায় পুলিশ আছে ৩৪ হাজার বা তার কিছু বেশি। আমরা হিসাবের সুবিধার জন্য বলব ৩৪ হাজার। রাজধানীতে মাথাপিছু পুলিশ শূন্য দশমিক ০০১৬১৯০৪৭৬ জন। মাথাপিছু পুলিশ বেশি হওয়াও ভালো। হিসাবটি অন্যভাবে উপস্থাপন করলে বলা যায়, ৬১৭ জন রাজধানীবাসীর নিরাপত্তার জন্য আছে একজন করে পুলিশ। এই অনুপাত কি সন্তোষজনক?

আরও একটি হিসাব আছে। ডাকাত পুলিশ অনুপাত। যদি পুলিশের কাজ হয় শুধু ডাকাত ধরা, তাহলে ১ জন ডাকাতের জন্য আছে ৫ জন পুলিশ। হিসাবটি অন্যভাবে করলে দাঁড়ায়, ১ জন পুলিশের ভাগে আছে শূন্য দশমিক ১৮ জন ডাকাত।

রাজধানীতে মাথাপিছু ডাকাতের চেয়ে পুলিশ বেশি। ডাকাতের কাজ শুধুই ডাকাতি করা। পাঁচজন পুলিশ একজন ডাকাতের জন্য যথেষ্ট নয়। কারণ ডাকাত ধরা ছাড়াও পুলিশের অনেক কাজ আছে। ঈদের সময় ঢাকা ছেড়ে যায় অনেক মানুষ। ডাকাতেরা ঢাকা ছেড়ে ঈদ করতে গ্রামের বাড়িতে যায় কি না, গেলে কত ডাকাত যায়, তার সঠিক তথ্য নেই। যদি ডাকাতেরা ঈদ করতে গ্রামে না যায়, তাহলে রাজধানীতে ঈদের ছুটিতে মাথাপিছু ডাকাতের সংখ্যা বেড়ে যায়। সে কারণে ঈদের আগে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ছুটিতে যাওয়ার আগে টাকাপয়সা বা স্বর্ণালংকার আত্মীয়ের বাসায় রেখে যেতে।