
শহিদুল ইসলাম পেশায় কসাই নন। তবে বিয়েসহ নানা অনুষ্ঠানে পশু জবাই করাসহ মাংস প্রস্তুতের কাজ করেন তিনি। ফলে এ কাজে তাঁর হাত বেশ ভালোই পেকেছে।
আজ বৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদুল আজহার দিন শহিদুলের পাকা হাতের পরিচয় পাওয়া গেল। এ দিন সকাল সাড়ে ৭টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত রাজধানীর মিরপুরে চারটি গরু জবাইয়ের পর মাংস প্রস্তুত করে দেন তিনি।
শহিদুলের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলায়। দুপুর ১২টার দিকে মিরপুর ১১ নম্বরের নান্নু মার্কেট এলাকায় কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তখন সহকারীদের সঙ্গে নিয়ে একটি গরুর মাংস কেটে টুকরা করছিলেন তিনি।
মাংস কাটার কাজ করতে করতে শহিদুল বলেন, গত বছর পবিত্র ঈদুল আজহার দিন তিনি ২০ হাজার টাকা আয় করেছিলেন। ওই ঈদে তিনি চারটি গরু জবাইয়ের পর মাংস কেটে দিয়েছিলেন। আজ দুপুর নাগাদ তিনি চারটি গরু জবাইয়ের কাজ শেষ করেছেন। আরও একটি গরু জবাইয়ের কাজ বাকি ছিল বলে তখন জানান তিনি।
কোরবানির পশু জবাইয়ের কাজে শহিদুলের সঙ্গে তাঁর আরও তিন সহযোগী আছেন।
পশু জবাইয়ের মজুরি দুইভাবে ঠিক করেন তিনি। এর একটি হচ্ছে, যে দামে গরু কেনা হয়েছে, ওই দামের প্রতি হাজারে ১০০ টাকা শহিদুলকে দিতে হবে। এই হিসাবে গরুর দাম যদি এক লাখ টাকা হয়, তবে তাঁকে দিতে হবে ১০ হাজার টাকা। আর আলোচনা করেও পশু জবাই ও সেটির মাংস প্রস্তুত করার মজুরি ঠিক করে নেন। এটা সাধারণত পরিচিত ব্যক্তিদের কোরবানির পশু জবাইয়ের ক্ষেত্রে করেন।
শহিদুল জানালেন, ২০০০ সালে প্রথম ঢাকায় আসেন তিনি। তখন থেকে নান্নু মার্কেট এলাকায় একটি বাড়ির তত্ত্বাবধায়কের কাজ করেন তিনি। এর পাশাপাশি গরু জবাই ও মাংস প্রস্তুত করার কাজ আস্তে আস্তে শিখেছেন। এখন তাঁর হাত অনেক পাকা বলেই জানালেন এই মৌসুমি কসাই। কোরবানি ছাড়াও নানা অনুষ্ঠানে পশু জবাই ও মাংস প্রস্তুত করে দেওয়ার কাজ করেন তিনি।
একটি গরু জবাইয়ের পর মাংস তৈরি করতে ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট লাগে উল্লেখ করে শহিদুল বললেন, তিন সহকারীদের নিয়ে এই কাজ করেন।
এই ঈদে এখন পর্যন্ত কত টাকা আয় হয়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, হিসাব করেননি। তবে গতবারের চেয়ে এবার আয় বেশি হবে বলে আশা করছেন।
এক দিনে ২০-২২ হাজার টাকা আয় হলে কেমন লাগে, জানতে চাইলে মুচকি হেসে শহিদুল বললেন, ‘২০ হাজার টাকা তো আমাদের মতো গরিব মানুষের কাছে অনেক টাকা। সঙ্গে কিছু মাংসও পাওয়া যায়। কোরবানির পশু জবাইয়ের আলাদা একটা আনন্দও আছে।’