
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় (ডব্লিউএইচও) আর অর্থায়ন করতে চান না মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ডব্লিউএইচওকে অর্থায়ন বন্ধ করতে ট্রাম্প ইতিমধ্যে তাঁর প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন। আজ বুধবার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ভূমিকায় ট্রাম্প ক্ষুব্ধ। জাতিসংঘের এই সংস্থাটিকে অর্থ দেওয়া বন্ধ করে দেবেন বলে আগেই হুমকি দিয়েছিলেন তিনি। এবার তিনি সত্যি সত্যি তা করলেন।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। পরে চীনে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে। এখন সারা বিশ্বে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে করোনায় মোট আক্রান্ত ১৯ লাখ ৮০ হাজার। মোট মারা গেছেন ১ লাখ ২৬ হাজার ৫৫৭ জন। যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা ৬ লাখ ছাড়িয়েছে। দেশটিতে করোনায় মারা গেছে ২৮ হাজারের বেশি মানুষ।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্রে এখন যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে আক্রান্ত ব্যক্তি ও মৃত্যুর হার সবাইকে টপকে গেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। করোনার মুখে দেশটির অবস্থা অনেকটা হযবরল। এমন প্রেক্ষাপটে তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে ‘লক্ষ্যবস্তু’ করলেন।
ট্রাম্প বলেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পরিপ্রেক্ষিতে ডব্লিউএইচও তার মৌলিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে।
জাতিসংঘের এই সংস্থার বিরুদ্ধে ভাইরাসটির বিস্তার রোধে অব্যবস্থাপনা ও লুকোচুরির অভিযোগ আনেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, এর অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।
হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ভূমিকা যাচাই করে দেখার নির্দেশ দিয়েছি। তার আগ পর্যন্ত সংস্থাটিতে তহবিল বন্ধ করার নির্দেশ প্রশাসনকে দিয়েছি।’
গত সপ্তাহে ট্রাম্প অভিযোগ করেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে বেশ অর্থ দেয় ডব্লিউএইচওকে। কিন্তু কোনো কারণে ডব্লিউএইচও খুব চীনকেন্দ্রিক।
যুক্তরাষ্ট্র ডব্লিউওইচওর প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রোয়াসুসেরও সমালোচনা করে আসছে। তাঁকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও।
ট্রাম্পের সমালোচকেরা বলছেন, করোনা মোকাবিলায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাঁর নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে ডব্লিউএইচওকে বলির পাঁঠা বানাচ্ছেন।
ডব্লিউএইচওর সবচেয়ে বড় একক তহবিলদাতা যুক্তরাষ্ট্র। গত বছর ৪০ কোটি ডলার দিয়েছে তারা। যা সংস্থাটির মোট বাজেটের প্রায় ১৫ শতাংশের কাছাকাছি।
সংস্থাটির ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তহবিলে চীনের নির্ধারিত অবদান ৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার। এ ছাড়া স্বেচ্ছাসেবী তহবিল ছিল ১ কোটি ডলার।
গত মার্চে এই মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য ৬৭ কোটি ৫০ লাখ ডলারের একটি তহবিল গঠনের কাজ শুরু করে ডব্লিউএইচও। এ ছাড়া ১ বিলিয়ন ডলারের একটি নতুন আবেদন করার পরিকল্পনা আছে সংস্থাটির।