Thank you for trying Sticky AMP!!

ওই দুই যুবকই 'জঙ্গি আস্তানায়' বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মারা গেছেন!

সন্দেহজনক জঙ্গি আস্তানার কাছ র‍্যাবের সতর্ক অবস্থান। ছবি: সাজিদ হোসেন

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলায় জঙ্গি আস্তানা হিসেবে দাবি করা বাসাটি ভ্যানগাড়ির চালক পরিচয়ে দুই যুবক ভাড়া নেন। র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) ধারণা, ওই দুই যুবকই ‘জঙ্গি আস্তানায়’ বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মারা গেছেন। নিহত ব্যক্তিরা কোনো জঙ্গি সংগঠনের সদস্য।

রায়েরবাজার বধ্যভূমির ঠিক পেছনে র‍্যাব-২-এর নতুন সদর দপ্তর থেকে মাত্র আধা কিলোমিটার দূরে বছিলার মেট্রো হাউজিং এলাকায় বাড়িটি অবস্থিত। একতলা টিনশেডের বাড়িটির ঠিক পাশে একটি দোতলা ভবন রয়েছে। বেশির ভাগ প্লট ফাঁকা। কিছু বাড়ি নির্মাণাধীন। গতকাল রোববার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটা থেকে বাড়িটি ঘেরাও করে র‌্যাব।

মেট্রো হাউজিংয়ে একটি বাড়িতে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে অভিযান চালায় র‍্যাব। অভিযানে বিধ্বস্ত ঘরের পাশে র‌্যাবের সতর্ক অবস্থান। বছিলা, ঢাকা, ২৯ এপ্রিল। ছবি: র‌্যাবের সৌজন্যে

আজ সোমবার বাড়িটি পরিদর্শন শেষে বেলা ১১টার দিকে র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ বলেন, ঘটনাস্থলে তিনটি পায়ের নমুনা পাওয়া গেছে। এতে মনে হচ্ছে, দুজন প্রাণ হারিয়েছেন।

গতকাল রাত তিনটার দিকে অভিযানে থাকা এক র‌্যাব কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, তাহাজ্জুদের নামাজের সময় বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। বাড়ির মালিক ওয়াহাব। বাড়িটির তত্ত্বাবধানকারী হিসেবে রয়েছেন সোহাগ নামের এক ব্যক্তি। বাড়ির ভেতর মসজিদ করেছেন মালিক ওয়াহাব।

সন্দেহজনক জঙ্গি আস্তানার কাছ র‍্যাবের অবস্থান। ছবি: সাজিদ হোসেন

ওই কর্মকর্তা জানান, অভিযানের সময় বাড়িতে ঢুকে দেখা যায়, মসজিদের ফ্লোরে মশারি টাঙিয়ে শুয়ে রয়েছেন ওই মসজিদের ইমাম। নাম ইউসুফ। পাশে কয়েকটি ঘর রয়েছে। ওই ঘরগুলোয় ঢোকার একটি দরজায় ধাক্কা দেন তিনি। ওই সময় এক নারী দরজা খোলেন। তখন পাশের একটি ঘর থেকে জিকির শোনা যাচ্ছিল। জিকির করে কে? এই প্রশ্ন করতেই ভেতর থেকে গুলি ছোড়া হয়। ওই সময় ওই নারী, তাঁর সঙ্গে থাকা দুই শিশু ও ইমাম ইউসুফকে বাড়িটি থেকে বের করে নিয়ে আসে র‌্যাব। পরে বাড়ির মালিক ওয়াহাব ও তত্ত্বাবধানকারী সোহাগকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়।

ওই কর্মকর্তা জানান, ভোর পাঁচটার দিকে বাড়িটির ভেতর থেকে বিকট শব্দে একটি বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ভূমিকম্পের মতো কেঁপে ওঠে চারপাশ।

র‌্যাব সূত্রে জানা গেছে, বাড়ির মালিক ওয়াহাব পাশের কওমি মাদ্রাসায় এক মাস ধরে কোরআন শরিফ শিখতেন। ওই মাদ্রাসা থেকে তিনি ইউসুফকে তাঁর বাড়ির মসজিদের ইমামের দায়িত্ব দেন।

ওয়াহাবের বাড়ির পেছনের একটি বাড়ির বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম বলেন, রাত তিনটার দিকে র‌্যাব সদস্যরা তাঁর বাড়িতে আসেন। সামনের বাড়িতে অভিযান চলছে জানিয়ে নিরাপদে সরে যেতে বলেন। এর ১৫ মিনিট পর গুলির শব্দ পাওয়া যায়। পরে ভোর পাঁচটার দিকে বিকট শব্দ শোনা যায়।

অভিযানের অংশ হিসেবে র‍্যাবের এক সদস্যকে বিশেষ পোশাক পরানো হচ্ছে। ছবি: সাজিদ হোসেন

র‌্যাব সূত্রে জানা গেছে, মেট্রো হাউজিং এলাকায় বেশ কয়েকটি ভবনের নির্মাণকাজ চলছে। তাই অনেক শ্রমিক এই এলাকায় বসবাস করেন। দুই যুবক এক মাস আগে ওয়াহাবের বাড়ির একটি ঘর মাসে ১ হাজার ৫০০ টাকায় ভাড়া নেন।

আজ সকালে র‍্যাবের পরিচালক (গণমাধ্যম) মুফতি মাহমুদ খান সাংবাদিকদের বলেন, বাড়িটির ভেতর দু-তিনজন ‘জঙ্গি’ মারা গেছেন বলে ধারণা করা যাচ্ছে। বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়ার পরপর বাড়িটি ড্রোনের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করছে র‍্যাব। বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল জায়গাটিতে তল্লাশি চালাচ্ছে। আরও কিছু অবিস্ফোরিত আইইডি থাকার আশঙ্কা রয়েছে।

তবে র‍্যাব-২-এর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বাড়ির ভেতর দুজন ‘জঙ্গির’ ছিন্নভিন্ন মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে।