চট্টগ্রামে দুই কলেজের ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ-গুলি

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম নগরের হাজি মুহাম্মদ মহসিন সরকারি কলেজ ও ওমরগণি এমইএস বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে আজ। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ছবি: সৌরভ দাশ
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম নগরের হাজি মুহাম্মদ মহসিন সরকারি কলেজ ও ওমরগণি এমইএস বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে আজ। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ছবি: সৌরভ দাশ

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম নগরের হাজি মুহাম্মদ মহসিন সরকারি কলেজ ও ওমরগণি এমইএস বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে মহসিন কলেজের এক ছাত্রলীগ কর্মী আহত হন। আজ শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মহসিন কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনার সময় দুই-তিনটি গুলির শব্দ শোনা যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা দাবি করেছেন। হাজি মহাম্মদ মহসিন কলেজ থেকে বের হয়ে ওমরগণি এমইএস কলেজ শাখার ছাত্রলীগ কর্মীরা বিপরীত পাশে অবস্থিত চট্টগ্রাম কলেজের পুলিশ ক্যানটিন ভাঙচুর করেন।

দুই কলেজের ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলাকালে চট্টগ্রা​ম কলেজের মূল ফটকের সামনে থাকা তিনটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। ছবি: সৌরভ দাশ

চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজ আহমেদ আজ বেলা দুইটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ওমরগণি এমইএস কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরা মহসিন কলেজ শাখার এক কর্মীকে মারধর করেন। এতে মহসিন কলেজের ছাত্রলীগ কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে এমইএস কলেজ শাখার কর্মীদের ধাওয়া করেন। পরে তাঁরা চট্টগ্রাম কলেজে ঢুকে পুলিশ ক্যানটিন ভাঙচুরের চেষ্টা চালান। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তাঁরা পালিয়ে যান। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। গুলি ছোড়ার বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানান ওসি।

একপর্যায়ে ওমরগণি এমইএস কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরা চট্টগ্রাম কলেজে ঢুকে পুলিশ ক্যানটিন ভাঙচুর করেন। তাঁরা ক্যানটিনের শাটারের একটি অংশ ভেঙে ফেলেন এবং ভেতরে টেবিল-চেয়ার, ক্যাশ বাক্স ও নাশতা রাখার পাত্র তছনছ করে চলে যান। ছবি: সৌরভ দাশ

সংঘর্ষে আহত হয়েছেন হাজি মুহাম্মদ মহসিন কলেজের উচ্চমাধ্যমিক শাখার দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ও ছাত্রলীগ কর্মী মোহাম্মদ হামিদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওমরগণি এমইএস কলেজ শাখা ছাত্রলীগের ছয়-সাতজন কর্মী তিনটি মোটরসাইকেলে করে আমাদের কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকে। এরপর অতর্কিতভাবে তাদের কয়েকজন রড দিয়ে আমার মাথা, মুখসহ শরীরে বিভিন্ন অংশে আঘাত করে। চিকিৎসার জন্য এখন একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি হয়েছি।’
হাজি মুহাম্মদ মহসিন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের আরেক কর্মী ফয়সাল মাহমুদ অভিযোগ করেন, ওমরগণি এমইএস কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরা অনেক দিন ধরে মহসিন কলেজে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছেন। কিন্তু কলেজের ছাত্রলীগ কর্মীদের বাধার কারণে তা পারছেন না। এর জের ধরে তাঁরা আজ দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকে এক ছাত্রকে অহেতুক মারধর করেন। তবে মহসিন কলেজ ছাত্রলীগের কর্মীরা জোটবদ্ধ হয়ে তাঁদের ধাওয়া দিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় দুই-তিনটি ফাঁকা গুলি ছোড়েন তাঁরা।
বেলা একটার দিকে হাজি মুহাম্মদ মহসিন কলেজ ও চট্টগ্রাম কলেজে গিয়ে দেখা যায়, ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনায় ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। কলেজের মূল ফটকে দায়িত্বরত দারোয়ানদের পরিচয়পত্র দেখিয়ে ক্যাম্পাসে ঢোকেন শিক্ষার্থীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কলেজ দুটিতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম কলেজের পুলিশ ক্যানটিনের কর্মচারী শহীদুল ইসলাম ও আবদুল কাদের বলেন, ছয়-সাতজন তরুণ পিস্তল, রড ও ছুরি নিয়ে ক্যানটিনে হামলা করেন। তাঁরা ক্যানটিনের শাটারের একটি অংশ ভেঙে ফেলেন এবং ভেতরে টেবিল-চেয়ার, ক্যাশ বাক্স ও নাশতা রাখার পাত্র তছনছ করে চলে যান।
চট্টগ্রাম নগর শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বহিরাগতদের সঙ্গে মহসিন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি।’

পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের একপর্যায়ে ওমরগণি এমইএস কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরা মহসিন কলেজ থেকে চলে যান। তাঁরা চট্টগ্রাম কলেজে ঢুকে পুলিশ ক্যানটিন ভাঙচুর করেন। ছবি: সৌরভ দাশ