Thank you for trying Sticky AMP!!

সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় এমন নৃশংসতা!

বাবার বাড়ির সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় শারমিনকে রড দিয়ে পিটিয়েছে তাঁর স্বামী। বকশীগঞ্জ, জামালপুর, ১৯ মে। ছবি: প্রথম আলো

জামালপুরের বকশীগঞ্জে বাবার বাড়ির সম্পত্তি স্বামীর নামে লিখে না দেওয়ায় এক শিক্ষিকাকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পেটানোর পরে ওই নারী ও তাঁর কন্যাশিশুকে একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় স্থানীয়রা মুমূর্ষু অবস্থায় ওই নারীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

নির্যাতনের শিকার ওই শিক্ষিকার নাম শারমিন আক্তার(২৬)। তিনি উপজেলার পৌর এলাকায় একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষিকা। তাঁর স্বামী আবদুল মমিন স্থানীয় অ্যাডভান্স কিন্ডার গার্টেনের সহকারী শিক্ষক। মমিনের বাড়ি পৌর শহরের উত্তর মাঝপাড়া এলাকায়। তাদের এক কন্যাশিশু আছে।

নির্যাতনের শিকার ওই শিক্ষিকার পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ছয় বছর আগে শারমিনের সঙ্গে মমিনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই মমিন যৌতুকের দাবিতে বিভিন্ন সময় শারমিনের ওপর শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছেন। শারমিনের বাবা আগেই মারা গেছেন। সম্প্রতি শারমিনের বাবার রেখে যাওয়া কিছু জমি মমিনের নামে লিখে দিতে শারমিনের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। এ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে শারমিনকে ধারাবাহিক নির্যাতন করে আসছিলেন মমিন। তবে বাবার জমি মমিনের নামে লিখে দিতে রাজি হননি শারমিন। এর জের ধরে গত শুক্রবার গভীর রাতে মমিন লোহার রড দিয়ে শারমিনকে বেদম পেটান। এ সময় শারমিনের শ্বশুর হোসেন আলীও তাঁকে নির্যাতন করেন। নির্যাতনের পরে রক্তাক্ত ও জখম অবস্থায় শারমিন ও তাঁর শিশুকন্যাকে একটি কক্ষে আটকে রাখেন মমিন ও তাঁর পরিবার। পরে স্থানীয় লোকজন বিষয়টি জানতে পারেন। এরপর ওই কক্ষ থেকে শারমিন ও তাঁর কন্যাশিশুকে উদ্ধার করে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে শারমিন ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন। এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে মমিন ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা পলাতক আছেন।

প্রথম আলোর সঙ্গে শারমিনের কথা হয়। তিনি বলেন,‘আমার বাবার কিছু জমিজমা রয়েছে। সেসব জমি আমার স্বামী তাঁর নামে লিখে নিতে চান। আমি লিখে না দেওয়ায়, তিনি আমার ওপর মাঝে মাঝে নির্যাতন করতেন। গত শুক্রবার আমার ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। আমার পিঠ, বাম হাত থেকে শুরু করে কোমর ও পায়ে রড দিয়ে পেটানো হয়েছে। ওই সব স্থানে রক্ত জমাট হয়ে গেছে। এরপরও তাঁরা আমাকে চিকিৎসাও নিতে দেয়নি। একটি কক্ষে আটকে রেখেছিল।’

বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা বলেন, শিক্ষিকা শারমিনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন আছে। শারমিনের শরীরে এখনো ব্যথা রয়েছে এবং তাঁর চিকিৎসা চলছে।

বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তাহেরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই ঘটনায় ওই শিক্ষিকা একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। আমি আজ বেলা দেড়টার দিকে ওই শিক্ষিকাকে দেখতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়েছিলাম। ওই শিক্ষিকার শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের চিহ্ন আছে। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।’