Thank you for trying Sticky AMP!!

সড়ক দুর্ঘটনা মনে হলেও আসলে এটি ছিল খুন

ছবিটি প্রতীকী

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মিরশ্বানী বাজার এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নন, সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের হাতেই খুন হন লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানার দেওপাড়া গ্রামের মোক্তার হোসেন। এ ঘটনায় তিনজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

গতকাল শনিবার কুমিল্লার ৫ নম্বর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহনেওয়াজ মনির ওই জবানবন্দি রেকর্ড করেন। আদালতে আসামিরা অকপটে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ইব্রাহিম গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন। পরে আসামিদের কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

ওই তিনজন হলেন ফেনী সদর উপজেলার নোয়াবাদ গ্রামের আবুল হাসনাত ওরফে তারেক, দক্ষিণ শশর্দি গ্রামের সৈয়দ হাফিজুর রহমান ও কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার বাতাখালী গ্রামের মো. রাসেল।

এর আগে দুপুরে কুমিল্লা নগরের হাউজিং এস্টেট এলাকার পিবিআইয়ের জেলা দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করেন পিবিআই কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ওসমান গণি। তিনি বলেন, প্রথমে এটি নিছক সড়ক দুর্ঘটনা হিসেবে থানায় জিডি হলেও পরে পিবিআইয়ের তদন্তে ১৬ দিনের মধ্যে এ খুনের রহস্য বেরিয়ে আসে। এ ঘটনায় পিবিআই তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ওই তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করে।

সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ ওসমান গণি লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ২১ জানুয়ারি ভোররাত সাড়ে চারটায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মিরশ্বানী বাজার এলাকা থেকে মিয়াবাজার হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা মাথা ও মুখমণ্ডল থেঁতলানো অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে। পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা ছিল, এটি সড়ক দুর্ঘটনা। খবর পেয়ে পিবিআই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট আইডেন্টিফিকেশনের মাধ্যমে লাশের পরিচয় শনাক্ত করে। এ সময় লাশের বাঁ হাতের কবজিতে কাটা দাগ দেখে এটি হত্যাকাণ্ড হিসেবে ধরে নিয়ে তদন্ত চালায় পিবিআই। এ ছাড়া মুঠোফোনের সিম না থাকায় সন্দেহ হয়। এরপর পিবিআই তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটন করে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ওসমান গণি বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা জিজ্ঞাসাবাদে জানান, তাঁরা মহাসড়কে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য। ২০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় তাঁরা ফেনী থেকে একটি ব্যক্তিগত গাড়ি ভাড়া করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে বের হন। ওই রাতে তাঁরা ফেনী থেকে কুমিল্লার পদুয়ার বাজার পর্যন্ত মহাসড়কের কয়েকটি স্থানে টাকা ও মুঠোফোন ছিনতাই করেন। পরে ফেনী ফেরার পথে রাত দেড়টার দিকে চৌদ্দগ্রামের মিরশ্বানী বাজার এলাকায় সড়কের পাশে মোক্তারকে হাঁটতে দেখে তাঁকে টানাহেঁচড়া করে ওই গাড়িতে তুলে নেন এবং মারধর করে মুঠোফোন ও টাকা কেড়ে নিয়ে লাথি মেরে সড়কে ফেলে দিয়ে গাড়ি চাপায় হত্যা করেন।

নিহত মোক্তার হোসেনের ভাই সুমন মিয়া ৫ ফেব্রুয়ারি চৌদ্দগ্রাম থানায় হত্যা মামলা করেন।