হ্যাক করা আইডি থেকে রাষ্ট্রবিরোধী পোস্ট দেওয়ার হুমকি দিতেন লিটন

প্রতীকী ছবি: রয়টার্স
প্রতীকী ছবি: রয়টার্স

পড়াশোনায় স্কুলের গণ্ডি পেরুতে পারেননি। তবে কম্পিউটার চালানোর ওপর কয়েক মাসের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এরপর ঢাকার আশুলিয়া এলাকার একটি দোকানে কাজ নেন। এই কাজের আড়ালে ফেসবুক আইডি হ্যাক করে ভুক্তভোগীর মোবাইলে ফোন করে টাকা দাবি করতেন লিটন ইসলাম। টাকা না দিলে হ্যাক করা আইডি থেকে রাষ্ট্রবিরোধী পোস্ট দিয়ে জঙ্গি বানানোর হুমকি দিতেন তিনি। এভাবেই দেশি-বিদেশি ২ হাজার ৫০০ ফেসবুক আইডি হ্যাক করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এই হ্যাকার। তবে শেষ রক্ষা হয়নি তাঁর।

রোববার আশুলিয়ার এনায়েতপুর এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ। এই সময় তাঁর কাছ থেকে ১টি সিপিইউ, ২টি মুঠোফোন ও ১০টি সিম কার্ড উদ্ধার করা হয়। তাঁর বাড়ি মানিকগঞ্জের শিবালয়ে।

ডিবি বলছে, লিটন একটি সংঘবদ্ধ হ্যাকার চক্রের সদস্য। তাঁরা অনলাইনের মাধ্যমে প্রথমে ফিশিং লিংক তৈরি করতেন। পরে ওই লিংকের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের ছবি, ভিডিও ব্যবহার করে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে লিংকটি দিতেন বা শেয়ার করতেন। কোনো ব্যক্তি ওই লিংকে নিজের আইডি ও গোপন নম্বর দিয়ে লগইন করার চেষ্টা করার সঙ্গে সঙ্গে ওই ব্যক্তির আইডি ও গোপন নম্বর হ্যাকারের কাছে চলে যেত।

পরে গোপন নম্বর পরিবর্তন করে হ্যাকার ওই আইডির নিয়ন্ত্রণ নিতেন। একপর্যায়ে আইডি হ্যাক হওয়া ব্যক্তিকে বার্তা পাঠিয়ে, কখনো ফোন করে টাকা দাবি করতেন। টাকা না দিলে ব্যক্তিগত ছবি, ভিডিও ও রাষ্ট্রবিরোধী পোস্ট দেওয়ার হুমকি দিতেন হ্যাকার।

ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার নাজমুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আনোয়ার হোসেন নামের এক ব্যক্তির ফেসবুক আইডি হ্যাক করে আপত্তিকর পোস্ট দেওয়া হয়।

এই ঘটনায় ঢাকার কদমতলী থানায় একটি মামলা হয়। ওই মামলায় লিটনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিন মাস ধরে বিভিন্ন ব্যক্তির আইডি হ্যাক করে টাকা দাবি করার কথা স্বীকার করেছেন তিনি। তবে আমাদের ধারণা, দীর্ঘদিন ধরে এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন লিটন।’

ডিবি জানায়, লিটনের সঙ্গে হ্যাকিংয়ের সঙ্গে জড়িত আরও কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে। এই চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি গ্রেপ্তার লিটনকে জিজ্ঞাসাবাদের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।