গ্রামের বাসিন্দাদেরই কেউ কেউ পানিনিষ্কাশনের খাল ভরাট করে বাড়ি করেছেন। এতে বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে।

গ্রামের মাঝখান দিয়ে গেছে প্রধান সড়ক। কিন্তু সে সড়ক দিয়ে স্বাভাবিকভাবে চলাচল করা যায় না। তিন মাস ধরে গ্রামে জলাবদ্ধতা তৈরি হওয়ায় সড়কটি তলিয়ে গেছে। শুধু সড়ক নয়, বৃষ্টির পানি জমে তলিয়ে গেছে বসতবাড়ির উঠানও। এমন চিত্র পাবনার চাটমোহর উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের খৈরাশ গ্রামে।
এই গ্রামের পাশেই ছিল একটি খাল। বৃষ্টির পানি সে খাল দিয়ে বিলে পড়ত। কিন্তু এটি দখলে ভরাট হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে গ্রামটিতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ছয় বছর ধরে তাঁরা বর্ষা মৌসুমে এই দুর্ভোগ সহ্য করছেন। বছরের প্রায় ছয়–সাত মাসই গ্রামে পানি জমে থাকে। চলতি বছরের তিন মাস ধরে জলাবদ্ধতার সমস্যায় আছেন।
সম্প্রতি সরেজমিন গ্রামটিতে গিয়ে দেখা যায়, পুরো গ্রামটিতেই জলাবদ্ধতা তৈরি হয়ে আছে। অনেকের বাড়ির উঠানেও পানি। ডুবে আছে রাস্তা। কোথাও কোথাও হাঁটু পরিমাণ কাদা-পানির মধ্য দিয়ে চলাচল করছিল বাসিন্দারা।
গ্রামটিতে প্রায় এক হাজার মানুষের বসবাস। কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, প্রায় সাত বছর আগে থেকে গ্রামের পাশের খালটি দখল হতে শুরু করে। গ্রামের বাসিন্দারাই খাল ভরাট করে বাড়ি করেছেন। দীর্ঘদিন খালটি দখলমুক্ত ও গ্রামের প্রধান সড়ক উঁচু করার জন্য দাবি জানানো হচ্ছে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদসহ (ইউপি) বিভিন্ন দপ্তরে আবেদনও করেছেন। ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরাও এসে দেখে গেছেন। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।
গ্রামের বাসিন্দা সাগর হোসেন জানান, জলাবদ্ধতার কারণে গ্রামের মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যেতে দুর্ভোগে পড়ে। কৃষিপণ্য আনা-নেওয়া করতে কষ্ট হয়। গ্রামে আত্মীয়স্বজনও আসা বাদ দিয়েছেন।
জলাবদ্ধতার কারণে গ্রামের মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। কৃষিপণ্য আনা-নেওয়া করতে কষ্ট হয়। গ্রামে আত্মীয়স্বজনও আসা বাদ দিয়েছেন।সাগর হোসেন, খৈরাশ গ্রামের বাসিন্দা
আক্কাস আলী নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমাগের আর কিছুই চাওয়ার নাই। আমরা পানিবন্দি জীবনথেন মুক্তি চাই। ক্যানেলডা দখল মুক্ত চাই। গ্রামের রাস্তাডা চাই।’
ডিবিগ্রাম ইউপির ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোজাফফর হোসেন মণ্ডল বলেন, গ্রামটির মানুষের দুর্ভোগ তিনি দেখেছেন। পাশের খালটি দখলমুক্ত করতে উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। কিন্তু তা দখলমুক্ত হয়নি। ফলে পানি জমে থাকায় রাস্তাটিও উঁচু করা যায়নি।
চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈকত ইসলাম বলেন, বিষয়টি তাঁর জানা ছিল না। খালটি যদি সরকারি হয় তাহলে খনন করে পানি বের করার ব্যবস্থা করা হবে।