ছিনতাইয়ের অভিযোগে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা

ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন
ছবি: সংগৃহীত

নরসিংদীর রায়পুরায় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদকসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে আব্বাস আলী নামের সাবেক এক ছাত্রদল নেতা মারধর ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে রায়পুরা থানায় এ মামলা করেন।

মামলার আসামিরা হলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ও রায়পুরা পৌর এলাকার ইকবাল হোসেন ওরফে শ্যামল (৩৪), রায়পুরার অলিপুর ইউনিয়নের নবিয়াবাদ গ্রামের রাফসান শাওন (২৩), পৌর এলাকার শ্রীরামপুরের মুছা মিয়ার ছেলে মো. আবদুল্লাহ (২৫), আদিয়াবাদ ইউনিয়নের নয়াচর গ্রামের চান মিয়ার ছেলে রুবেল প্রধান (৩০) ও চর আড়ালিয়ার শাহ পরাণ (২৮)।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, প্রায় তিন মাস আগে নরসিংদী জেলা ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই কমিটিতে তৃণমূলের যোগ্য ছাত্রনেতাদের বঞ্চিত করে কেন্দ্র থেকে মাদক ব্যবসায়ী, অবৈধ অস্ত্র, অপহরণ ও হত্যা মামলার আসামিদের স্থান দেওয়া হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে পদবঞ্চিত ছাত্রদল নেতারা কেন্দ্রীয় নেতা ইকবাল হোসেনকে নরসিংদী জেলায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। এতে ইকবাল হোসেন ও তাঁর অনুসারীরা ক্ষুব্ধ হন। ওই সময় মামলার বাদী আব্বাস আলী ওরফে নাহিদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা ইকবাল হোসেনের সমালোচনা করে বেশ কিছু পোস্ট দেন। এর জের ধরে বিভিন্ন সময় ইকবাল হোসেন ও তাঁর অনুসারীরা প্রায়ই তাঁকে হুমকি দিতেন।

মামলার বাদী আব্বাস আলী বলেন, গত ২৮ জুন বিকেলে তাঁর ছোট বোনের স্বামীর টাকার প্রয়োজন হলে তিনি ৭৮ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে রওনা হন। পথে নবিয়াবাদ মোড় পৌঁছালে রাফসান শাওন, মো. আবদুল্লাহ, রুবেল প্রধান ও শাহ পরাণ তাঁর পথ রোধ করেন। রাফসান শাওন এ সময় ছাত্রদল নেতা ইকবাল হোসেনের মুঠোফোনে কল দেন এবং লাউডস্পিকার চালু করেন। এ সময় শাওন তাঁকে বলেন, ‘ভাই নাহিদরে পাইছি।’ পরে ইকবাল হোসেন শাওনকে বলেন, ‘বেশি বাইড়া গেছে, তারে ঠিকমতো সাইজ কর।’ এরপরই আবদুল্লাহ একটি হাতুড়ি দিয়ে আব্বাসের মাথায় আঘাত করেন, তবে তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে তাঁর নাকে লাগে। এতে নাকের হাড় ভেঙে গিয়ে রক্তাক্ত জখম হন তিনি।

মামলার বাদী আরও বলেন, ‘রাফসান তার কোমরের বেল্ট খুলে তা দিয়ে আমার গলা চেপে ধরে। পরে আমি মাটিতে পড়লে রুবেল প্রধান আমার বুকের ওপর বসে আমার চোখেমুখে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি দিতে থাকে। অন্যদিকে শাহ পরাণ একটি লাঠি দিয়ে আমার সারা শরীরে মারতে থাকে। পরে তারা চলে যাওয়ার সময় আমার প্যান্টের পকেট থেকে ৭৮ হাজার ৫০০ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।’

আব্বাস আলীর ওপর হামলা চালানোর অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা ইকবাল হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা জানান, আজ সকালে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেনসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। মামলার এজাহারে আসামিদের বিরুদ্ধে বাদীকে মারধর ও ৭৮ হাজার ৫০০ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে।