শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার কৃষকেরা সুগন্ধি তুলসীমালা ও চিনিগুঁড়ি ধানের দামে খুশি। ধান কিনে বস্তায় ভরা হচ্ছে। গতকাল নালিতাবাড়ী বাজারে
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার কৃষকেরা সুগন্ধি তুলসীমালা ও চিনিগুঁড়ি ধানের দামে খুশি। ধান কিনে বস্তায় ভরা হচ্ছে। গতকাল নালিতাবাড়ী বাজারে

শেরপুরের নালিতাবাড়ী

তুলসীমালা ও চিনিগুঁড়া ধানে লাভবান চাষি

এক একর জমিতে সুগন্ধি ধান চাষ করতে খরচ পড়ে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। আর ধান পাওয়া যায় ৩৫ মণ করে। লাভ থাকে অন্তত ৩০ হাজার টাকা।

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার কৃষকেরা সুগন্ধি তুলসীমালা ও চিনিগুঁড়া ধান চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। এক সপ্তাহ ধরে এ ধান বাজারে উঠতে শুরু করেছে। বর্তমানে বাজারে এক মণ তুলসীমালা ও চিনিগুঁড়া চাল দেড় হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় এবং ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে।

কৃষক ও চাল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শেরপুরের তুলসীমালা চাল দেশজুড়ে বিখ্যাত। তুলসীমালা ও চিনিগুঁড়া চাল চিকন ও সুস্বাদু। এ চালে পোলাও, বিরিয়ানি, পায়েস, খিচুড়ি, পিঠাসহ অন্যান্য খাবার তৈরি হয়।

উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর চলতি আমন মৌসুমে উপজেলায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে তুলসীমালা ও এক হাজার হেক্টর জমিতে চিনিগুঁড়া ধানের আবাদ হয়েছে। কলসপাড়, যোগানিয়া, বাঘবেড় ও মরিচপুরান ইউনিয়নে এ সুগন্ধি ধানের আবাদ বেশি হয়ে থাকে। এ মৌসুমে খেতে পোকামাকড়ের আক্রমণ না থাকায় ও আবহাওয়া ভালো থাকায় অল্প খরচেই কৃষকেরা ফলন ঘরে তুলতে পেরেছেন। এক একর জমিতে এ সুগন্ধি ধান চাষ করতে (কাটা-মাড়াইসহ) খরচ পড়ে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। আর ধান পাওয়া যায় ৩৫ মণ করে। সে হিসাবে কৃষকের লাভ থাকে ৩০ হাজার টাকার বেশি।

কলসপাড় গ্রামের কৃষক মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, তিনি এ বছর দুই একর জমিতে তুলসীমালা ধানের আবাদ করেন। ধান লাগানো থেকে কাটা পর্যন্ত একরপ্রতি তাঁর খরচ হয়েছে ১৮ হাজার টাকা। প্রতি একরে তিনি ধান পেয়েছেন ৪০ মণ হারে। বাজারে প্রতি মণ ধান বিক্রি করে পেয়েছেন ১ হাজার ৫৫০ টাকা করে।

যোগানিয়া গ্রামের কৃষক আজিজুর রহমান বলেন, তিনি ৩ একর জমিতে চিনিগুঁড়া ধান করেছেন। ধান কিছুটা ভেজা থাকায় বর্তমানে ১ হাজার ৫৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ধান শুকানো হলে বাজারে আরও দাম বেশি পাওয়া যাবে।

নালিতাবাড়ী বাজারের সুগন্ধি ধানের আড়তদার রাজিন ট্রেডার্সের মালিক মো. সুমন বলেন, এক সপ্তাহ ধরে তুলসীমালা ও চিনিগুঁড়া ধান বাজারে উঠতে শুরু করেছে। এখন কিছুটা ধান ভেজা রয়েছে। ধান শুকিয়ে গেলে এর দাম আরও বাড়বে। তখন মণপ্রতি দাম দুই হাজার টাকা হতে পারে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আলমগীর কবির বলেন, লাভ হওয়ায় তুলসীমালা ও চিনিগুঁড়া ধান চাষে কৃষকদের আগ্রহ রয়েছে। ঈদ-পূজাসহ বিভিন্ন উৎসব–পার্বণে এসব সুগন্ধি চালের আলাদা কদর রয়েছে। শীতকালে নানা সামাজিক অনুষ্ঠান থাকায় এ চালের চাহিদা বাজারে এখন অনেক।