নরসিংদীতে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। করোনার সংক্রমণের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে করোনায় মৃত্যুও বাড়ছে। নরসিংদী করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে শয্যাসংখ্যার চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি আছে। এ পরিস্থিতিতে জেলায় কোনো আইসিইউ না থাকায় এবং শয্যা ও জনবলসংকটের কারণে করোনা রোগীদের চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, নরসিংদী করোনা ডেডিকেটেড ৮০ শয্যার হাসপাতালে আজ শনিবার ভর্তি ছিলেন ১০০ জন। এর মধ্যে করোনায় আক্রান্ত ৭১ জন এবং উপসর্গ নিয়ে ২৯ জন ভর্তি রয়েছেন। শয্যা না থাকায় ২০ জন রোগীকে বিকল্প ব্যবস্থায় রাখা হয়েছে। রোগীর চাপ সামাল দিতে গিয়ে চিকিৎসক ও নার্সদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, এক মাস আগেও হাসপাতালটিতে ২৫ থেকে ৩০ জন করোনা রোগী ভর্তি থাকতেন। কিন্তু গত এক মাসে এই হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। গত এক সপ্তাহে জেলায় গড়ে শতাধিক ব্যক্তির করোনা শনাক্ত হয়েছে।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) এ এন এম মিজানুর রহমান বলেন, ‘করোনায় আক্রান্ত এবং উপসর্গ নিয়ে অনেকেই ভর্তি হতে আসছেন। তবে শুধু সংকটাপন্ন রোগীদেরই ভর্তি রাখা হচ্ছে। যে হারে করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, তাতে আমাদের বর্তমান জনবল দিয়ে সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সীমিত সামর্থ্যের মধ্যে আমরা সাধ্যমতো করোনা রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলায় সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে কোনো আইসিইউর ব্যবস্থা নেই। করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালটিতে বেসরকারি উদ্যোগে সীমিত পরিসরে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা চালু আছে। এ ছাড়া জেলার ছয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা রোগীদের জন্য ৫টি করে পৃথক শয্যা রাখা হলেও সেখানে অক্সিজেনসহ অন্যান্য সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা নেই।
সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলায় করোনা রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ১৮৬। তাঁদের মধ্যে হাসপাতালে ৭১ জন ও বাড়িতে থেকে ১ হাজার ১১৫ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে জেলায় মোট ৬৯ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে নরসিংদী সদরে ৩৪ জন, পলাশের ৬ জন, বেলাব ৭ জন, রায়পুরা ৮ জন, মনোহরদী ৫ জন ও শিবপুরে ৯ জন রয়েছেন।
নরসিংদীর সিভিল সার্জন মো. নূরুল ইসলাম বলেন, গত এক সপ্তাহে জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৭৭০ জন। অন্যদিকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪ জন। করোনায় আক্রান্ত বাড়তি রোগীর চাপ সামাল দেওয়ার জন্য ৮০ শয্যার হাসপাতালটিকে ১২০ শয্যায় উন্নীতকরণের প্রক্রিয়া চলছে। এ ছাড়া জেলার সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ প্রয়োজনে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেও করোনা রোগীদের জন্য অতিরিক্ত শয্যার ব্যবস্থা করা হবে। করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে জনবল বাড়ানোর বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে তাঁরা ব্যবস্থা নিচ্ছেন।