‘পুতে আমার সাত রাজার ধন আছিল’
‘পুতে আমার সাত রাজার ধন আছিল’—বলছিলেন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুডস কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে নিখোঁজ ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার এ্যাওয়াজপুর গ্রামের নোমানের (১৭) বাবা আ. মান্নান মাতব্বর (৬৫)। এই কিশোর পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি।
ছেলের শোকে মা–বাবা পাথর হয়ে গেছেন। এর মধ্যে হঠাৎ হঠাৎ ‘ওরে বাজান কই গেলি’ বলে কেঁদে উঠছেন। দুই বোন খাদিজা বেগম ও ইয়ানুর বেগম চিৎকার করে কান্না করছিল। এর মধ্যে বাবা জানালেন, মেঘনার ভাঙনে সব হারিয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে পাওয়া ১৬ শতাংশ জমিতে ঘর বানিয়ে থাকছেন। ছেলে মাসে ছয়–সাত হাজার টাকা পাঠাত, তাই দিয়ে সংসারের খরচ চলত।
মা ফিরোজা বেগম বলেন, ‘পুতে আমার পেত্তেক দিন ফোন দিয়া মা-বাহের খোজ লোইছে। যেদিন আগুন লাগছে, হে বেহানেও খোঁজ নিছে। ওর বাহের খবরও লোইছে। বড় বোইনের লগেও কতা কোইছে।’ বাবা আক্ষেপ করে বলেন, ‘আইজ নদী সব ভাইঙা না নিলে, এই পুতে রে কি কাজে পাডাই? পুতে আমার সাত রাজার ধন আছিল। নোমান আমার বুড়া বয়সের ধন। ও আল্লাহ আর কত পরীক্ষা!’
Also Read: আবার অগ্নিকাণ্ড, নিহত ৫২
হাসেম ফুডস লিমিটেডের কারখানায় ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার ১৮ জন কাজ করতেন। এর মধ্যে ৭ জন নিখোঁজ আছে। বাকি ১১ জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিখোঁজ আছে নোমানের খালাতো ভাই তাজউদ্দিনের ছেলে মো. রাকিবও (১৬)।
এ্যাওয়াজপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাহবুব আলম বলেন, তাঁর ইউনিয়নের একজন নিখোঁজ। সাতজন আহত। তাঁরা প্রত্যেকে অসহায়। তাঁদের সাহায্য করা দরকার।
Also Read: দীর্ঘস্থায়ী আগুন, প্রাণহানি
চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো রুহুল আমিন বলেন, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক নিখোঁজ, নিহতের পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারকে অর্থসহায়তা দেবেন। চরফ্যাশন থেকে চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে অন্য ভাতা দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন
-
নারী আম্পায়ারের ম্যাচ আসলেই কি খেলতে চাননি মুশফিক–মাহমুদউল্লাহরা
-
বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যা: প্রতিরোধ যোদ্ধাদের স্বীকৃতি দিতে কমিটি গঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট
-
রাফায় এক পরিবারের ৯ জন নিহত, শুধু বেঁচে রইল মেয়েশিশুটি
-
শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম আবারও বিএসইসি চেয়ারম্যান, যেমন ছিল তাঁর আগের ৪ বছর
-
ইরান-ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলায় মধ্যপ্রাচ্যে যে বদল এসেছে