Thank you for trying Sticky AMP!!

বাঁশ কাটার প্রতিবাদ করায় পিটিয়ে বাবার হাত ভেঙে দিলেন ছেলে

সেকান্দার আলী সিকদার

৮০ বছরের বৃদ্ধ। কাজ করার শক্তি নেই। চার ছেলে থাকলেও ভরণপোষণের জন্য অন্যের দুয়ারে হাত পেতে জীবন চলে। তাঁর লাগানো বাঁশ কেটে নিয়ে যাচ্ছিলেন এক ছেলে। এর প্রতিবাদ করায় মো. সেকান্দার আলী সিকদার (৮০) নামের ওই বৃদ্ধকে পিটিয়ে দুই হাত ভেঙে দিয়েছেন ছেলে।

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার সূর্য্যমনি ইউনিয়নের ইন্দ্রকূল গ্রামে গতকাল শনিবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটে। আজ রোববার ওই বৃদ্ধকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি সেজ ছেলে সবুজ সিকদারের (৩৫) বিরুদ্ধে বাউফল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মো. আখতারউজ্জামান বলেন, ওই বৃদ্ধের বাঁ হাতের কনুইয়ের নিচের অংশের হাড় ও ডান হাতের বৃদ্ধ আঙুল ভেঙে গেছে।

সেকান্দার আলী বলেন, ‘আমারে ভরণপোষণ দেয় না। বাড়িতেও থাকতে পারি না। আমার লাগানো বাঁশ কাইটা হস্যা (সাবাড়) কইরা হালাইছে, গতকাল দুপুরে হেই খবর পাইয়া গাছ কাডোনে (কাটায়) বাধা দেই। হেইয়ার লইগা আমারে দাও (দা) দিয়া আমার সাইজা (সেজ) পোলায় (ছেলে) মো. সবুজ পিটায়াইয়া আটকাইয়া রাখে। ব্যাথায় কাতরাইছি কোনো ওষুধ দেয় নাই।’ তিনি আরও বলেন, তিনি ছেলেকে বলেছেন—ভরণপোষণ না দিলে তাঁর কোনো কিছু ধরতে পারবে না। এটা কি অপরাধ হয়েছে?

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেকান্দার আলীর চার ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে মো. সিদ্দিক সিকদার (৫৫) ঢাকায় থাকেন। মেজ ছেলে মো. মিজানুর (৫০) ও সেজ ছেলে মো. সবুজ সিকদার (৩৫) বাড়িতে থাকেন। ছোট ছেলে মো. জসিম (৩২) তাঁর শ্বশুরবাড়ির কাছে অলাদা বাড়ি করে থাকেন। একমাত্র মেয়ে তাজ মহলের (৪০) বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে থাকেন।

মারধরের খবর পেয়ে নাতনি মরিয়ম বেগম সেকান্দার আলীকে আজ উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। সিদ্দিক সিকদারের মেয়ে মরিয়ম বলেন, তাঁর দুই চাচা বাড়িতে থাকেন। তাঁর দাদার খুব বেশি সম্পদ না থাকলেও যতটুকু আছে তা ওই দুই চাচাই ভোগ করেন। অথচ দাদা ও দাদিকে ভরণপোষণ দেন না। ভরণপোষণ চাইলে মারধর করেন। এর আগেও কয়েক দফায় তাঁর দাদাকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। তাঁর দাদু নিরুপায় হয়ে অন্যের দুয়ারে হাত পেতে জীবন চালান। অধিকাংশ রাত মসজিদে কাটান। আর দাদি কখনো মেয়ের বাড়ি, আবার কখনো তাঁর বাড়িতে এসে থাকেন।

বাউফল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আল মামুন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। বৃদ্ধের ছেলেকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ পাঠানো হয়েছে।