Thank you for trying Sticky AMP!!

ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাওয়া আলমগীর চাকরি পেলেন এসিআই লজিস্টিক লিমিটেডে

ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাওয়া আলমগীর হোসাইনকে আজ বুধবার নিজ কার্যালয়ে ঢেকে কথা বলেন বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী

‘ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাই’ বিজ্ঞাপন সাঁটিয়ে নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হওয়া বগুড়ার আলমগীর হোসাইনকে চাকরি দিল এসিআই লজিস্টিক লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসিরের পক্ষে আলমগীরের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন চেইন শপ স্বপ্নের রিটেইল এক্সপানশন বিভাগের পরিচালক সামসুদ্দোহা শিমুল।

বগুড়ার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী।

সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আলমগীর হোসাইনকে আজ আমার কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেছি। তিনি তাঁর হতদরিদ্র পরিবারের শোচনীয় অবস্থার কথা জানান। কোনো বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে এই বিজ্ঞাপন দিয়েছেন বলে মনে হয়নি। তাঁর সম্পকে৴ সংগৃহীত গোয়েন্দা তথ্যে কোনো অপরাধ কর্মকাণ্ডের প্রমাণ মেলেনি। তাঁর মুঠোফোনের কলরেকর্ডসহ সবকিছু তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’

এসপি বলেন, ‘আলমগীর হোসাইনকে চাকরি দেওয়ার জন্য কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আমার মাধ্যমে যোগাযোগ করে। আলমগীরকে বেকাররেত্বর হতাশা থেকে মুক্তি দিতে একটি চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। আপাতত প্রতি মাসে তিনি ১৮ হাজার টাকা বেতন ভাতা পাবেন। তা দিয়ে অনায়াসে ঢাকায় থাকা খাওয়া, হাতখরচ ছাড়াও কিছু অর্থ বাড়িতে পরিবারের কাছে পাঠাতে পারবেন।’

এর আগে আলমগীর হোসাইনকে নিজ কার্যালয়ে ডেকে নেন পুলিশ সুপার। আলমগীর হোসাইন বলেন, ‘কিছু অনলাইন পোর্টালে বলা হয়, পুলিশ আমাকে খুঁজে পাচ্ছে না। তখন আমি জেলা পুলিশের সঙ্গে নিজেই যোগাযোগ করি। এরপর এসপিসহ জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা কয়েক ঘণ্টা নানা বিষয়ে আমার সঙ্গে কথা বলেন। সব জানার পর এসপি স্যার চাকরির প্রস্তাব দেন।’

Also Read: ‘দুবেলা ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাই’

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আলী হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘আলমগীরের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে, আসলেই ছেলেটা হতদরিদ্র। চাকরি না পাওয়ার হতাশা থেকেই দুই বেলা ভাতের জন্য ওই বিজ্ঞাপন দিয়েছেন। কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে তিনি এটা করেননি।’

বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর করা আলমগীর হোসাইন সপ্তাহখানেক আগে শহরের জহুরুল নগরের বাড়ির প্রাচীর ও বিদ্যুতের খুঁটিতে কয়েকটি বিজ্ঞাপন সাঁটান। তিনি নিজের পরিচয়ে লিখেছেন ‘বেকার’। দুই বেলা ভাতের বিনিময়ে প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পড়াতে চান তিনি। অল্প সময়ে বিজ্ঞাপনটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়।

আলমগীর হোসাইনের গ্রামের বাড়ি জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের বুড়ইল গ্রামে। পাঁচ বছর আগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে স্নাতকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অর্জন করেন আলমগীর। স্নাতকোত্তর পরীক্ষাতেও তিনি ভালো করেন। পড়াশোনা শেষে চাকরি পাচ্ছিলেন না। এখন তিনি অন্যের বাসায় জায়গির থাকেন।